
রাজধানীর বহুতল ভবন। ছবি: সংগৃহীত
যেভাবে করবেন বাড়ি ভাড়া চুক্তি
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৩২
(প্রিয়.কম) কাজের তাগিদে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত ঢাকামুখী হচ্ছেন মানুষ। পৌনে দুই কোটি মানুষের বসবাস ব্যস্ত এ নগরীতে। এ কারণে আবাসন সংকট চরমে। এই সুযোগে অনেক সময়ই বাড়ির মালিকরা আইন অমান্য করে ভাড়া বাড়িয়ে দেন। এর সম্ভাব্য প্রতিকার হতে পারে বাড়ি ভাড়া নিয়ে ভাড়াটিয়া-মালিক চুক্তি।
বাড়ি ভাড়া চুক্তি করবেন যেভাবে
রাজধানীর প্রত্যেকটি এলাকাতেই বাড়ির ভাড়া নিয়ন্ত্রণে একটি কমিটি আছে। সেই কমিটি বাড়ি ভাড়ার বিষয়টি দেখভাল করে। এরপরও অনেক সময়ই মালিকপক্ষ বিনা নোটিশে ভাড়া বাড়িয়ে দেন, যেটি বেআইনি। এ থেকে আইনি সুরক্ষা পেতে করা যেতে পারে চুক্তি। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে সেই চুক্তি করতে হয়। এর একটি নমুনা নিম্নে দেওয়া হলো।
‘জনাব মনির মিয়া, পিতা: মরহুম আব্বাস আলী। বাড়ি নং- ২৩, রোড-২৮, সেক্টর-৭, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০, পেশা ব্যবসা, ধর্ম ইসলাম, জাতীয়তাবাদ-বাংলাদেশি।……… প্রথম পক্ষ।
আমিনুল ইসলাম, পিতা তৈয়ব আলী, গ্রাম ও ডাকঘর: খোকশাবাড়ি, থানা-জেলা: সিরাজগঞ্জ। পেশা-চাকরি, ধর্ম-ইসলাম, জাতীয়তা-বাংলাদেশি। …….. দ্বিতীয় পক্ষ।
মহান সৃষ্টিকর্তার নামে বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্রের বর্ণনা শুরু করলাম। যেহেতু প্রথমপক্ষ/ মালিক মনির মিয়ার নিকট দ্বিতীয়পক্ষ/ভাড়াটিয়া আমিনুল ইসলাম প্রথম পক্ষের ক্রয়সূত্রে ২১৯, পশ্চিম সেনপাড়া ওয়াসা রোড, মিরপুর ঢাকা একটি বাড়ি মাসিক ভাড়া নেওয়ার প্রস্তাব করেন এবং এই চুক্তিপত্রে লিখিত সকল শর্তাদিতে সম্মত হওয়ায় উভয়পক্ষের মধ্যে অদ্য ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে ভাড়ার চুক্তিপত্র সম্পাদিত হইল।
জনাব মনির মিয়া প্রথমপক্ষ হিসেবে দ্বিতীয় পক্ষের সহিত ভাড়াসংক্রান্ত বিষয়ে রশিদ কর্তন, ভাড়া আদায় ইত্যাদি যাবতীয় আনুষঙ্গিক কার্যাদি সম্পাদন করিবেন।
ভাড়ার শর্ত
১. উক্ত বাড়িটির মাসিক ভাড়ার ৫০,০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা এবং উহা ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ইং হইতে কার্যকর হইবে।
২. এই ভাড়ার মেয়াদ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ইং সাল হইতে ৩ (তিন) বছর চালু থাকিবে। অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং সাল তারিখে ভাড়ার মেয়াদ শেষ হইবে। মেয়াদান্তে দ্বিতীয়পক্ষ প্রথম পক্ষের নিকট শান্তিপূর্ণভাবে উক্ত বাড়ির দখল বুঝাইয়া দিতে বাধ্য থাকিবেন।
৩. উল্লিখিত ভাড়া দ্বিতীয়পক্ষ প্রতি মাসের ৭ (সাত) তারিখের মধ্যে প্রথম পক্ষের নিকট প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন।
৪. উক্ত বাড়িটির প্রথমপক্ষের প্রয়োজন হইলে, প্রথমপক্ষ দ্বিতীয়পক্ষকে অগ্রিম ৩০ (ত্রিশ) দিনের নোটিশে এবং প্রয়োজনে দ্বিতীয়পক্ষকে অনুরূপ ৩০ (ত্রিশ) দিনের নোটিশে সকল দায়-দেনা পরিশোধপূর্বক ফেরত দিতে এবং নিতে বাধ্য থাকিবেন। দ্বিতীয়পক্ষ হিসাব-নিকাশ পরিস্কার করিয়া উক্ত বাড়ির দখল প্রথম পক্ষের নিকট শান্তিপূর্ণভাবে বোঝাইয়া দিবেন। ইহাতে কোনো ওজর-আপত্তি চলিবে না। করিলে তাহা সর্ব আদালতে অগ্রাহ্য হইবে।
৫. এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হইবার দুই মাস পূর্বে যাবতীয় হিসাব-নিকাশ দেনা-পাওনা এবং ভাড়ার চুক্তিসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াবলী উভয়পক্ষ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করিবেন এবং উভয়পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে ভাড়ার চুক্তি নবায়ন করিতে পারিবেন।
৬. এই বাড়িটি দ্বিতীয়পক্ষ শান্তিপূর্ণ ও ভদ্রোচিতভাবে বসবাস ও ব্যবহার করিবেন। ইহাতে কোনো প্রকার বেআইনি, অসামাজিক, রাজনৈতিক এবং আইন-শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ করিতে পারিবেন না।
৭. প্রথমপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয়পক্ষ চুক্তিতে বর্ণিত ভাড়ার প্রদত্ত বাড়িটির কোনো অংশের দখল অন্য কাহারো নিকট সাবলেট অথবা কোনো প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন করিতে পারিবেন না। অনুরূপ করিলে অত্র চুক্তিপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়পক্ষ প্রথমপক্ষকে যাবতীয় ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবেন।
৮. উক্ত বাড়িটির প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য সার্ভিস চার্জ দ্বিতীয়পক্ষ প্রদান করিবেন।
১০. উক্ত বাড়ির ৩ (তিন) মাসের ভাড়া ১, ৫০,০০০/ (এক লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা, যাহা অগ্রিমপূর্বক একই বছরে কর্তনকৃত স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, সুস্থ শরীরে, অন্য কাহারো প্ররোচনা ব্যতীত এই চুক্তির শর্তাবলী অবগত হইয়া সাক্ষীগণের সম্মুখে অদ্য রোজ ৭/৯/২০১৮ ইং তারিখে সহি সম্পাদন করিলাম।
প্রথমপক্ষের স্বাক্ষর
…………………………..
(মনির মিয়া)
সাক্ষীগণের স্বাক্ষর
১.
২.
৩.
দ্বিতীয়পক্ষের স্বাক্ষর
…………………………….
(আমিনুল ইসলাম)
প্রিয় লাইফ/আজহার