ছবি সংগৃহীত

বৈশাখে মেহেদির লাল রং ভরিয়ে তুলবে মন

Sharmin Boby
লেখক
প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০১৩, ১৪:০১
আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৩, ১৪:০১

বাঙ্গালির যে কোন উৎসবের কথা মনে হলেই মনে হয়ে যায় মেহেদির কথা । এদেশের দেশীয় বিভিন্ন উৎসবে মেহেদির একটা আলাদা চাহিদা আছে । মেহেদির সাথে যেন আমাদের একটা নাড়ীর সম্পর্ক,মেহেদি কে আমরা শুভ সূচনার প্রতীক মনে করি তাইতো আবহমান কাল থেকেই ঈদ, পূজা, বিয়ে, গায়েহলুদ,পহেলা বৈশাখ , পহেলা ফাল্গুন সহ নানা ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবে রমণীরা হাতে-পায়ে মেহেদি পরছে মনের মাধুরী মিশিয়ে । শিল-পাটায় বেটে হাতে মেহেদি দেওয়ার চল এখন নেই বললেই চলে। হাতে পুরো লেপে, গোল করে কিংবা চাঁদের নকশা এখন আর হয় না। টিউব মেহেদিই এখন ভরসা। চিকন থেকে মোটা—সব ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলা যায় এর মাধ্যমে। তবে এখন মানুষের কালো মেহেদির প্রতি আকর্ষণ কমে গেছে অনেকটাই। সময়ের পরির্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন রঙ যেমন কালো, নীল, খয়েরি ইত্যাদি রঙের টিউব তৈরি করে থাকে। তবে বৈশাখ মানেই লাল সাদার ছড়াছড়ি তাই এবারের বৈশাখে মেহেদির লাল রং ভরিয়ে তুলবে সবার মন। মেহেদী রাঙ্গানো হাতের সাথে আমাদে র একটা আত্মিক টান আছে যা আমাদের সংস্কৃতি ,ঐতিহ্য কে প্রকাশ করে । আমরা কিন্তু ইংরেজি নিউ ইয়ারে মেহেদী পরি না আমরা মেহেদী পরি বাংলা নববর্ষে এতে করে আমাদের সংস্কৃতির সাথে আমাদের বন্ধন প্রকাশ পায় ।
পহেলা বৈশাখের আর মাত্র ১ দিন বাকী। অনেকেরই ইচ্ছা আছে এই পহেলা বৈশাখে হাত রাঙ্গানোর মেহেদী দিয়ে। আসুন জেনে নেই মেহেদী লাগানোর কিছু নিয়মাবলীঃ ১)মেহেদি হাতে লাগানোর আগে গাঢ় রঙের পোশাক পরতে হবে। কারণ অনেক সময় হাতে মেহেদি লাগানোর সময় মেহেদির দাগে পোশাক দাগ ভরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ২)হাতে মেহেদি লাগানোর আগে হাত অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ৩)হাতে মেহেদি লাগানোর আগে , হাতে ক্রিম বা লোশন লাগানো যাবেনা। ৪)মেহেদি লাগানো হয়ে গেলে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৬০ মিনিট হাতে মেহেদি রাখতে হবে। ৫) হাতের মেহেদি শুকিয়ে গেলে কিছুক্ষন পর হালকাভাবে উঠিয়ে তার ওপর লেবুর রস লাগাতে পারেন। কিছুক্ষণ পর দেখবেন আপনার মেহেদির রঙ টকটকে লাল হয়ে উঠেছে। ৬)হাতে মেহেদি দেয়ার পর সাবান ও পানির কাজ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা ভালো। এতে মেহেদির রঙ দীর্ঘস্থায়ী হয়। মেহেদির নকশাঃ মেহেদী দিয়ে করা যায় বৈচিত্র্যময় বাহারি নকশা । কারো মেহেদির নকশা ফুটে ওঠে হাতের তালুর মাঝখানে, আঙুলের ডগা বা হাতে তালু থেকে কনুই পর্যন্ত। তবে যাদের বয়স অল্প তারা বিভিন্ন্ নকশার মেহেদি হাতে লাগাতে পারেন। মাঝারি বয়সের মেয়েরা হাতভর্তি ডিজাইন না করে মাঝখানে ফাঁকা রেখে মেহেদি লাগাতে পারেন, হাত থেকে কনুই পর্যন্ত বা হাতের ওপরের অংশে। যাদের বয়স একটু বেশী তারা হাতভর্তি ডিজাইন না করে হালকা নকশার মেহেদি হাতে লাগাতে পারেন। priyo,com কিভাবে রাঙ্গাবো হাতঃ আজকাল হাতে মেহেদী পরার জন্য মেয়েরা পার্লারে ভীর জমায় অথচ সুন্দর ডিজাইন সংগ্রহ করে কিন্তু চাইলে বাড়িতে বসেই সম্ভব দারুণ নকশা করে হাতে মেহেদী লাগানো।খামাখা পয়সা নষ্ট না করে দেখে নিন আমাদের কাছ থেকে কিছু ডিজাইন এবং চেষ্টা করে দেখুন ঘরে বসেই মেহেদিতে হাত রাঙ্গানোর । আর যারা নিতান্তই ভরসা করতে পারছেন না ঘরে বসে মেহেদী দেয়ার ব্যাপারে তাদের জন্য রইল হাতের কাছের পার্লার সেখান থেকে তারা তাদের মতো ডিজাইন করিয়ে নিতে পারেন ।হালকা নকশার মেহেদি লাগাতে খরচ পড়বে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। হাত থেকে কনুই পর্যন্ত মেহেদি লাগাতে পারেন ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। সতর্কতা: সব ধরনের টিউব মেহেদিতে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই ব্যবহারের আগে এসব টিউব মেহেদি আপনার হাতে মাননসই কিনা তা অবশ্যই যাচাই করে নিন। যদি আপনার হাতে মানান সই না হয় তাহলে আর কি করা স্কিন সেনসেটিভ বলে কি আর শখ থাকতে নেই? তাদের জন্য রইল প্রাকৃতিক পাতা মেহেদি।পাতা মেহেদী তে চামড়ায় এলারজি হয় না তাই ডিজাইনে হয়তো খুব বেশী বৈচিত্র আনতে পারবেন না কিন্তু মনের শখটা তো মিটানো যাবে তাই বা কম কি?