ছবি সংগৃহীত

দিনাজপুরে যাত্রার নামে চলছে অশ্লীলতা

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ০৭:০৩
আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ০৭:০৩

প্রতিবছর শীতকালে দিনাজপুরে বসে চেরাডাঙ্গী পশু মেলা। আর এ মেলায় বিভিন্ন আয়োজনের পাশাপাশি চিত্ত বিনোদনের জন্য আয়োজন করা হয় যাত্রাপালার। দিনাজপুরের দক্ষিণ কোতয়ালী এলাকার চেরাডাঙ্গী পশু মেলায় যাত্রার নামে চলছে অশ্লীলতা ও নারীর দেহ প্রদর্শনী চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা প্রিয়.কমের কাছে অভিযোগ করেছেন, ঐতিহ্যবাহী যাত্রা শিল্পের নামে চলছে সেখানে চরম নোংরামি। এছাড়াও অবৈধ হাউজি ও জুয়ার আসর বসে প্রতিদিন। এছাড়া এতে কিশোর ও যুব-সমাজ মারাত্মকভাবে নৈতিক অধঃপতনে ধাপিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীরা। ঘটছে, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। জেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানী, দাঙ্গা, সন্ত্রাসী, মারামারি, ধর্ষণসহ নানান অপরাধ কার্যক্রম।

দিনাজপুরে যাত্রাপালার নারী যাত্রাশিল্পী
গতবার জুয়া পরিচালনার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে এই মেলায় মানুষ খুন হলেও মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এই পশু মেলায় অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে নানা মহলে। বাঙ্গালী জাতির আদি সংস্কৃতি হিসেবে এসেছে যাত্রা। আর এ যাত্রা থেকেই এসেছে নাটক, থিয়েটার ও সিনেমা। কিন্তু এই আদি সংস্কৃতির প্রতি সরকারের পৃষ্টপোষকতার অভাবে আজ তা হারিয়ে যেতে বসেছে। এক শ্রেনীর দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী যাত্রা শিল্পে অশ্লীলতা স্থান করে নেয়ায় প্রকৃত যাত্রা প্রেমীরা আর যাত্রা প্যান্ডেলে যেতে পারছে না। তবে যাত্রা শিল্পীরা বলছেন, এই অশ্লীলতা তারাও পছন্দ করেন না। তাদের এই পেশা টিকিয়ে রাখতে এবং বাঁচার তাগিদে একটি চক্রের কাছে জিম্মি হয়েই তারা অশ্লীলতায় বাধ্য হন। সরকারী পৃষ্টপোষকতার অভাবে যাত্রা শিল্পে অংশ নেয়া যাত্রা শিল্পীরা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
যাত্রাপালায় এক শিশুকে নিয়ে নারী যাত্রাশিল্পীর অশ্লীল নৃত্য
তারা জানান, বছরে তিনমাস যাত্রা চললেও বাকী ৯ মাস কোন কাজ না থাকায় তাদের মানবেতন জীবন যাপন করতে হয়। তাই তারা প্রতিটি জেলায় যাত্রা’র জন্য একটি পৃথক অডিটরিয়াম স্থাপন করে সারা বছর যাত্রার আয়োজন করে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার দাবী জানিয়েছেন। এই ঐতিহ্যবাহী যাত্রা শিল্পে অপসংস্কৃতি হিসেবে ‘অশ্লীলতা’ ঢুকে পড়ায় এই শিল্প তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। যুব সমাজ যাচ্ছে নৈতিক অধঃপতনে। এ কথা স্বীকার করেছেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক আহমদ শামীম আর রাজী।