
ছবি সংগৃহীত
দশ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলা
আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১২:৩০
অধ্যাপক ড. এস তাহের, ছবি: প্রিয় ক্যাম্পাস
আরিফুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
(প্রিয় ক্যাম্পাস) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহেরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দশ বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। উচ্চ আদালতে আপিল শুনানির অপেক্ষায় আটকে গেছে বিচারের রায় বাস্তবায়ন।
এদিকে হত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ও রায় বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে তার বিভাগের শিক্ষকর-শিক্ষার্থীরা। দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক শোকসভায় এ দাবি জানানো হয়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিভাগের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ র্যালি বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষকর-শিক্ষার্থীরা। এরপরে বেলা ১১টায় বিভাগের ৪১২ নং কক্ষে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুবয়ারি রাতে অধ্যাপক ড. তাহের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার পশ্চিম ২৩/বি বাসা থেকে নিখোঁজ হন। পরে ৩ ফেব্রুবয়ারি সকালে তার বাসার পিছনের সেফটিক ট্যাঙ্ক থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ড. তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভী নগরীর মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ পুলিশ ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৭ ফেব্রুয়ারি ড. তাহেরের সহকর্মী মিয়া মো. মহিউদ্দিনকে আটক করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক আহসানুল কবির জামায়াতপন্থী শিক্ষক মিয়া মহিউদ্দিন ও তৎকালীন রাবি শিবির নেতা মাহবুবুল আলম সালেহীসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
পরে ২০০৭ সালের ৩ জুলাই রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। ২০০৮ সালের ২২ মে আদালত জামায়াতপন্থী শিক্ষক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, বাড়ির কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীরের ভাই শিবির কর্মী আব্দুস সালাম, নাজমুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। অভিযোগপত্রের অন্য দুই আসামী তৎকালীন রাবি শিবির সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
এরপর ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য মামলা হাইকোর্টে আসে। এছাড়া রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলও করেন আসামিরা। ৫ বছর পর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। ওই বছরের ২১ এপ্রিল আপিলের রায়ে দু’জন মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য দু’জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
তবে অভিযোগ পত্রে উল্লিখিত আসামিদের দু’জন খালাস পেয়ে যাওয়ায় এবং দু’জনের সাজা কমানোয় ড. তাহেরের পরিবারের পক্ষ থেকে আবার উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। কিন্তু ৩ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো আপিলের নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে বিচারের রায় কার্যকরও সম্ভব হয় নি।
মামলার ব্যাপারে ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘হাইকোর্টের বিচারের রায় দ্রুত নিষ্পত্তি এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’