ছবি সংগৃহীত

দেশে সাইবার ক্যাফের চাহিদা বাড়ছে

এম. মিজানুর রহমান সোহেল
জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারি ২০১৪, ০৯:০৮
আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৪, ০৯:০৮

(প্রিয় টেক) বাংলাদেশে প্রযুক্তি ব্যবসা প্রসার, থ্রিজি চালু, ব্যান্ডইউথের মূল্য কমানোসহ নানান কারণে ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া দেশের সব কিছু ক্রমশ ইন্টারনেট নির্ভর হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি ফরম, বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষার সময়সূচি, ফলাফলও প্রকাশ করা হচ্ছে অনলাইনে। যারা নিজ বাসায় ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না তাদের জন্য সাইবার ক্যাফে বিকল্প মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। আর তাই দেশে বাড়ছে সাইবার ক্যাফের চাহিদা। কিন্তু দেশে যে পরিমাণ বৈধ সাইবার ক্যাফে রয়েছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অবৈধ সাইবার ক্যাফে রয়েছে। তবে জুন মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩ হাজারের বেশি সাইবার ক্যাফে বৈধ হচ্ছে। লাইসেন্সবিহীন সাইবার ক্যাফেগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ক্যাফেগুলোকে লাইসেন্স গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। তা না হলে অবৈধ সাইবার ক্যাফেগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে সংস্থাটি। এরই মধ্যে জাতীয় এবং আঞ্চলিক আইএসপিগুলোকে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ না করারও অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি। সাইবার ক্যাফে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের হিসাবে দেশে বর্তমানে লাইসেন্সধারী সাইবার ক্যাফের সংখ্যা মাত্র ১৮০টি, অপরদিকে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩ হাজারের বেশি। সম্প্রতি বিটিআরসি লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগ এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করে। বিটিআরসির (লিগ্যাল ও লাইসেন্সিং বিভাগ) একজন উপ-পরিচালকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, লাইসেন্স না নিয়ে সাইবার ক্যাফে পরিচালনা করা অপরাধ। এসব প্রতিষ্ঠানে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করাও অপরাধ। লাইসেন্স গ্রহণ করে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনসাধারণকে সেবা দেয়ার আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি। এর পাশাপাশি সব নেশনওয়াইড ও জোনাল আইএসপিগুলোকে অবৈধ সাইবার ক্যাফেতে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ না করতে অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি। যেসব সাইবার ক্যাফে প্রতিষ্ঠান এখনও লাইসেন্স নেয়নি তাদের অবিলম্বে ইন্টারনেটসহ সাইবার ক্যাফে লাইসেন্স নেয়ার জন্য ওই নোটিশে বলা হয়েছে। বিটিআরসির ২০০৮-০৯ সালের হিসাবে তিনটি ক্যাটাগরিতে বর্তমানে মাত্র ১১৯টি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স নিয়ে সাইবার ক্যাফে সেবা দিয়ে আসছে, যদিও এর প্রকৃত সংখ্যা কয়েকগুণ হবে বলে ধারণা বিটিআরসির। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫ হাজার টাকা থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে সাইবার ক্যাফে লাইসেন্স দিয়ে থাকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিটিআরসির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আকতারুজ্জামান মঞ্জু। এদিকে সাইবার ক্যাফে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি জুলফিকার হায়দার বলেন, সারাদেশে লাইসেন্সবিহীন বা অবৈধ সাইবার ক্যাফের সংখ্যা ৩ হাজারেরও বেশি। আমরা এরই মধ্যে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে লাইসেন্স নিতে অনুরোধ করেছি। লাইসেন্স থাকলে কোনো ক্যাফেতে সাইবার অপরাধ সংঘটিত হলে সহজেই তা চিহ্নিত করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। যারা লাইসেন্স নিতে চান তাদের সব ধরনের সেবা দিতেও কোয়াব প্রস্তুত বলে তিনি জানান। এদিকে সাইবার ক্যাফে পরিচালনায় সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে দেশের সাইবার ক্যাফে ব্যবসায়ীদের সংগঠন সাইবার ক্যাফে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। জনসাধারণকে বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে কিওস্ক চালুর প্রস্তাবও দেয় সংগঠনটি। সম্প্রতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসচিব (আইসিটি) নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সংগঠনটির নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা এ প্রস্তাব দেন।