
ছবি সংগৃহীত
ডায়রি লেখা যেসব কারণে ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে
আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৪, ০৫:১০
(প্রিয়.কম) আমরা কি এখন কাগজে-কলমে ডায়েরি লিখি? মনে তো হয় না। একবিংশ শতাব্দীর বিশ্ব গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে আমাদের মনের কথাগুলো প্রকাশ করার অনেক মাধ্যমই আছে। তাহলে শুধু শুধু সময় নষ্ট করে ডায়েরি লিখতে যাব কেন? সাধারণত একজন মানুষ ডায়েরি লেখে কেন? জীবনের কোনো ভালোলাগার মুহূর্ত বা খুব কষ্টের মুহূর্তগুলো ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করার কিছু কারণ রয়েছে, যেমন মনকে হালকা করা এবং মানসিকভাবে প্রশান্তি লাভ বা অতীত জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মনে রাখা। এক কথায় শেয়ার করা। কিন্তু অনলাইনের এই যুগে ২ সেকেন্ড আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মুহূর্তেই শেয়ার করে ফেলি অনলাইন বন্ধুদের কাছে। অথবা ধরুন খুব কষ্টের একটি বিষয় যা আপনার মনকে ছিন্নভিন্ন করে চলেছে। তা প্রকাশ দরকার কেননা এতে মন হালকা হবে। আবার এমন একটি কথা যেটা কারও সাথে শেয়ার করাও যায় না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা যা করি তা হল মনের কথাগুলোকে পরোক্ষ উক্তিতে বা প্রতীকের সাহায্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিই। এতে করে মনও হালকা হয় আবার শেয়ারিংয়ের বিষয়টাও হয়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে অনলাইনের যুগে ডায়রি লেখার ব্যাপারটাও বেশ বদলে গেছে। তবে কাগজ-কলমে হোক বা ভার্চুয়াল জগতের পাতায়, অনেকেই নিজের জীবনের রেকর্ড রাখেন ডায়রির মাধ্যমে। যতই তাদের বাইরের জগত থাকুক না কেন, ডায়েরির অন্দরমহলে দিনে একবার হলেও তারা প্রবেশ করবেন। আজকের এই আয়োজনে আসুন জেনে নিই ডায়েরি লেখা যেসব কারণে ঠিক না বা ডায়েরি আপনার জীবনের যেসব ক্ষতি করতে পারে।
ব্যক্তিগত বিষয়ের বহিঃপ্রকাশ অমঙ্গলকর হতে পারে :
আপনার জীবনের অনেক বিষয়ই একান্তই ব্যক্তিগত হয়ে থাকে যা কারও সাথেই শেয়ার করা যায় না, এমনকি সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছেও না। তা হয়তো আপনি আপনার আপন ডায়েরিটাতে প্রতিদিন লিপিবদ্ধ করে রাখছেন। কিন্তু এমনও তো হতে পারে ডায়েরিটি হঠাৎ আপনার হাতের নাগালের বাইরে চলে গেল। তখন বিষয়টি কেমন হবে? তারচেয়ে কী দরকার ডায়েরিতে এসব ব্যক্তিগত বিষয় লিখে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে জানানো। এর চেয়ে মনের কথা মনেই থাকুক। তা একমাত্র আপনিই জানুন।ব্যক্তিত্ব নষ্ট হতে পারে :
ডায়েরি লেখার অভ্যাস আপনার সুন্দর ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করে দিতে পারে। ধরুন আপনি খুবই সুন্দর একটি ব্যক্তিত্বের মানুষ, যাকে সবাই পছন্দ করেন সবাই ভালোবাসেন। কিন্তু এটা স্বাভাবিক যে প্রতিটি মানুষেরই কিছু না কিছু ভুল বা দোষ থাকতে পারে। এগুলো যদি ডায়েরিতে লিখে রাখেন আর সেটি যদি দ্বিতীয় ব্যক্তি দেখে ফেলে, তাহলে তার কাছে স্বাভাবিকভাবেই আপনার ব্যক্তিত্বটি নষ্ট হবে। এ কারণে ডায়েরি না লেখাই নিরাপদ।কোনো অপরাধের প্রমাণ থেকে যায় :
ডায়েরি লেখা এই সবচেয়ে বড় ক্ষতিটি করতে পারে। মানুষ মাত্রই ভুল করে। আর এই ভুলের বশে আপনি হয়ত কোনো একদিন কোনো অপরাধ করে বসলেন এবং তা লিপিবদ্ধ করলেণ ডায়েরিতে। সেই অপরাধের একটি বলিষ্ঠ প্রমাণ রেখে দিলেন। তাহলে?সংসার জীবনের শান্তি নষ্ট হতে পারে :
তরুণ বয়সে অনেক মজাই আপনি করে থাকতে পারেন। সম্পর্কে জড়িয়েও থাকতে পারেন ২/১ টি। কিন্তু এখন আপনি পরিবারের সিদ্ধান্তেই বিবাহিত। আপনার স্ত্রী বা স্বামী আপনার অতীতের কোনোকিছুই জানেন না। সেক্ষেত্রে আপনার সুখী পরিবার। কিন্তু তরুণ বয়সে করা সব ধরনের ঘটনার সাক্ষী আপনার ডায়েরিটা যদি তার মুখটি খুলে দেয় তাহলে? কি আর হবে সংসারে কিছুটা অশান্তি আর দাঙ্গা হাঙ্গামা চলবে।অতীতের কথা মনে পড়তে পারে :
অতীত প্রতিটি মানুষেরেই থাকে। কেউ ভুলে যায়, কেউ ভুলতে পারে না। অতীত যেহেতু চলেই গেছে এবং তা আর কোনোদিন ফিরে আসবে না তাই তাকে চিরতরে ভুলে যাওয়াই ভালো। অতীতকে মনে করে শুধু শুধু কষ্ট পাওয়ার কোনো মানে নেই। কিন্তু আপনার ডায়েরিটা? সেটি আপনার অতীতকে বারবার মনে করে দিবে এবং আপনাকে কষ্টের সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে বেড়াবে। এ কারণেই ডায়েরি লেখা আপনার জীবনের জন্য হতে পারে অমঙ্গলকর। ছবি : ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত- ট্যাগ:
- লাইফ
- জীবন চর্চা
- ডায়রি লেখা