ছবি সংগৃহীত

ঘরের কোণেই টাটকা মরিচ

দেয়া
লেখক
প্রকাশিত: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ১১:১৫
আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ১১:১৫

বাঙ্গালির রসনা বিলাসের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো মরিচ। কাঁচা মরিচের পাশাপাশি শুকনো মরিচেরও কদর আছে। সারা বছরই গৃহিণীর রান্নাঘরে বা ফ্রিজে থাকে তার উপস্থিতি। কিন্তু মরিচের দাম সারা বছরই থাকে অস্থিতিশীল। বিশেষ করে ঈদ বা রমজানের সময় তো মরিচ কিনতে গিয়ে পকেট ফাঁকা হবার উপক্রম। এ ঝামেলা এড়াতে বাসাতেই রাখতে পারেন দু-চারটি মরিচের গাছ। খরচ কমে গেলো আর সেই সাথে যখন ইচ্ছে দুটো টাটকা মরিচ গাছ থেকে ছিঁড়ে নিয়ে খেয়ে ফেললেন ভাতের সাথে।

সঠিক সময়-

মরিচ গাছ বেশ ছোটোখাটো এবং ঝোপালো, তাই টবে গজানোর জন্য এটি আদর্শ। মে-জুন মাসে বপন করতে পারেন অথবা শীতকালের শুরুতে অক্টোবর মাসেও এটা ভালো হয়। বাংলাদেশে পাওয়া ভালো মরিচের জাতের মাঝে আছে ধানি মরিচ, বালুঝুরি, ভিন্ডি, বারোমাসি ইত্যাদি। নার্সারি থেকে এদের বীজ কিনে নিতে পারেন। অথবা শুকনো মরিচের ভেতরে যে বীজ থাকে সেগুলোও বের করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। মাটির অথবা প্লাস্টিকের টব ব্যবহার করতে পারেন মরিচ গাছ লাগানোর জন্যে।

বীজ রোপণ ও চারা-

দোআঁশলা এবং সামান্য ক্ষারীয় মাটি লাগবে মরিচ গজানোর জন্য। টবের এই মাটিতে যথেষ্ট পানি দিন যাতে মাটি ভেজা ভেজা থাকে এবং এক মুঠো মরিচের বীজ ছড়িয়ে দিন এর উপরে। লক্ষ্য রাখুন মাটি যেন একেবারে শুকিয়ে না যায়। ঠাণ্ডা জায়গায় টবটিকে রাখবেন না। ২ থেকে ৫ দিনের মাঝে অঙ্কুরোদ্গম ঘটবে বীজগুলো থেকে। এ সময়ে মাটিকে আর্দ্র রাখাটা খুবই জরুরি। সপ্তাহখানেকের মাঝে ছোট ছোট চারা গজিয়ে যাবে। শুধুমাত্র সবল চারাগুলো রেখে বাকিগুলো উঠিয়ে ফেলুন এবং চারাগুলোকে আলাদা টবে স্থানান্তর করুন।

যত্ন আত্তি-

  • মরিচের কচি চারার ডগা খাবার জন্য সমাগম হয় পিঁপড়ে এবং ছোট ছোট পাখির। পিঁপড়ে থেকে বাঁচার জন্য টবের চারপাশে কীটনাশক চকের দাগ দিয়ে রাখতে পারেন। পাখির হাত থেকে বাঁচতে ঝাঁঝরি অথবা শক্ত নেট দিয়ে টব ঢেকে রাখতে পারেন।
  • যথেষ্ট আলোবাতাস ও পানির প্রয়োজন হয় মরিচ গাছের বৃদ্ধির জন্য। তাই এদেরকে রাখুন বারান্দা অথবা জানালার পাশের রৌদ্রোজ্জ্বল স্থানটিতে। খুব বেশি ঠাণ্ডা বাতাস সহ্য করতে পারবে না এটি তাই বাতাস দিলে ঘরে এনে রাখতে পারেন অথবা অন্য কোন গাছের আড়ালে রাখতে পারেন।
  • গাছে পানি দেবার সময়ে লক্ষ্য রাখুন পাতা যেন ভিজে না যায়। পাতা ভিজে গেলে রোগবালাই হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। পানি জমে গাছ মারা যেতে পারে তাই টবের থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখুন (সাধারণত টবের মাটির নিচে এক স্তর খোয়া বিছিয়ে দিলেই হয়)
  • সকালে চনচনে রোদ ওঠার আগে বা রোদ পড়ে গেলে বিকালে বা রাতে পানি দেওয়াই সবচেয়ে ভালো। দিনে একবার অবশ্যই পানি দেবেন।গাছ একটু বেড়ে উঠলে টবের মাটিতে একটি কাঠি পুঁতে তার সাথে গাছের কাণ্ড বেঁধে দিতে পারেন, এর ফলে গাছ বাঁকা হয়ে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
  • গাছে ফুল ধরার দুই দিনের মাঝে ফুল ঝরে পড়বে এবং এর জায়গায় দেখা যাবে কচি মরিচ। কাঁচা পাকা দুই রকমের মরিচই খেতে পারেন। এছাড়া মরিচ পেকে যাবার পর একে শুকিয়ে নিতে পারেন। তবে গাছ থেকে মরিচ পাড়ার পর অবশ্যই হাত ভালো করে ধুয়ে নেবেন। নয়তো হাত জ্বলতে থাকবে। আর এই হাত যদি চোখে যায় তাহলে তো কথাই নেই!