ছবি সংগৃহীত

কাজের বুয়া নেই? জেনে নিন বুয়া ছাড়াই চলার কার্যকরী টিপস

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ০৪:৩৫
আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ০৪:৩৫

(প্রিয়.কম) কাজের বুয়া ছাড়া সংসার নিয়ে বিশাল যন্ত্রণা? পৃথিবীর বেশিরভাগ দেখেই কিন্তু কাজের বুয়া মেলে না, হাউজ কিপার মিললেও সেটা খুবই ব্যয় বহুল। তাহলে সেসব দেশে মানুষ কীভাবে ম্যানেজ করেন? আমাদের দেশেও দেখবেন যে অনেক বাড়িতেই কাজের বুয়া নেই। চলুন, আজ জেনে নিই কাজের বুয়া ছাড়াই কম পরিশ্রমে সংসার ম্যানেজ করার কিছু কৌশল। কারো ওপরে নির্ভর করে থাকতে হবে না, আবার প্রতিমাসে বাঁচবে এতগুলো টাকাও। ১) বাসনকোসন ধোয়া নিয়ে ঝামেলা? সব বাসনকোসন একত্রে জমিয়ে না রেখে, যখন যেটা ব্যবহার করলেন সেটা তখনই ধুয়ে ফেলুন। বাড়ির সকলকে সেখান নিজের প্লেট ও গ্লাস নিজেই পরিষ্কার করতে। দেখবেন, বাসন ধোয়াকে ঝামেলা মনে হবে না মোটেও, বেসিনেও জমবে না কিছু। ২) ঘর মোছা নিয়ে সমস্যা? বাজারে নানান রকমের মব মেলে, কিনে নিন নিজের পছন্দ মত সাইজের। এরপর দাঁড়িয়েই দাঁড়িয়েই পরিষ্কার করে ফেলুন ঘরদোর। বিশ্বাস করুন, বুয়ার হাতে মোছার চাইতে অনেক বেশি পরিষ্কার হবে। আরও ভালো দিক হচ্ছে, মব গুলো পানি নিচে ধরলেই পরিষ্কার হয়ে যায়। হাত দিয়ে ধরার প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়াও ভ্যাকুয়াম ক্লিনার কিনে নিন একটি। মাত্র হাজার পাঁচেক টাকা দাম পড়ে এমন। কত হাজার পাঁচেক টাকা তো বুয়ার বেতন দিয়েই নষ্ট করেছেন। ৩) কাপড় ধোয়া নিয়ে সমস্যা? সবচাইতে সহজ সমাধান হলো একটি ওয়াশিং মেশিন কিনে নেয়া। হ্যাঁ, একবারে কিছু টাকা খরচ হবে। কিন্তু ফ্রিজের মতই এই মেশিনটিও আপনার বন্ধু। না, আহামরি বিদ্যুৎ খরচ হবে না। যেটুকু বাড়তি বিল আসবে, যেটুকু বুয়াকে যা দিতেন কাপড় ধোয়ার জন্য, সেটার সমানই। কিন্তু জীবনে চোখের পলকে সোজা করে দেবে এই মেশিন। আর যারা মেশিন কিনতে পারবেন না, তাঁরা অভ্যাস করুন রোজ গোসলের সময় নিজের কাপড় নিজে ধুয়ে ফেলতে। একদম শিশু ও বৃদ্ধ ছাড়া বাড়ির সকলের জন্যই এই নিয়ম করুন। ৪) সকালে নাস্তা তৈরির জন্য বুয়া লাগে? সবজি ভাজিটা আপনি আগের রাতেই করে ফেলতে পারেন, সকালে কেবল গরম করবেন। অন্যদিকে কয়টা রুটি বেলা কিন্তু মোটেও কঠিন কাজ নয়। যদি তাতেও কষ্ট লাগে, পাউরুটি খাওয়া অভ্যাস করুন। নাহলে একদিন বসে একসাথে কিছু পরোটা বানিয়ে ফেলুন। এই পরোটা ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। সম্ভব হলে হালকা একটু সেঁকে রাখুন। প্রয়োজন মত বের করে খান। তবে মানুষ বেশি হলে পাউরুটিই ভালো। সাথে রাখুন জ্যাম, মাখন, তাজা ফল ও দুধ। ৫) অবশ্যই একটি মাইক্রোওয়েভ কিনে ফেলুন। ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা হলেই কিনতে পারবেন। এই দারুণ মেশিনটি সময় তো বাঁচাবেই। অন্যদিকে প্রতিদিন অনেকগুলো বাসন ময়লা হওয়া থেকেও বাঁচিয়ে দেবে আপনাকে। ৬) একটি ব্লেন্ডার মেশিনও অবশ্যই জরুরী। ২ হাজার টাকা হলেও দারুণ একটি মেশিন পাবেন। ৭) কিছু কাজ বাইরেই করান। যেমন ধরুন কাপড় ইস্ত্রি করা, মাছ বা মুরগী কোটা। বাটা মসলার বদলে গুঁড়ো মশলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। নারকেল দুধ, চিকেন ষ্টক বা এমন সময় সাপেক্ষ উপাদানগুলো আজকাল কৌটায় পাওয়া যায়। দামেও খুব বেশি নয়। বেশি মেহমান এলে ওয়ান টাইম প্লেট গ্লাস ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও রান্নায় সময় বাঁচাতে প্রেসার কুকার, রাইস কুকার, ওভেন ইত্যাদি মেশিনের সাথে সমঝোতা করে নিন। ৮) ডিপ ফ্রিজে খাবার রেখে দেয়া অভ্যাস করুন এবং কীভাবে রাখলে সেটা স্বাস্থ্য সম্মত, সেটাও জেনে নিন। খাবার রাখবেন এয়ার টাইট ব্যাগে কিংবা বক্সে। মোটামুটি এক থেকে দেড় সপ্তাহ রান্না করা খাবার ডিপ ফ্রিজে রেখে খাওয়া যায়। বিশেষ করে মাংস জাতীয় খাবার একটু বেশি করেই রাঁধুন। মাংস ডিপে রেখে দিলে স্বাদ নিয়ে হেরফের হয় না। কাজের বুয়া ছাড়া চলবে না, এই সমস্যাটি একেবারেই মানসিক। ক্ষেত্রবিশেষে ছাড়া বাকি যে কেউ কিন্তু কাজের মানুষ ছাড়া দিব্যি চলতে পারবেন। তাই আস্তে আস্তে এসব অভ্যাস করে নিন। দিন শেষে উপকার হবে আপনার নিজেরই। কেননা আজ থেকে কিছু বছর পর আক্ষরিক অর্থেই এই দেশে কাজের বুয়া মিলবে না।