ছবি সংগৃহীত

সাগরতলে খোঁজ মিলল পৃথিবীর বৃহত্তম আগ্নেয়গিরির

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ১০:৪২
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ১০:৪২

কিছুদিন আগে গ্রিনল্যান্ডের বরফের নিচে পাওয়া গিয়েছিল কলোরাডোর গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের চাইতেও বড় একটি গিরিসঙ্কট। এবার প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে খুঁজে পাওয়া গেলো বিশালাকৃতির একটি আগ্নেয়গিরি। এর নাম টামু ম্যাসিফ। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচাইতে বৃহৎ আগ্নেয়গিরি বলে ধরা হয় হাওয়াই এর মনা লোয়া আগ্নেয়গিরিকে কিন্তু টামু ম্যাসিফ এর সামনে সেটা নিতান্তই শিশু। এমনকি সৌরজগতের বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি, মঙ্গলের অলিম্পাস মনস এর চাইতেও মাত্র ২৫ ভাগ ছোট এটি। এ সংক্রান্ত গবেষণার মূল লেখক হলেন ইউনিভার্সিটি অফ হাউস্টন এর ভূবিজ্ঞানী উইলিয়াম সেগার এবং এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে Nature Geoscience জার্নালে।

“আমাদের ধারণা এটা এমন এক শ্রেণীর আগ্নেয়গিরি যা আগে আবিষ্কৃত হয়নি”, বলেন সেগার। “এর ঢাল খুব একটা খাড়া নয় এবং আপনি এর ওপর কোনও স্থানে দাঁড়িয়ে থাকলে বুঝতে পারবেন না কোন দিক দিয়ে নামতে হবে”। টামু ম্যাসিফ হলো ৪০০ মাইল দীর্ঘ এবং ২.৫ মাইল উঁচু। এটি আকৃতির দিক দিয়ে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ অথবা নিউ মেক্সিকো এর পুরোটার চাইতেও বড়। এটি এতদিন আমাদের গোচরে আসেনি তার কারণ হল এর অবস্থান। সমুদ্রতলের যে ভুত্বকের ওপর এর অবস্থান সেটি অনেক পাতলা এবং এই বিশাল আগ্নেয়গিরির ভার সহ্য করার মতো কাঠিন্য এর নেই। আর তাই এই আগ্নেয়গিরির শীর্ষ অবস্থিত সমুদ্রতলেরও ৬,৫০০ ফুট নিচে। আজ থেকে ১৪৪ মিলিয়ন বছর আগে,আদিম ক্রেটেশাস যুগে এটা কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে সক্রিয় ছিল কিন্তু এরপর থেকে তা হয়ে গেছে সুপ্ত। যে কোনও আগ্নেয়গিরিরই থাকে প্রচণ্ড উত্তপ্ত লাভায় পূর্ণ একটা কেন্দ্র যা থেকে উদ্গিরন হয়ে সৃষ্টি হয় এর ঢাল। টামু ম্যাসিফও এর ব্যতিক্রম নয়। কয়েক বছর ধরে ধৈর্য ধরে তথ্য সংগ্রহ করার পর বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ধারণা করা হতো টামু ম্যাসিফ হলো শ্যাটস্কি রাইজ নামের একটি সামুদ্রিক মালভূমির অংশমাত্র যা অবস্থিত উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে। সাধারণত এসব সামুদ্রিক মালভূমি তৈরি হয় প্রচুর পরিমানে আগ্নেয়গিরির লাভা সঞ্চিত হবার মাধ্যমে এবং এই প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক রকম তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু এখন জানা গেলো যে টামু ম্যাসিফ একটা স্বতন্ত্র আগ্নেয়গিরি এবং এর ফলে সামুদ্রিক মালভূমি নিয়ে আরও প্রশ্নের জন্ম হচ্ছে। সেগার বলেন, সমুদ্রের তলে এর চাইতেও বড় অন্যান্য আগ্নেয়গিরি লুকিয়ে থাকতে পারে। “সমুদ্রের তলে থাকা এসব কাঠামো নিয়ে গবেষণা করা আসলে খুবই কষ্টকর”।