ছবি সংগৃহীত

গুণী গাছের কথা: নয়নতারা

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৪, ০৬:৫৯
আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪, ০৬:৫৯

(প্রিয়.কম) ঢাকা শহরে সবাই না চিনলেও মফস্বল ও গ্রাম-গঞ্জের সকলের কাছেই নয়নতারা খুবই পরিচিত একটা নাম। বড় কাব্যময় এ গাছের নাম। নয়নতারা হলো তিক্ত ভেষজ, গাছটির সম্পূর্ণ অংশই স্বাদে তিতা। ডায়াবেটিস বা মধুমেহ রোগের প্রতিরোধক হিসেবে নয়নতারার আন্তর্জাতিক ব্যবহার স্বীকৃত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে, শ্রীলংকা, ভারতবর্ষের প্রায় সর্বত্রই গাছটি পাওয়া যায়। তবে সাধারণত সমতল জমিতেই গাছটি জন্মে। সাধারণভাবে গাছটি বর্ষজীবী তবে অনেক সময় বহু বছরও বাঁচে। নয়নতারার পুরনো বৈজ্ঞানিক নাম ভিনকা রোসিয়া এবং নতুন বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাথারানথাস রোসিয়া। নয়নতারা গাছটি ২-৩ ফুট লম্বা, কাণ্ডের একটু উপর থেকেই ডালপালা বেড়ে ওঠে। গাছের পাতা গাঢ় সবুজ রঙের। পাতা আয়তাকার, খানিকটা লম্বাটে-গোল বোতামের মতো দেখতে। নয়নতারার সাধারণত দুই রঙের ফুলই বেশি দেখা যায়। একটি হয় হালকা গোলাপি রঙের, অন্য প্রকারের ফুলটি হয় দুধের মতো সাদা রঙের। নয়নতারা গাছে সারাবছরই ফুল ফোটে এবং ফল ধরে। শুঁটি ধরনের ফল, সরিষার দানার চেয়ে সামান্য বড়। এই ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে গাছ লাগানো যায়। আবার গাছের কলম তৈরি করেও গাছ লাগানো যায়। টবে করে বাসার ছাদে বা বারান্দায় এই গাছ লাগাতে পারেন। গাছ লাগাতে চাইলে গভীর ও লম্বা টব ব্যবহার করুন। টবের তলায় একটু বড় করে ছিদ্র করুন। সাধারণ মাটিতেই এই গাছ হয় তবে পানি নিয়মিত দিতে হবে। নয়নতারা গাছে মাঝে মাঝে ভাইরাসের আক্রমণ নয় এবং সেক্ষেত্রে গাছটি বাঁচে না। তাই উপযুক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো। মাঝে মাঝে খুব লম্বা ডালগুলো খানিকটা ছেঁটে দিন, নয়তো কাণ্ড কাষ্ঠল হয়ে যাবে এবং ফুলও কমে আসবে। কৃমির প্রকোপ কমাতে নয়নতারার রস ব্যবহার একটি প্রাচীন চিকিৎসা। গাছের ডাল, কাণ্ড সিদ্ধ করে ক্বাথ তৈরি করে নিয়মিত খেতে হবে। মেধা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও নয়নতারার রস ব্যবহারের বিধি রয়েছে। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের রোগী, তাঁরা নয়নতারার ক্বাথ টানা ৮-১০ দিন খাওয়ার পর রক্তচাপ মাপবেন। রক্তচাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত খেয়ে যেতে হবে।