
ভাষা আন্দোলনের প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
‘একুশে ফেব্রুয়ারি ও আমি যেন একসূত্রে গাঁথা’
আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২০:২৪
(প্রিয়.কম) বাঙালি জাতির গৌরবগাঁথা দিন ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের রক্তে সেদিন রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন অনেকে। তাদেরই একজন ফজলে রাব্বি। ৬৬ বছর আগেকার সেই দিনের স্মৃতি এখনো তরতাজা তার কাছে। প্রিয়.কমকে জানিয়েছেন তার চুম্বক অংশ।
‘এখন যখন জীবনের পেছন দিকে ফিরে তাকাই, তখন দেখি একুশে ফেব্রুয়ারি এমন একটি দিন, যে দিনটি আমার জীবনে নানাভাবে মিশে আছে। এই দিনকে প্রত্যক্ষ করতে পেরেছিলাম। কারণ ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিক পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হতে পেরেছিলাম বলে।
এই অর্থে আমার জীবনের প্রথম মাইলফলক ১৯৫১ সাল। সে বছর নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিক পাস করলাম, আজকের দিনে যাকে বলে মাধ্যমিক পরীক্ষা। বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবার জ্যেষ্ঠ পুত্রকে নিয়ে অনেক কিছু আশা করে। আমাকে নিয়েও আমার বাবা-মার তেমনই অনেক স্বপ্ন ছিল। তাদের স্বপ্ন ছিল যে, আমি ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হবো।
সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সেকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সরকারি কলেজ ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার সঙ্গে ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়েছিল সে বছর ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম ১০০ জনের অধিকাংশ জন। তারা সকলেই ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়া তো বটেই, উপরন্তু মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া ছাত্র।
নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল থেকে আমরা ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলাম ৩০ জন। তার মধ্যে দুইজন প্রথম বিভাগে, ২৭ জন দ্বিতীয় বিভাগে এবং একজন তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। জোহা ও আবেদিন প্রথম বিভাগে পাস করায় ঢাকা কলেজে ভর্তি হতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
আমি, ওসমান ও আশরাফ দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেও ঢাকা কলেজে ভর্তি হতে পেরেছিলাম। কেউ প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে ক্লাস করতাম, আবার কেউ হোস্টেলে থাকতাম। আমি হোসেনী দালান রোডে নানাবাড়ি থাকতাম ও সেখান থেকে কলেজে আসা-যাওয়া করতাম। আর সে জন্য বাবা আমাকে একটা সাইকেল কিনে দিয়েছিলেন। সেকালে ঢাকা শহর সাইকেল চালানোর জন্য সবচেয়ে আনন্দদায়ক ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অধ্যাপক তখন সাইকেল চালাতেন।
দ্বিতীয় মাইলফলক বা স্মরণীয় ঘটনা একুশে ফেব্রুয়ারি। ঢাকা কলেজে প্রথম বর্ষে আইএসসি পড়ার সময় প্রত্যক্ষ করলাম বাংলাদেশের বা বাঙালির ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিন ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। সেদিন কি জানতাম এই দিনকে স্মরণ করতে করতে একদিন পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ হবে? সেদিন সকালে কলেজে যাওয়ার পর কে বা কারা আমাদেরকে বলল যে, দলবেঁধে বিশ্ববিদ্যালয় যেতে হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের কী একটা প্রতিবাদ সভা হবে! কী বিষয়, কিসের প্রতিবাদ, আমরা ভালো করে জানিও না। তবু সেদিন আমরা দল বেঁধে বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাম।
আমার নারায়ণগঞ্জের বন্ধু ওসমানও ছিল আমাদের সাথে। তারা হোস্টেল থেকেই দলবেঁধে এসেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মধুর ক্যান্টিনের সামনে ঘোরাফেরা করতে লাগলাম। সেখানে ধীরে ধীরে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ থেকে ছাত্ররা এসে জমায়েত হতে লাগল।
প্রথম প্রথম আমরা রাষ্ট্রভাষা নিয়ে তেমন কিছু ভেবেছিলাম বলে মনে হয় না। হুজুগের মতো হৈ হৈ রৈ রৈ করতে করতে চলে এসেছি। বিষয়টি বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক। তিনি বলছিলেন যে, সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা ঠিক হবে না। তিনি ঘুরে ঘুরে ধরে ধরে আমাদেরকে এটা বোঝাতে চেষ্টা করছিলেন। এর মধ্যে কে যেন বুঝে অথবা না বুঝে বলে উঠল, ‘না, আপনার কথা শুনব না।’
অমনি অনেকেই এক সঙ্গে বলে উঠল, ‘আপনার কথা শুনব না।’ তাদের মধ্যে ছিলেন গাজিউল হক। তিনি সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন ও আমাদের মধ্যে ছিলেন সিনিয়র। সবাই মিলে তাঁকে ঠেলেঠুলে আমতলায় একটা টেবিলের ওপর দাঁড় করিয়ে দিল। তিনি ঘোষণা করলেন যে, আমরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করব।
১৪৪ ধারা কীভাবে ভাঙ্গা হবে? একসঙ্গে ১০ জন জমায়েত করলেই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ হয়। তাই শুরু হলো ১০ জন করে এক এক দল গেট দিয়ে বের হওয়া। যেই তারা বের হলো, তখন পুলিশ তাদের ধরে ট্রাকে তুলে নিতে লাগল। তখন আমরা যারা ভেতরে ছিলাম, তারা বাইরে দাঁড়ানো পুলিশ ও তাদের উপরওয়ালা ডিসি মি. কোরেশীকে লক্ষ্য করে গালাগালি করতে লাগলাম। ডিসির নাম কোরেশী, এটা জানতাম। কারণ তিনি আগে নারায়নগঞ্জের এসডিও ছিলেন।
আমার সাথে ছিল সাইকেল। আমি সাইকেল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিলাম। দেখলাম পুলিশ আর কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে ওসমানকে ট্রাকে তুলে নিল। অর্থাৎ ওসমান গ্রেফতার হলো। আগেই বলেছি ওসমান আমার নারায়ণগঞ্জের বন্ধু ছিল। অন্য যারা গ্রেফতার হচ্ছিল, তারা তেমন পরিচিত ছিল না। এমনি করে দশজনের এক এক দলকে পুলিশ ট্রাকে তুলে নিচ্ছিল। তারপর ট্রাক ভরে গেলে তাদের নিয়ে চলে যাচ্ছিল।
কোথায় যাচ্ছিল জানতাম না। এদিকে কোন সময় আমরা পুলিশের দিকে ইট ছুড়তে আরম্ভ করেছিলাম, বুঝতেই পারিনি। হঠাৎ তারা টিয়ার গ্যাস মারতে আরম্ভ করল। সে কী ভীষণ চোখ জ্বলা! পানির জন্য ছুটলাম পুকুরের দিকে। চোখে পানি দিলে জ্বলাটা কিছু কমল। একবার দেখলাম কিছু ছাত্র এসএম হলের প্রভোস্টকে এনে দেখাচ্ছিল পুলিশ কীভাবে কাঁদানে গ্যাস মেরেছে। তারপর আমরা ছড়িয়ে পড়লাম চারিদিকে।
মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে যে দেয়াল ছিল, সেই দেয়াল কিছুটা ভেঙে টপকে মেডিকেল কলেজের দিকে চলে যেতে লাগল ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার আমতলা ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে গেল। ছাত্ররা জমায়েত হতে লাগল মেডিকেল কলেজের গেটের দিকে। আমার পক্ষে সাইকেল নিয়ে ভাঙা দেয়াল টপকে মেডিকেল কলেজের দিকে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
আমি আরও কিছু ছাত্রের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠের ধার দিয়ে মেডিকেল কলেজের গেটের বিপরীত দিকে পানির পাম্পের পেছনে দাঁড়িয়ে অবস্থা দেখতে লাগলাম। তখন প্রায় দুপুর। মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা জগন্নাথ হলের দিকে মাইক ফিট করে স্লোগান দিতে লাগল যাতে প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন থেকে ছাত্রদের দাবি শুনতে পায়। তখন জগন্নাথ হলটাই ছিল প্রাদেশিক আইন পরিষদ।
এদিকে গেটের ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ছাত্ররা ইট ছুড়ে মারছিল দেখলাম। কিছুক্ষণ ইট ছোড়াছুড়ির পর মনে হলো সব শান্ত হয়ে গেছে। যখন দুপুর, আমি সাইকেল নানাবাড়িতে রেখে স্টেশনের দিকে ছুটলাম নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার জন্য। তখন সুযোগ পেলেই নারায়ণগঞ্জে চলে যেতাম।
নারায়নগঞ্জে বাসায় গিয়ে দুপুরে খাবার খেয়ে বিকেলে বন্ধু ফায়জুরকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে রহমত উল্লাহ ইনিস্টিটিউটের নিকট গিয়ে দেখলাম, সেখানে একটা জনসভা হচ্ছে এবং আবুল হাশেম সাহেব বক্তৃৃতা দিচ্ছেন। হঠাৎ তিনি বলছেন, ‘এইমাত্র খবর এসেছে, ঢাকায় ছাত্রদের ওপর গুলি চলেছে।’ আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। ঠিক মনে পড়ছে না যে সেদিন, না পরদিন নারায়ণগঞ্জে আরম্ভ হলো প্রতিবাদ মিছিল। মনে আছে, মর্গান গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
বেশ কয়েক দিন স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। একদিন রাতে চারারগোপে কর্তব্যরত এক পুলিশকে কে বা কারা গুলি করে হত্যা করেছিল। তখন সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয়েছিল যে, ভারতীয়রা ভাষা আন্দোলনে ইন্ধন জোগাচ্ছে। তারই কারণে পুলিশ খুন হয়েছে।
সেকালে খান সাহেব ওসমান আলী সাহেবের বাড়িটাই ছিল নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে সুন্দর বাড়ি, আবার মুসলিম রাজনীতির সূতিকাগার। কলকাতা থেকে যে সকল মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ, বিশেষ করে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যখন ঢাকায় আসতেন, তারা স্টিমার থেকে নেমে প্রথমে খান সাহেবের বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে ঢাকায় যেতেন।
একুশে ফেব্রুয়ারির পর যখন ভাষা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ল, সারা দেশে তখন নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে উঠল এই বাড়ি। কারণ পুলিশের তাড়া খেয়ে ছাত্ররা এই বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছিল এবং তখন সেখান হতে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে খান সাহেবের মেজো ছেলে আমার বন্ধু মোস্তফা সরওয়ারও ছিল।
ওদিকে ঢাকাতেও আন্দোলন চলছিল। স্কুল-কলেজ কয়েকদিন বন্ধ ছিল। আমি সে কয়দিন নারায়ণগঞ্জেই ছিলাম। কলেজ খুললে ঢাকায় গিয়ে যথারীতি ক্লাস করতে লাগলাম। তখন ঢাকার বন্ধুদের নিকট হতে শুনলাম গত কয়েকদিন ঢাকায় কী ঘটেছে। মেডিকেল কলেজের গেটের নিকট ছোট-খাটো একটা শহীদ মিনার তৈরি করা হলেও পুলিশ সেটি ভেঙে ফেলেছিল।
পুলিশ ও আর্মি পরপর কয়দিন ঢাকা শহরে যেখানেই মিছিল ও জনসমাবেশ হয়েছে, সেখানেই চরম অত্যাচার করে তা দমন করেছে। বাহ্যত শান্ত হলেও ঢাকার উর্দুভাষী সরদাররাও ছাত্রদের পক্ষে চলে গিয়েছিল। কলেজে গিয়ে শুনতে পেরেছিলাম কাদের সরদার ও মাজেদ সরদারের নাম। তারা নাকি ছাত্রদের নানাভাবে সাহায্য করেছে।
ছাত্রদের মধ্যে খালেক নওয়াজ খান নামে একজনের নাম শোনা যাচ্ছিল। তিনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী জনাব নুরুল আমিনকে পরাজিত করে খ্যাতি অর্জন করেন। ছাত্রদের আন্দোলন থেমে গেলেও রাজনৈতিক আন্দোলন শেরে বাংলা ফজলুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে এগিয়ে চলল ও মুসলিম লীগের বিরোধী সকল দল একত্র হয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হলো।
যুক্তফ্রন্টের প্রতিশ্রুতি ছিল ২১টি। তারই নাম একুশ দফা কর্মসূচি। একুশ দফার অন্যতম দফা ছিল বর্ধমান হাউসকে প্রধান মন্ত্রীর বাসভবনের পরিবর্তে বাংলা ভাষার গবেষণাগারে পরিণত করা, আজ যা বাংলা একাডেমি।
১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগকে পরাজিত করে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করে শেরে বাংলা মুখ্যমন্ত্রী হন এবং শিক্ষামন্ত্রী হন সৈয়দ আজিজুল হক নান্না মিয়া। তিনি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেই প্রথম দিন সর্বপ্রথম বর্ধমান হাউসে বাংলা ভাষার গবেষণাগার তথা বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবসহ নথি চালু করলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে দেওয়ায় বাংলা একাডেমি আইন পাস করতে পারলেন না।
পরের বছর ১৯৫৫ সালে আবু হোসেন সরকার মূখ্যমন্ত্রী হন এবং ১৯৫৫ সালের জুন থেকে ১৯৫৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকেন। তার সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ছিল একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দান ও সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তি স্থাপন ও বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা।
একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে বর্ধমান হাউসে চিত্রগ্রাহক আমানুল হক কর্তৃক গৃহীত ‘আমার দেশ’ নামে বাংলাদেশের নানা প্রাকৃতিক দৃশ্যের এক চিত্র প্রদর্শনী হয়েছিল। তিনি ভাষা আন্দোলনেরও অনেক ছবি তুলেছিলেন। আমরা দলবেঁধে সেই প্রদর্শনী দেখতে গিয়েছিলাম। গর্বের সাথে প্রবেশ করেছিলাম প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন- বর্ধমান হাউসে। পরবর্তীকালে এই ভবনেই আমার জীবনের ১৮টি বছর কেটেছে। শুধু তাই নয়, ভাগ্যের কী অপূর্ব সিদ্ধান্ত-পরবর্তীকালে একুশের সাথে সম্পৃক্ত দুজন ব্যক্তিত্ব খালেক নওয়াজ খান ও সৈয়দ আজিজুল হক নান্না মিয়া পারিবারিকভাবে আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ে পরিণত হয়েছিলেন এবং প্রবাস-জীবন আরম্ভ হওয়ার পূর্বে ঢাকার জীবনের শেষ সাড়ে ছয় বছর কেটেছে ১৪ নম্বর পূর্ব তেজতুরি বাজারে অবস্থিত গাছ-গাছালিতে পরিপূর্ণ নান্না মিয়ার বাড়ির চার তলায়।
একুশে ফেব্রুয়ারি, ২১ দফা, খালেক নওয়াজ, সৈয়দ আজিজুল হক, ওসমান, মোস্তফা সরওয়ার, বাংলা একাডেমি এবং আমি যেন একসূত্রে গাঁথা।’
লেখক: বাংলা একাডেমি এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক, প্রবীণতম গ্রন্থ ও গ্রন্থাগার বিশেষজ্ঞ