দেশ ট্রাভেলস শুরুতে ভাল করলেও এখন তারা যাত্রী সেবার বিষয়ে অমনোযোগী বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত।

দেশ ট্রাভেলস এর অব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের ভোগান্তি!!!

খন্দকার ইশতিয়াক মাহমুদ
লেখক
প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০১৭, ২৩:৪৬
আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭, ২৩:৪৬

(প্রিয়.কম): দেশের বিভিন্ন বাস সার্ভিস নিয়ে মানুষের ভোগান্তি কম নয়। তবে তার মাঝেও কিছু কিছু বাস সার্ভিস প্রোভাইডার মানুষকে বাধ্য করে সেটা নিয়ে কথা তুলতে। সম্প্রতি দেশ ট্রাভেলস নিয়ে এরকম একটি অভিযোগ উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। বাংলাদেশের ভ্রমণেচ্ছুদের অত্যন্ত প্রিয় ফেসবুক গ্রুপ ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ এ এই বিষয়টি নিয়ে এখন চলছে মতামত আদান প্রদান।
 
রবিউল রুবেল প্রতীক নিচের অভিযোগটি প্রকাশ করেন ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ এ।
 
"গত পাঁচ মাসে ৩ বার প্রতারিত হয়েছি। বাসে পরিমাণ মত যাত্রী না পেলে তাদের পরবর্তী অন্যকোন বাসে তুলে দেয় তারা। বলে, 'টেকনিকাল' প্রবলেমের কারণে আপনার বাসের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এটা তারা জানায় যাত্রার ৩০-৪৫ মিনিট আগে। এতে তাদের দেওয়া পরবর্তী বাসের পেছনের সিট ছাড়া অন্যকোন গতি থাকেনা। অন্যদিকে এটা নিয়ে কাউন্টারে কিছু বললে বলে সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলুন। সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বললে বলে কাউন্টারে কথা বলুন। এভাবেই চলছে তাদের লোক ঠকানো ব্যবসা।
 
রুট: ঢাকা-রাজশাহী এবং রাজশাহী-ঢাকা
 
আর কি কেউ এই সমস্যায় পড়েছেন?
আইনি ব্যবস্থা কিভাবে নেয়া যায় কেউ কি বলতে পারবেন?"
 
তিনি এই পোস্ট করার পরে অন্যান্য অনেকেই তার লেখায় নিজেদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে থাকেন।
 
মামুন হাসান, অন্তরা লাবিবা প্রত্যাশা, আবদুল গাফফার প্রমুখ অনেকেই জানান যে তারাও একই রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন দেশ ট্রাভেলস এর পক্ষ থেকে।
 
কামরুল শান্ত বলেন, " হ্যাঁ!! আমি ভুক্তভোগী। 01.01.17 দুপুর 12/12:30 এ আমার টিকেট কাটা ছিল দেশ এর। বাসে উঠতে এসে দেখি ওদের কোন গাড়ি নেই। পরে রয়াল এর একদম পেছনের সিটে বসে আসতে হয়েছিল, যদিও দেশ ট্রাভেলস এর টিকেটে আমার সিট ছিল সামনে। "
 
জয়নুল আবেদীন জানান, "আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় গত মাসে অনুরূপ সমস্যার সম্মুখীন হই।"
 
বিভিন্ন মানুষ এর কাছ থেকে বিভিন্ন মন্তব্য পাবার পরে অবশেষে নেফারতিতি নিপা আফরোজ তাকে সমাধান দিতে সক্ষম হলেন। তিনি বলেন,
 
" ভাইয়া দেশ ট্রাভেলস ঢাকা-রাজশাহী রুটে ভাল সার্ভিস দিয়েই কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুট চালু করেছে এবং সেখানেও ভাল সার্ভিস দিয়ে চট্টগ্রাম-রাজশাহী রুট এবং এরপর চট্টগ্রাম-বেনাপোল এমনকি কোলকাতা রুটও চালু করেছে।
 
সার্ভিস বলতে দেশ ট্রাভেলসকেই যখন চোখ বুজে যাত্রীদের বেছে নেয়াটা অভ্যাসে পরিণত হচ্ছিল ঠিক তখনই তাদের কেমন যেনো লাগামছাড়া একটা ভাব দেখা দিল যাত্রীদের প্রতি! এভাবে তো আর বিজনেস ধরে রাখতে পারবেনা... তাদের হাতে থাকা ঢাকা-রাজশাহী রুটের যাত্রীরা এখন তুহিন এলিটকে বেছে নিচ্ছে, তুহিন আরও ভাল সার্ভিস দিচ্ছে বলে। এই রুটের একসময়কার একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারকারী ন্যাশনাল ট্রাভেলস ঠিক এই বাজে সার্ভিসের কারণেই আজ অনেক পিছিয়ে আছে।
 
ভাল সার্ভিস দেয়া তুহিন এলিট কিংবা গ্রামীণ ট্রাভেলসের যুগে দেশ ট্রাভেলস এমন করলে ন্যাশনালের মতোই ভাগ্যবরণ করতে হবে তাদের।
 
আর আমিও পরিবহন সেক্টর থেকে কোনোরূপ সার্ভিস আশা করিনা তাদের এমন নিত্যনৈমিত্তিক স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তবে নিজের পছন্দসই সিটে টিকিট কাটার পরেও যদি অন্য বাসের পেছনের সিটে ঝাঁকি খাওয়ার জন্য তুলে দেয় তবে তা আমি অবশ্যই মেনে নিতে পারবনা।"
 
এ ব্যাপারে আপনি আইনি পদক্ষেপ নিতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অফিসিয়াল মেইল [email protected] বা [email protected] এড্রেসে আপনার পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ই-মেইল এবং পেশা উল্লেখ করে টিকিটের কপি সেন্ড করে দিতে পারেন অভিযোগ জানিয়ে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে যে অন্য বাসের পেছনের সিটে তুলে দেয়া হয়েছে তারও একটি প্রমাণ লাগবে। এখন কথা হচ্ছে অন্য বাসের যে সিটে আপনাকে তুলে দেয়া হল তার জন্য নতুন করে একটি টিকিটে সিট নাম্বার চিহ্নিত করে দেয়ার কথা কাউন্টার থেকে... তা কি আপনাকে দেয়া হয়েছিল? দেয়া হয়ে থাকলে প্রথম টিকিট ও পরের টিকিটের কপি সেন্ড করে দিন। আর যদি তা আপনাকে না দেয়া হয় তবুও কেবল প্রথম টিকিটের কপির সাথে অভিযোগ জানান।
 
আপনাকে অবশ্যই ঘটনার ৩০ দিনের মাঝে অভিযোগ করতে হবে। তাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ https://www.facebook.com/dncrp/ ও ওয়েবসাইট
www.dncrp.gov.bd ”
 
শুধু একজনই নয়, এভাবে বাকি ভুক্তভোগীরাও যদি নিয়মিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিযোগ করেন, তাহলে এগুলো নিয়ে সমাধান হতে পারে। ভোক্তা অধিকার আইনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে যাত্রী হয়রানি ও বাজে সেবা দেয়ার কারণে।
 
সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান।
আপনাদের মতামত জানাতে ই-মেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়।