
প্রতীকী ছবিটি সংগৃহীত।
বাংলাদেশের একাদশ বৃক্ষপ্রেমী
আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭, ১৬:৩৮
(প্রিয়.কম) আজ ৫ জুন, আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছেন বেশ কজন বৃক্ষপ্রেমীক। কেউ কেউ সেই প্রেমকে নিয়ে গিয়েছেন শুদ্ধ পাগলামীর উচ্চতায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে নিভৃতে থাকা সে সকল বৃক্ষপ্রেমীকদের থেকে মাত্র ১১ জনকে নিয়ে আজ রচিত হলো ‘প্রিয়.কম’ এর বাংলাদেশ বৃক্ষপ্রেমীক একাদশ।
কাজী হাসান। ছবি: সংগৃহীত।
কাজী হাসান: সাহিত্যকর্মী ও প্রকাশক কাজী হাসান। বৃক্ষের সঙ্গে তার প্রেম দীর্ঘদিনের। স্বপ্ন ছিল নিজের একটি বাগান করার। সেই স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দেয় ২০১২ সালের ২৩ জুন। একটি কাঠবাদাম গাছ রোপণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তার বাগানের অনানুষ্ঠানিক যাত্রা। ঢাকার অদূরে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ভবেরচরে প্রায় ১৯ কাঠার জমির ওপর তার বাগান অবস্থিত। বাগানের নাম ‘সোনারং তরুছায়া’। পাঁচ বছর ধরে সেই বাগানের গাছেদের সঙ্গে তার সখ্যতা। বৃক্ষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ নিয়ে গড়ে তুলেছেন ‘শাইখ সিরাজ ফার্মার্স ক্লাব’। গত সপ্তাহে ব্যস্ত ছিলেন ‘জাতীয় ফুল শাপলা বাঁচাই শাপলায় সাজাই’ নামক একটি উদ্যোগ নিয়ে। বরেণ্য ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে ‘স্মারক বৃক্ষ’ও রোপণ করে থাকেন তিনি। ‘গাছ ভাই’ নামে পরিচিত এই বৃক্ষপ্রেমী ব্যক্তি কাজী হাসান। ‘প্রিয়.কম’এ দেওয়া তাঁর ইন্টার্ভিউ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
এস এম জুয়েল। ছবি: সংগৃহীত।
বৃক্ষপ্রেমী জুয়েল: পুরো নাম ‘এস এম জুয়েল’। তাঁর বাগানে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছসহ বিরল প্রজাতির প্রায় দুই হাজার গাছ রয়েছে। নওগাঁ সদরের নতুন সাহাপুর গ্রামে ২০০৫ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে তিনি গড়ে তোলেন একটি বাগান। পাশাপাশি গড়ে তোলেন ‘আমরা প্রত্যেকে কাজ শিখি’ নামে একটি সংগঠন। শুরুতে প্রায় ৫০০ প্রজাতির দেশি-বিদেশি গাছের চারা রোপণ করেছিলেন এবং শোভা বর্ধনকারী, বিলুপ্ত প্রায় এবং দুর্লভ প্রজাতির গাছগুলো সংগ্রহ করেছিলেন। ২০১৩ সালে ঢাকায় আরডিএ কৃষি প্রদর্শনীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পুরস্কার পান। বর্তমানে জুয়েলের বাগানের পরিচিতি এতটাই উপরে উঠেছে যে- দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সৌদি আরব, কুয়েতসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাম ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর ও তাঁর বাগানের। তাঁর বাগানের উল্লেখযোগ্য গাছের মধ্যে রয়েছে- হিজল, তমাল, নাগ লিংগম, বৈচি, দুর্লভ সাদা পলাশ, কুসুম, সুন্দরী, শাল, স্বর্ণচাঁপা ঝুমুর, অর্কিড- ক্যালেলিয়া, ব্লুভেন্ডা, গেন্ডিরিয়া, অনচেডিয়া, হয়া, লিপিস্টিক, শোভা বর্ধনকারী পামভারাইটি, জিনিয়া পাম্প, সাইপিয়াম পাম্প, সাইকাস পাম্প, ফসটেল পাম্প, সিপরথিয়া, আলেকজান্ডার, ক্যাকটাস জাতীয় গোল্ডেন ব্যারেল, ম্যাকপাড়, লেলিন গোসাইসহ জানা অজানা আরও অনেক গাছ। এছাড়াও প্রায় ২৫০ প্রজাতির ফুল গাছ রয়েছে তাঁর বাগানে। ফুলগাছও রয়ছে অনেক; যেমন- ফুল জার্বল, পলাশ, কাঞ্চন, সোনালু, চেরি, রঙ্গন, জবা, টগর, আলমন্ডা, বায়া, মৌচাণ্ডাল, কনকচাঁপা, হাসনা হেনা, শিউলি, বেলী, গন্ধরাজ, ফুল জাতীয় গাছ গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ৫০ প্রজাতির গোলাপের জাত। যার মধ্যে অন্যতম জাতগুলো কালো গোলাপ, মিনুপাল, গাড্ডা, টাটা। মসলা গাছও বাদ পড়েনি। অলস্পাইস, তেসপাতা, দারুচিনি, এলাচি, লবঙ্গ, কারিপাতা গাছসহ আরও নানা প্রকার গাছের সমারহ তাঁর বাগানে।
গাছ মির্জা। ছবি: সংগৃহীত।
গাছ মির্জা: তিনি পুলিশ বাহিনীতে কর্তব্যরত ছিলেন। লুকনোর কিছু নেই, আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনীর উপর দেশের মানুষের এক ধরনের ক্ষোভ রয়েছে। এর মানে এই নয় যে পুলিশ মানেই নেতিবাচক কোনো চরিত্রের মানুষ। পুলিশের মধ্যেও অনেক ভালো মানুষ রয়েছেন। তেমনি একজন হচ্ছেন বৃক্ষ প্রেমী মির্জা। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ঘুরে চাকরির পাশাপাশি বৃক্ষ রোপণ করেছেন। বেশ কিছু এলাকাতে তিনি ‘গাছমির্জা’ নামে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি বিগত ২০১০ সালে বাগমারা র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে নিজ উদ্যোগে ক্যাম্পের ভেতর আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জলপাইসহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজের প্রায় আড়াইশ চারা রোপণ করেছিলেন। গাছগুলো এখন বড় হয়েছে। এর আগে তিনি বাগমারা থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন- থানা চত্বর, থানার সামনে সরকারি রাস্তা, বাগমারার মোহনগঞ্জ রাস্তা, মোহনগঞ্জ হাফেজিয়া মাদ্রাসা, বাগমারা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় চত্বর, রাজশাহী পুলিশ লাইন, আরআরএফ লাইন, পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বাসভবন চত্বরে বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ ও ঔষধিসহ প্রায় এক হাজার বৃক্ষ রোপণ করেছেন নিজ উদ্যোগেই। তিনি শুধু বৃক্ষ রোপণ করেই থেমে থাকেননি, সঠিকভাবে পরিচর্যা করে ওসব বৃক্ষ বেড়ে ওঠার ব্যবস্থাও করেছেন। বৃক্ষ রোপণে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ১৯৯৬ সালে কুড়িগ্রাম বনায়ন সমিতি, ২০০৪ সালে নওগাঁ বনায়ন সমিতি, ২০০৬ সালে পুলিশ সুপার নওগাঁ, ২০০৭ সালে বাগমারা বনায়ন ও নার্সারি সমিতি এবং বাগমারা উপজেলা পরিষদ, গনিপুর ইউনিয়ন পরিষদ, পুলিশ সুপার রাজশাহী এবং বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ অনেকে সনদপত্র প্রদান করেছেন।
এম এ মতিন। ছবি: সংগৃহীত।
ভ্রাম্যমাণ বৃক্ষপ্রেমী এম এ মতিন: মাথায় টুপি পরতে দেখেছেন, হেলমেট পরতেও দেখেছেন। কিন্তু মাথায় টব পরে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন কাউকে? আর যদি সেই টবের উপর রোপিত থাকে একটি ফুলগাছ, তাহলে তো লোকের চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম হয়। সেই কাজটিই করেছেন এম এ মতিন। তাঁর মাথায় স্থাপিত টবে লেখা আছে- ‘গাছ লাগাবো খেদমতের নিয়তে। লাগাবো ১২ মাস। পরিচর্যা করবো ৩৬৫ দিন’। এম এ মতিন বলেন-‘গাছ আমাদের জীবন বাঁচায়। তাই পরিবেশ সচেতনতার এর বিকল্প নেই’। শহর এলাকায় মানুষকে ছাদে বাগান করার জন্যও উদ্বুদ্ধ করে থাকেন তিনি। এ বিষয়ে মানুষকে বলবার জন্য তার স্লোগান হচ্ছে ‘ছাদে বাগান বানাবো ধাপে ধাপে, গাছ লাগাবো ষোল কোটি মানুষের খেদমতে।’
আজিজুল হক। ছবি: সংগৃহীত।
বৃক্ষপ্রেমী আজিজুল হক: মেহেরপুরের একজন বৃক্ষপ্রেমী আজিজুল হক মাস্টার। সারাজীবন গাছের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন তিনি। তার স্বপ্ন গাছ। গাছের পরিচর্যাই তার ভালোবাসা। শোনা গিয়েছে- গাছের সঙ্গে মাঝে মাঝে একাকী কথা বলেন তিনি। মেহেরপুরবাসীরা জানিয়েছেন- প্রতিদিন মাথায় করে পানি বয়ে এনে গাছের গোড়ায় ঢালেন আজিজুল হক। পানি ঢালার সময় তিনি বলেন, ‘আজ এটুকু খাও, সুযোগ পেলে কালকে আবার পানি খাওয়াবো’। তিনি বিনা পারিশ্রমিকে গাংনী হল পাড়া থেকে গাড়াডোব পোড়াপাড়া পর্যন্ত এলাকায় ব্যক্তি মালিকানা বাগান ও রাস্তার ধারে সরকারি গাছ প্রতিদিন পরিচর্যা করেন, গাছকে আগাছামুক্ত করেন, গোড়ায় পানি ঢালেন এবং কোনো ডাল ভেঙে গেলে সেটা জুড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
বৃক্ষপ্রেমী সাইদুর। ছবি: সংগৃহীত।
বৃক্ষপ্রেমী সাইদুর: নার্সারী করে আর্থিকভাবে সফল হয়েছেন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান। তার নার্সারিতে রয়েছে প্রায় ২৫ প্রজাতির ফলের গাছ। বর্তমানে নার্সারী থেকে তার বার্ষিক আয় হচ্ছে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মতো। সাইদুরের এই নার্সারি দেখে মদনেরপাড়াসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামে অর্ধশতাধিক নার্সারি গড়ে উঠেছে। ফুলছড়ি উপজেলা হেডকোয়ার্টার থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের গাইবান্ধা-বালাসীঘাট সড়কের পাশে মদনেরপাড়া গ্রামটি ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে অবস্থিত। নদীভাঙ্গনের কারণে এ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। এই বাস্তবতায় সাইদুর রহমান কোনো কাজ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। চাকরির বয়সও অনেকদিন আগে শেষ হয়েছে। বিয়ে করার পর তিনি আরও কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হন। তার কোনো পৈতৃক সম্পত্তি ছিল না বললেই চলে। তিনি ১৯৯৮ সালে চাকরির খোঁজে গাজীপুর জেলার কাশিমপুরে যান। চাকরি নামের সোনার হরিণের সন্ধান না হওয়ায় তিনি হতাশার মধ্যে পড়েন। সেখানে বিএডিসির একটি নার্সারি দেখে তার নার্সারি করার শখ জাগে। নিজ গ্রামে এসে বসতবাড়ির পাশে ১০ শতক জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগাতে শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে বর্তমানে দুই বিঘা জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন নার্সারী। নাম দিয়েছেন ‘সুরভী নার্সারী’। এ নার্সারীতে জলপাই, লিচু, বরই, কাঁঠাল, আম, পেয়ারা, লেবু, জাম, আখ, মরিচ, বিভিন্ন জাতের ফুল ও ওষধি গাছ পাথরকুচি, তুলসি চারা উৎপাদন শুরু করেন। এসব চারা বিক্রি করে তার মাসিক আয় হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো। তিনি বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা নার্সারী মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। তাকে এখন নার্সারী সাইদুর নামেই সবাই চেনেন। গাইবান্ধা, রংপুর, বগুড়া ও জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে তার নার্সারী থেকে কলম জাতের গাছের চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এখন তার বার্ষিক আয় ৮০ থেকে ১ লাখ টাকা। তিনি জানান, তার এই দুই বিঘা জমির নার্সারীতে বার্ষিক ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সে হিসেবে ব্যয় বাদে তার আয় থাকছে ৮০ হাজার টাকা। নার্সারীর আয় দিয়ে তিনি তার তিন ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগানসহ সংসারের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছেন। বড় ছেলে আলিফ সেনাবাহিনীতে চাকরি করছেন। মেজ ছেলে আতিকুর রহমান দশম শ্রেণি পর্যন্ত ও ছোট মেয়ে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। সাইদুর রহমান জানান, নার্সারী ব্যবসা করে লাভবান হওয়াই বড় কথা নয়। তিনি নার্সারী ব্যবসায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এটা শুরু করেছেন। তিনি তার নার্সারীকে দেশের মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চান। পাশাপাশি এ উপজেলায় কমপক্ষে শতাধিক নার্সারী তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এ জন্য দিনরাত খেটে যাচ্ছেন তিনি। এ বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাহাজুল ইসলাম বলেন, ‘সাইদুরের নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের হাজার দশেক গাছ রয়েছে। তার দেখাদেখি উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক নার্সারী বাগান গড়ে উঠেছে।’
ফারুকী নাজনীন। ছবি: সংগৃহীত।
বৃক্ষপ্রেমী নারী ফারুকী নাজনীন: ‘গাছের ক্ষুধা আমার মেটে না তাই গাছ লাগাই’। গাছ সম্পর্কে এমন মন্তব্যই করেন সাতক্ষীরা বিসিক শিল্প নগরীর কর্মকর্তা বৃক্ষপ্রেমী নারী ফারুকী নাজনীন। থাইল্যান্ড, ব্যাংকক, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, বেলজিয়াম,প্যারিস, লন্ডন, ভারতসহ দেশীয় জাতের ৪৫০ প্রজাতির গাছের কালেকশান আছে তাঁর কাছে। বিদেশী রয়েছে ৪০% আর দেশি প্রজাতের গাছ ৬০%। গাছগুলোর মধ্যে হাইডেনজে, এনথুরিয়াম, ইউফোরবিয়া,পরকি, ক্যাকটাস, সাকুলেন্ড, অরকিড, অটার লিলি, ড্রাগন ডিসেট, ট্যাংক পল ইত্যাদি রয়েছে। বাড়ির ছাদে বৃক্ষ রোপণ করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০০৭ সালে পেয়েছেন জাতীয় পর্যায়ের স্বীকৃতি।
শাহজাহান বিশ্বাস। ছবি: সংগৃহীত।
শাহজাহান বিশ্বাস: পরিবেশ রক্ষায় রাস্তার দুপাশে ৩৭ বছর ধরে গাছ রোপন করছেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বসবাসকারী শাহজাহান বিশ্বাস। এ যাবত তাঁর রোপিত গাছের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। ঝিটকার কৌড়ি এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও মসজিদসহ রাস্তার দুপাশে বিভিন্ন প্রকারের গাছ রোপন করছেন এই বৃক্ষপ্রেমী। গাছের প্রতি তাঁর এই মমত্ববোধের কারণে তিনি তাঁর নিজ এলাকায় ‘গাছ শাহজাহান’ নামেও পরিচিত।
আমজাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত।
বৃক্ষপ্রেমী আমজাদ হোসেন: বিভিন্ন জাতের ফল গাছের চারা কেনা, রোপন করা এবং পরিচর্যার মধ্যে দিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বৃক্ষপ্রেমী আমজাদ হোসেন। তিনি তার বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে বিভিন্ন গাছ ও গাছের চারা রোপণ করেছেন এবং পরিচর্যা করছেন। গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতীয় আখ, বেদেনা, মালটা সহ আরও অনেক গাছের চারা। এসব চারা গাছের পাশাপাশি বছর সাতেক আগে তিনি সৌদি খেজুরের বীজের চারা রোপন করেছিলেন। সেই বীজ থেকে চারা তৈরি করে পুনরায় ৫০ টি চারা রোপন করেছেন তিনি। তন্মধ্যে ২১টি গাছ স্থায়ী হয়ে বড় হয়েছে। ৫টি খেজুর গাছে খেজুরও ধরেছে।
আশ্বাব আলী। ছবি: সংগৃহীত।
আশ্বাব আলী: আম বাগান তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্নি গ্রামের আশ্বাব আলী। সারাদিনই গাছের পরিচর্যা করে সময় কাটান তিনি। ধানও সবজি চাষের পাশাপাশি দুই একর জমিতে আমের বাগান করেছেন আশ্বাব আলী। তার বাগানে আম্রপালি, হিমসাগর, ফজলি, লেংড়াসহ নানা প্রজাতির আমগাছ রয়েছে। এছাড়াও- জাম, নারকেল, সুপারিসহ প্রায় সব ধরনের ফলের গাছ রয়েছে তার বাড়িতে। কৃষি অফিস থেকে তার আম বাগানের পরিচর্যার ব্যাপারে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন। ছবি: সংগৃহীত।
বৃক্ষপ্রেমী ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন: মেহেরপুরের চিতলায় দেশী বিদেশী ১৬১ প্রজাতির গাছ লাগিয়েছেন বৃক্ষপ্রেমী ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন। প্রায় ৬ একর জমির উপর ফল-ফুল ও ঔষধিসহ নানা জাতের গাছ লাগিয়ে ২১ বছর যাবত লালন পালন করছেন তিনি। তাঁর বাগানে গেলে দেখা যায়- ইরানি বেল, চেরি ফল, আম গাছ, লাল জামরুল, মিষ্টি তেতুল, ষ্টার আপেল, সৌদি ক্ষীর খেজুর, চায়না-৩ লিচু, চায়না মালটাসহ- জিরা, তেজ পাতা, কাঠ মসলা, পান মসলা এবং বিচিত্র রকমের বাহারি গাছ।
সম্পাদনা: গোরা