
ছবি সংগৃহীত
অশুভ ২০১৩ সালের যে ১০টি রাজনৈতিক ঘটনা আমরা কখন ভুলবোনা
প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারি ২০১৪, ১১:৪৯
আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৪, ১১:৪৯
আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৪, ১১:৪৯
ইউরোপিয়ান কুসংস্কারে ১৩ সংখ্যা টিকে অশুভ বলে ধরা হয় । এই কুসংস্কারকে সঠিক প্রমাণ করে, ২০১৩ সাল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্যে একটা অশুভ বৎসর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
এইটা একটা ভালো প্রশ্ন -২০১৩ তে যা কিছু হইছে তা ২০১২ বা ২০১১ তে হয় নাই কেন
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে দেখবেন, ২০১৩ তে যা ঘটছে তার একটা মূল কারণ হইলো, ২০১৩ হচ্ছে ইলেকশন ইয়ার। এবং ২০১৩ তে যত ঘটনা ঘটছে, তা মূলত ইলেকশন ইয়ার এর মজমা- বাকি সব রক্তপাত, বিচার, অভ্যুত্থান, জন-বিক্ষোভ ইত্যাদি ইত্যাদি সব হইলো বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের প্রায় ৮০,০০০ কোটি টাকার প্রত্যক্ষ বাজেট এবং তার কয় এক গুন বেশি কালো টাকার দখল নেয়ার জন্যে সরকারী দল এবং বিরোধী দল এর দ্বন্দ্বের একটা সাইড ইফেক্ট মাত্র। বাংলাদেশের জনগণ কখনো পর পর দুই বার কোন দলকে নির্বাচিত করে নাই। কারণ, মানুষ জানে একটা দল তার পাঁচ বছরে এমন ভাবে দুর্বৃত্তায়নের কাঠামো তৈরি করে, তাকে না ভাঙ্গলে পরবর্তী পাঁচ বছর সেই দল এই দেশের প্রতিটা কড়ি বর্গা খুলে বেচে দিবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ক্ষমতাশীল ইন্সটিটিউশন এর অভাবে এই ক্ষমতার পালাবদল বাংলাদেশের জনগণ এর কাছে ব্যাল্যান্স অফ পাওয়ার বা শক্তির ভারসাম্য নিশ্চিত করার একমাত্র টুলস। আওয়ামী লিগ সেইটা জানে। এবং এই প্যাটার্নটাকে ভাঙ্গার জন্যে তারা গত আড়াই বছর ধরেই প্রস্তুতি এবং বিভিন্ন স্ট্রাটেজি নিছে। সেই প্রস্তুতির এবং স্ট্রাটেজি গুলোর ফাইনাল বহিঃপ্রকাশ গুলো ঘটছে ২০১৩ সালে। এবং সেই স্ট্রাটেজি যখন কাজ করে নাই তখন সরকার কাউন্টার স্ট্রাটেজি নিয়ে আগাইছে –ফলে বিভিন্য রকম ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হইছে। শাহবাগ, হেফাজত এর সব কিছুই মূলত আওয়ামী লিগ এর ক্ষমতা ধরে রাখার গেম এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া থেকে জন্ম।শাহবাগ, শাহবাগ, শাহবাগ -আশা আর তঞ্চকতার শাহবাগ
২০১৩ সালের প্রথম উল্লেখযোগ্য ঘটনাটা শাহবাগ। শাহবাগ আওয়ামী লিগ এর স্ট্রাটেজিতে ছিলনা। শাহবাগ এর প্রথমে আওয়ামী লিগ ধাক্কা খেয়ে গেছিল। অপরাধ প্রমানিত কিন্তু ফাঁসি হবেনা – এই ঘটনায় সরকারের সাথে জামাতের গোপন আতাত সন্দেহে শহুরে তরুণ যখন শাহবাগে নামলো তখন এর প্রথম স্পিরিট ছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আওয়ামী লিগ এর হাত থেকে ছিনিয়ে আনা। কিন্তু, সেইটা পরে শাসক দল কৌশলে নিজের দখলে আনতে সমর্থ হয়। এবং এরপর শাহবাগ হয়ে পরে, শাসক দল এর গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। আমাদের প্রজন্মের যারা শাহবাগের সাথে জড়িত ছিল কিন্তু, শাহবাগের বিরানি খায় নাই –এবং এস্টাব্লিশমেন্ট এর বিরুদ্ধে তরুণ প্রাণ এর স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ হিসেবে যারা শাহবাগে অংশ নিছিল এবং ঘাতকদের বিচার চেয়েছিল তাদের অনেকেই আজকে কনফিউজড কেন তারা শাহবাগে গিয়েছিল। তারা এই শাহবাগ চেয়েছিল কিনা। যদিও, বলা হয় শাহবাগ শুধু ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চেয়েছিল আর বাংলা পরীক্ষা দিতে চেয়েছিল – কিন্তু শাহবাগের মূল অর্গানাইজাররা যারা ১২/১৩ দিন পরেই প্রেশারে পরে, পিতৃ প্রদত্ত জান বাঁচানো ফরজ মনে করে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার কাছে নত হইছে বা সম্মান নিয়ে পালিয়ে গ্যাছে তারা কি চিন্তা করে শাহবাগ অর্গানাইজ করছিল সেইটা এখন বললেও অনেকে বিশ্বাসও করবেনা। কারণ, বাকি বছর এর ঘটনাবলির কারণে অনেকেই এখন শাহবাগকে দোষারোপ করে – ফলে এই ব্যাখ্যা এখন খুব কম মানুষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে। আজকে তবুও একটা কথা, ক্লিয়ারলি বলা যায়, শাহবাগ খুব ক্লিয়ারলি একটা মেসেজ দিছে, বাংলার মানুষ কোন দ্বিধা ছাড়া – ঘাতক দালালদের বিচার চায় এবং শাহবাগ পরবর্তী ঘটনা প্রমাণ করে সেই বিচারকে শাসকদের ক্ষমতা রক্ষার অস্ত্র বানানো হলে তার ব্যাপারে বাংলার মানুষের অবস্থান বিভাজিত হয়ে পরে।আস্তিক নাস্তিক বিতর্ক
শাহবাগের ঘটনা ক্রমে আস্তিক নাস্তিক বিতর্ক জন্ম নেয়। যেইটা মাহমুদর রহমান খোচাইছিল এবং যেইটার সুযোগ করে দেয় থাবা বাবা বা রাজীব এর হত্যাকাণ্ড। এবং রাজীবকে যারা মারছে, তারা খুব উঁচু মাপ এর খেলাড়ি। তাদের যে উদ্দেশ্য ছিল, সেই উদ্দেশ্য ২০০০% সফল হইছে। এবং, শাহবাগ আন্দোলন এর সেই সময়ের নেতাদের সব চেয়ে নির্বুদ্ধিতা হইলো, এই ট্র্যাপ এ পা দেয়া। কারণ, শাহবাগে আস্তিক, নাস্তিক, মৌলবাদী, হেফাজতি, বিএনপি, অগ্নি উপাসক জরাথ্রুস্ট, শিখ (আমি একজন কে চিনি :p) , আওয়ামী সবাই জয়েন করছে। ফলে, শাহবাগকে শুধু মাত্র নাস্তিকদের আন্দোলন হিসেব করে প্রমোট করাটা মাহমুদুর রহমান এর অনেক বড় একটা অন্যায় –এবং যার দায় বাংলাদেশের মানুষ নিছে এবং প্রায় ৫০০ এর উপরে মৃত্যুর পরেও সেই দায় কবে শেষ হবে কেও বলতে পারবেনা।সায়েদির মৃত্যুদণ্ডের পরে সাম্প্রদায়িক বিক্ষোভ
সায়েদির ইস্যুটা খুব ডেলিকেটলি দেখতে হবে। দেশের একটা বড় জনগোষ্ঠীর কাছে ইসলাম রক্ষার ইস্যুটা বড় ইস্যু হয় সায়েদির বিচার এর কারনে । এবং সায়েদির রায়ের পর যখন দেশ ব্যাপী ব্যাপক ব্যাপক বিক্ষোভ হয় এবং তাতে এক দিকে পুলিশের গুলিতে যেমন প্রচুর মানুষ মরছে, , তেমনি বিক্ষোভ-কারিরাও অনেক জায়গায় পুলিশকে মারছে, এবং অনেক জায়গায় হিন্দু জনপদ এর উপর হামলা করছে। একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন। সায়েদী জামাত এর নেতা হইতে পারে কিন্তু আমাদের দেশের অনেক সাধারণ লোকজনের কাছে জামাত পরিচয় এর আগে সায়েদির পরিচয় একজন প্রভাবশালি ইসলামীক আলেম হিসেবে। সায়েদীর ক্যাসেট, বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে হটসেলিং আইটেম । সায়েদির এক একটা ওয়াজ মাহফিলে হাজার হাজার মানুষ আসে । আবার আমাদের শহুরে মধ্যবিত্তের একটা বড় অংশের মধ্যে সায়েদির ওয়াজ নিয়ে অনেক জোকস প্রচলিত আছে। এদের পারসেপশন হচ্ছে যে, সায়েদীর ওয়াজ মহিলাদের ছতর ঢাকা এবং উড়না নিয়েই বেশি কনসার্নড (শহুরে মধ্যবিত্তের পারসেপশনের কথা বলছি মাত্র)। কিন্ত, সেই পারসেপসান যাই হোক বাস্তবতা হোল গ্রামে গঞ্জে সায়েদির ব্যাপক ব্যক্তিগত সমর্থন রয়েছে। সায়েদী কে চাঁদে দেখা নিয়ে যে গুজব হইছে তাতে অনেক জোকস হইছে বটে কিন্তু এতেও বোঝা যায়, সায়েদির পক্ষে একটা বিশাল অন্ধ সমর্থক গ্রুপ আছে- যারা সায়েদিকে একজন বড় ইস্লামিক আলেম হিসেবে জানে যে তাকে চাঁদে দেখা যেতে পারে এই গুজবেও তারা বিশ্বাস করে। এবং সবার মধ্যে এই সায়েদির বিচার প্রসেসেই এমন কত গুলো ইস্যু আসছে,যেই গুলো উত্তর কেও দেয় নাই। স্কাইপ এর আলাপ, সুখরঞ্জন বালিকে অপহরণ, ফাইনালি তারে ইন্ডিয়ার জেলে খুঁজে পাওয়া এবং আরো বেশ কিছু প্রস্ন আসছে যেই গুলোকে, শক্ত ভাবে ডিফেন্ড করতে আমি কোন নোট বা লেখা এখনও দেখিনাই। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর না দেয়াতে রায় এর বিরোধী দের আর্গুমেন্ট আরও শক্ত হইসে যে, এইটা বাংলাদেশের একজন প্রধান ইসলামিক আলেম সায়েদির বিরুদ্ধে এবং ইসলাম এর বিরুদ্ধে এই বিচার পরিচালনা করা হচ্ছে । ফলে সায়েদির মৃত্যুর পর যখন দেশ ব্যাপী বিক্ষোভ এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হইছে তখন এইটা বোঝা খুব মুশকিল হইছে এইটা কি জামাত শিবির এর বিচার বিরোধী তাণ্ডব নাকি, থাবা বাবার লেখায় বিক্ষুব্ধ মুসলমানদের ক্ষোভ নাকি সায়েদির পারসোনাল ফলোয়ারদের প্রতিবাদ। কিন্তু, আমাদের নিরপেক্ষ মেডিয়া সব কিছুরে –জামাত-শিবির, জামাত-শিবির , জামাত-শিবির জপ করে ক্রিটিকাল এনালিসিস করার কোনও জায়গা রাখে নাই।হেফাজত এর উত্থান
অনেকেও অবাক হইলেও, হেফাজত এর উত্থান অত্যন্ত স্বাভাবিক একটা ঘটনা। রাজনীতিতে শক্তির ধর্মই হইলো, এইটা পক্ষ বা আইডিয়লোজি যখন অনেক বেশি শক্তি অর্জন করতে থাকে তখন তাকে কাউন্টার করার জন্যে আর একটা পক্ষ বা আইডিয়লোজির জন্ম নেয় এবং একটা সময় দুইটা পক্ষ একটা স্থিতাবস্থায় পৌছায়। এইটা গেম থিওরি। আওয়ামী লিগ স্বীকার করেনা, কিন্তু বিগত তিন চার বছরে জামাত শিবিরকে টার্গেট করতে গিয়ে সরকার যেই ভাবে তাদের প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছিল (এবং যাতে পরে বেহাত শাহবাগও পার্টিসিপেট করছে )তাতে মুসলমান কালচারাল আইডেন্টিটিটা একটা মিনি থ্রেট এর মধ্যে ছিল। এইটা সাধারণ মুসলমানেরা ফীল করে নাই, কিন্তু গোঁড়া মৌলিক ইসলামী বিশ্বাসী লোকজন , স্পেশিয়ালি দাড়ি রাখে এই ধরনের লোকজন এই থ্রেট টা চরম ভাবে ফিল করছে। দারি থাকলেই মানুষকে প্রমান করতে হইছে সে জামাত না। এইটাই একটা থ্রেট। ফলে শাহবাগকে কেন্দ্র করে, তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালির কাউন্টার করতে ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীলতার উত্থান যে হবে, সেইটা ছিল দিনের আলোর মত পরিষ্কার। এবং হেফাজত শুধু মাত্র সময়ের সুযোগটা নিছে মাত্র। আমার মনে হইছে, এইটা যে কেও হতে পারতো। এইটা এমন কি আহলে সুন্নিয়াত ও হইতে পারত, এমনকি তাবলীগ জামাতও হতে পারতো । কিন্তু, ইন্টারেস্টিং বিষয় হইলো,পলিটিকাল ইসলাম বলে যেই কনসেপ্টটা আছে, হেফাজত সেইটা না। তাদের লিডারশীপ ,তাদের মাদ্রাসা শিক্ষা এবং মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে আসা ছাত্ররা, তাদের স্ট্রাকচার সব কিছু বলে তারা সামাজিক এনটিটি। এমনকি তাদের যেই ১৩ দফা দাবি যদি এনালাইজ করেন তাইলেও দেখবেন তাদের মূল দাবি সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। যেই দাবি নিয়ে তারা প্রায়, ১০০ বছর ধরে তারা সোসাইটিতে সুবিধা করতে না পেরে মার্জিনালাইজ হইছে –রাসুল (সাঃ) এর অপমান এর সুযোগ নিয়ে তারা সেই গুলো সামনে নিয়ে আসছে। এবং আমার ধারনা , হেফাজত আগামীতে যথেষ্ট শক্তিশালী হবে এবং যুদ্ধাপরাধ এর স্টিগমা ব্যতীত একটা মৌলবাদী দল যাদের মূল এজেন্ডা সোসিয়াল চেঞ্জ তাদেরকে প্রকৃত সেকুলার এবং ভণ্ড সেকুলার উভয় দল কিভাবে মোকাবেলা করে, সেইটা বাংলাদেশের রাজনীতির একটা বড় ইস্যু হবে আগামী বছর গুলোতে।৫ মে এর রহস্য
৫ মে হেফাজত এর উপর অপারেশন এই বছরের একটা বড় ঘটনা। সেই রাতে কত জন মারা গ্যাছে তা কখনোই বের হবেনা এবং সেইটা এখন ইস্যুও না ইস্যু হইলো আপনি কি বিশ্বাস করেন । কাহানী হইলো, সেই রাতে কত জন মারা গ্যেছে সেই বিষয়ে আপনি কি বিশ্বাস করেন তাতেই আপনার আইডিওলোজি বের হয়ে যায় । আপনি যদি বিশ্বাস করেন ০ জন মারা গ্যাছে তাইলে ঘোর আওয়ামী লিগার ৫ থেকে ২৫ মারা গ্যাছে তাইলে আপনি সফট আওয়ামী লিগার ২৫ থেকে ৭৫ মারা গ্যাছে তাইলে আপনি সুশীল ৭৫ থেকে ১৫০ মারা গ্যাছে তাইলে আপনি শুক্রবারি মুসলিম। ১৫০ থেকে ৫০০০০ মারা গ্যাছে তাইলে আপনি হেফাজত,জামাত বা তাদের সিম্পাথাইজার এখন উপরের হাইপথেসিস থেকে, আপনার নিজের পরিচয় জেনে নিন। :p লেখা বড় হচ্ছে, বাকি গুলো ছোট করবো।গোলাম আজম এর ফাঁসি না হওয়া
বাংলাদেশের বিগত এক বছরের সব চেয়ে ন্যক্কার জনক ঘটনা হইলো গোলাম আজম এর ফাঁসি না হওয়া। এই সেই গোলাম আজম যাকে ডিফ্যাকটো রাজাকার জেনে আমরা বড় হইলাম, যেই অবিসংবাদিত রাজাকার গুরু, যার পাকি বাহিনিকে সাপোর্ট দিয়ে প্রচুর পেপার কাটিং আছে –তাকেই ফাঁসি না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হইলো – আর এই টাই বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার- যা নিয়ে দেশ বিভক্ত হইতাছে ? শেম।কাদের মোল্লার ফাঁসি
অবশ্যই ২০১৩ সালের অন্যতম ঘটনা কাদের মোল্লার ফাঁসি। এই বিচারটাকে শেষ করার জন্যে অবশ্যই আওয়ামী লিগ কে থ্যাংকস দিতে হবে। আবার সম্পূর্ণ বিতর্ক মুক্ত ভাবে বিচার করার দায়ও আওয়ামী লিগকে নিতে হবে এবং এই বিচারকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করে সকল অন্যায় লুটপাট ঢেকে রাখার অপরাধে তাদেরকে অভিযুক্তও করতে হবে। কে কোনটা দেয় সেইটা এই বিভাজিত সংস্কৃতিতে তার রাজনৈতিক অবস্থান। সত্য এখন রিলেটিভ হয়ে গ্যাছে –যেইটা ঠিক নয় কিন্তু আজকের দুঃখজনক বাস্তবতা। তবুও, আমি বলব যারা বলেন এই বিচারে দায়মুক্তি হয়েছে তারা শহীদদের প্রতি সব চেয়ে বড় অবমাননা করেন। কারণ, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের দায় একটা বা কয় একটা রাজাকারে হয় না। বিচার অবশ্যই করতে হবে, প্রতিটা রাজাকার এর বিচার করতে হবে। কিন্তু, একটা রাজাকার এর ফাঁসিতে ৩০ লক্ষ শহীদের একজন এক সূচ্যগ্রের বেশি দায়মুক্তি হয় না। শহীদের রক্তের পূর্ণ দায়মুক্তি হয়, একটা ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রতা মুক্ত দেশ গড়াতে এবং সেইটা গড়তে আমাদের পুরো দেশকে সম্মিলিত হতে হবে । আদর্শিক ভাবে বিভাজিত রাষ্ট্র নিজের মধ্যে গৃহযুদ্ধ করে মরবে, কোন দায়মুক্তি হবেনা।হাসিনা-খালেদার ফোনালাপ
আমাদের দুই নেত্রী শুধু মাত্র সশস্ত্র বাহিনী দিবসে বছরে এক বার একজন আরেক জনের সাথে কথা বলেন। ফলে, সংলাপ উপলক্ষে দুই নেত্রীর আলাপ ছিল বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। এবং একটা অনগোয়িং আলচনার সময় পলিতিকাল এডভান্টেজ নিতে দুই পক্ষের আলাপ সেইটা প্রকাশ করে, আওয়ামী লিগ যদিও চরম নৈতিক দৈলিয়ত্ব প্রকাশ করেছে কিন্তু একটা জিনিস খুব ক্লিয়ার হইছে তা হইলো, তারা উভয়ের জনগণ এর অনুভূতি সম্পর্কে কোন বিকার নাই। তাদের আসল ইস্যু হইলো, ব্যক্তিগত প্রতিশোধ। তাদের দাবি ব্যক্তিগত , দেশের মানুষের চাওয়া, পাওয়া স্বপ্নের সাথে তাদের কোন কানেকশন নাই। তাদের আলাপ আমাদেরকে আবার জানায় দিছে, যা আমরা আগেই জানতাম- ইনারা, আমাদেরকে শাসন করার যোগ্য নয়।এরশাদ এর টুইস্ট
আমার কাছে বছরের আর একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হইলো, আওয়ামী লিগ এর নির্বাচনই পোর্টফলিওতে অংশ গ্রহণ করার কথা বলে, এরশাদ এর আবার ফিরে আসা। এইটা আওয়ামী লিগ এর নির্বাচনী প্লান সম্পূর্ণ ভেস্তে দিছে। নিলে, কিন্তু আওয়ামী লিগ মোটামুটি একটা প্লান করে আগায় গেছিল এবং তাদের পক্ষের লোক জন এর ড্রামিং এ দাড়ায় গেছিল যে নির্বাচনে বিএনপি না আসলেও সংবিধান রক্ষার জন্যে এই টা বৈধ। কিন্তু এরশাদ পেছনে ফিরে আসার কারণে, বেশ কিছু আসন খালি হয়ে যাওয়ার পরে, আওয়ামী লিগ আর একটাবড় ভুল করছে তা হলও ওরা ডিসিশন নিচে, আচ্ছা এরশাদ যখন আসতাছেনে তখন আমরা মেজরিটি নিয়ে ফেলি – এই চিন্তা করে তারা ১৫৪ সিট নিয়ে ফেলছে তাড়াহুড়া করে। এখন যেইটা হইছে এর ফলে, আওয়ামী লিগ এর নির্বাচন এর পুরো লেজিটিমেসি চলে গ্যেছে। এবং সম্পূর্ণ নৈতিকতা বিবর্জিত হওয়ার পরে এখন সবাই আওয়ামী লিগ কে পরিত্যাগ করছে, ভারত বাদে। সিভিল সোসাইটি সম্পূর্ণ ভাবে এখন আওয়ামী লিগ এর বিপক্ষে চলে গ্যছে। এখন আর যুদ্ধাপরাধ এর গান –কেও শুনতাছেনা –সবাই এখন বলতাছে সরকার মানুষের অধিকার কেড়ে নিছে। এই অবস্থায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করে আওয়ামী লিগ কত দিন টিকে থাকতে পারবে তা একটা বড় প্রশ্ন –যদিও তাদের কে দেখে মনে হইতাছে তারা পাত্তাও দিচ্ছেনা। কিন্তু, এই রকম স্বৈরাচারী আচরণ করে কেও আজীবন টিকে থাকতে পারেনা। আমার কাছে ফাইনাল প্রধান ঘটনাএত কিছুর পরেও একটা রাজনৈতিক বিকল্প না দাঁড়ানো
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আওয়ামী লিগ এখন এতটাই নৈতিকতা বিবর্জিত, প্রত্যাখ্যাত দল বিএনপি একন সাংগঠনিক ভাবে এত দুর্বল –এবং এই অবস্থায় কোন একটা পক্ষ নিজেদেরকে গুছিয়ে গণ-মানুষের সামনে আসতে পারলোনা। এটাই অবিশ্বাস্য ব্যাপার। ইন্ডিয়াতে কেজরীওয়াল দাঁড়িয়েছে। অথচ ইন্ডিয়ার থেকে বেশি পতিত ক্ষেত্র বাংলাদেশ। কিন্তু, এখনো মানুষের সামনে কোন ভাল অল্টারনেটিভ তো দাড়ায়নি এমনকি দাঁড়ানোর কোন লক্ষণ ও দেখা দিচ্ছেনা। এইটা আমার কাছে ২০১৩ সালের সব চেয়ে দুঃখজনক এবং সব চেয়ে বড় রাজনৈতিক ঘটনা। এইটা নিয়ে একটা বিশদ আলোচনার দাবি রাখে কিন্তু আজ না। আগামী বছর, আমাদের সবার জীবন শুভ হোক,সুন্দর হোক, সফল হোক এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র এই বিপর্যয় শীঘ্রই কাটিয়ে উঠুক। এই কামনায়। সবাইকে হাপি নিউ ইয়ার।
৪০ মিনিট আগে
৪৩ মিনিট আগে
৪৬ মিনিট আগে
ঢাকা পোষ্ট
| সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার
৪৭ মিনিট আগে
বিডি নিউজ ২৪
| হাতিয়া
৪৮ মিনিট আগে
৪৩ মিনিট আগে
৪৬ মিনিট আগে
ঢাকা পোষ্ট
| সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার
৪৭ মিনিট আগে
বিডি নিউজ ২৪
| হাতিয়া
৪৮ মিনিট আগে
ডেইলি স্টার
| চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন
৪৯ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ৩৩ মিনিট আগে
বিডি নিউজ ২৪
| সিলেট মেট্রোপলিটন
১ ঘণ্টা, ৪০ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ৪৮ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ৪৯ মিনিট আগে
১ ঘণ্টা, ৫১ মিনিট আগে