
একটি সুন্দর সমুদ্র ভ্রমণ বিভীষিকাময় হয়ে উঠতে পারে বিপদ সংকেত না জানলে। ছবি: সংগৃহীত
জানেন কি কোন বিপদ সংকেতে বিপদ কত?
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১০:২২
(প্রিয়.কম) মাত্র কিছু দিন আগেই সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে গিয়ে খারাপ আবহাওয়ার দরুণ আটকা পড়লেন প্রায় ৬০০ জনের চেয়েও বেশি পর্যটক। কিন্তু আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ৩ নং স্থানীয় বিপদ সংকেত দেওয়ার ২ দিন আগে থেকেই এই ধরণের গভীর সমুদ্র ভ্রমণে সতর্কতা স্বরূপ ১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখানো হচ্ছিল। তারপরও এই বিপর্যয়ের কারণ হলো আমরা আসলে এই সতর্কতা সংকেতগুলো খেয়াল করি না। আর সতর্কতা সংকেতগুলো আমাদের চোখ এড়িয়ে যাওয়ার কারণ হলো আমরা আসলে এগুলোর মানে জানি না। তাই নিজেদের ভ্রমণকে নিরাপদ করতে চলুন জেনে নিই সমুদ্র বন্দরসমূহের বিপদ সংকেতের কোনটির কী মানে!
১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত: জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। দূরবর্তী ঝড়ো হাওয়াটি সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।
২ নং দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত: দূরে গভীর সমুদ্রে ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।
৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত: বন্দর ও বন্দরে নোঙ্গর করা জাহাজগুলো দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণায়মান বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার থেকে শুরু করে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
৪ নং স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত: বন্দর এখন ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় একটানা ৫১ কিলোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ৬১ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এখনো ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো বিপজ্জনক সময় হয়নি।
৫ নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট থেকে মাঝারি মাত্রার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত হতে পারে। ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় একটানা ৬২ কিলোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৬ নং বিপদ সংকেত: ৫ নং বিপদ সংকেতের মতো এই ক্ষেত্রেও বন্দর ছোট থেকে মাঝারি মাত্রার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত হতে পারে। ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ও একই থাকবে কেবল ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৭ নং বিপদ সংকেত: এই ক্ষেত্রে ৬ নং বিপদ সংকেতের অন্যান্য সকল বিষয় অপরিবর্তিত থেকে শুধু ঝড়ের দিক পরিবর্তন হবে। ঝড়টি বন্দরের উপর দিয়ে অথবা বন্দরের খুব কাছ থেকে উপকূল অতিক্রম করবে।
৮ নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড ও তীব্র মাত্রার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত হতে পারে। ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় একটানা ৮৯ কিলোমিটার থেকে শুরু করে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রচণ্ড মাত্রার এই ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৯ নং মহাবিপদ সংকেত: এই ক্ষেত্রে ৮ নং মহাবিপদ সংকেতের অন্যান্য সকল বিষয় অপরিবর্তিত থেকে শুধু ঝড়ের দিক পরিবর্তন হবে। এই ক্ষেত্রে প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
১০ নং মহাবিপদ সংকেত: এই মহাবিপদ সংকেতে ৯ নং বিপদ সংকেতের সকল বিষয় অপরিবর্তিত থাকবে কেবল প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর দিয়ে অথবা বন্দরেরে খুব কাছ থেকে উপকূল অতিক্রম করবে।
১১ নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত: ঘূর্ণিঝড়ের দরুণ আবহাওয়া বিভাগের বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তা আবহাওয়া অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।
১ নং বিপদ সংকেত শুনে আপনি হয়ত ভাবছেন, এ আর এমন কি! কিন্তু দেখলেন তো বিষয়টি মোটেও হেলাফেলার নয়? তাই দূরবর্তী যাত্রায় আগেই আবহাওয়ার খোঁজ নিন। আপনি গন্তব্যে পৌঁছানোর পরও বিপদ শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতির ভয়াবহতার জ্ঞান আপনার জানমাল রক্ষায় সহায়ক হবে। নিরাপদ হোক আপনার ভ্রমণ।
সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান
প্রিয় ট্রাভেল সম্পর্কে আমাদের লেখা পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে। যে কোনো তথ্য জানতে মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। ভ্রমণ বিষয়ক আপনার যেকোনো লেখা পাঠাতে ক্লিক করুন এই লিংকে - https://www.priyo.com/post।
- ট্যাগ:
- ভ্রমণ
- সতর্কতা
- নিরাপত্তা
- বিপদ সংকেত