
ছবি সংগৃহীত
সৎ থেকে একনিষ্ঠ হয়ে কাজ করতে হবে: স্বপন চৌধুরী
আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৬, ১০:৪১
ছবি : শামছুল হক রিপন
(প্রিয়.কম) বিনোদন জগতের অনুষ্ঠান আয়োজনের সফলতম আয়োজক প্রতিষ্ঠানের নাম যদি বলা হয় তাহলে বলতে হবে ‘অন্তর শোবিজ’। আর এই অন্তর শোবিজ-এর সফলতার পিছনে যার হাত রয়েছে তিনি হলেন এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সিইও স্বপন চৌধুরী। তাঁর হাত ধরেই একের পর এক সফল অনুষ্ঠান করতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি। বিগত ২৫ বছর যাবত তিনি এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে গেছেন এক অন্য মাত্রায়। এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বের শীর্ষ তারকাদের নিয়ে দেশ বিদেশে করেছে বড় বড় অনুষ্ঠান। সম্প্রতি আরও একটা বড় অনুষ্ঠান করছেন তারা। আজ ছিল তার 'মিট দ্য প্���েস'। এবার বিনোদন কাজে লাগাতে চান সামাজিক কার্যক্রমেও। যিনি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সেই স্বপন চৌধুরী মুখোমুখি হয়েছেন প্রিয়.কম-এর নিয়মিত বিভাগ প্রিয় কথা’য়।
প্রিয়.কম: প্রথমে জানতে চাচ্ছি আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠান সম্পর্কে?
স্বপন চৌধুরী: ‘ক্লিন ঢাকা কনসার্ট উইথ বলিউড কুইন এন্ড এজে’ নামে অনুষ্ঠান করবো আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। যা অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। উপস্থিত থাকবেন কারিনা কাপুর খান, কনিকা কাপুর, জাভেদ আলী এওং অনন্ত জলিল। বিনোদন নিয়ে কাজ করছি আজ ২৫ বছর ধরে। তাই এইবার এই বিনোদনকে কাজে লাগাতে চাই সামাজিক কার্যক্রমেও। আর আমাদের এই অনুষ্ঠানকে সহযোগিতা করছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন উইকএন্ড। আমি খুবই আশাবাদী শাহরুখ খানের অনুষ্ঠানের মতো এই অনুষ্ঠানও সফলতার সঙ্গে শেষ করব। এর জন্য সবার দোয়া এবং সহযোগিতা চাচ্ছি।
প্রিয়.কম: ২৫ বছর যাবত এই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন, এই দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে যদি বলতেন?
স্বপন চৌধুরী: অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বললে ভালো খারাপ দুটোই আছে। তবে ভালো টাই গ্রহণ করে এতো পর্যন্ত আমি আসতে পেরেছি। সবার দোয়া এবং সহযোগিতাই আমাকে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে সাহায্য করেছে। তাছাড়া নিজের অনেক কষ্ট, মেধা, শ্রম সবকিছুই দিয়েছি। যার জন্য আজকের এই অন্তর শোবিজ।
প্রিয়.কম: এতো বছর ধরে কাজ করছেন কতটুকু সফল মনে করছেন নিজেকে?
স্বপন চৌধুরী: কতটুকু সফলতা পেয়েছি তা বলতে পারব না। তবে এতটুকু বলব সব সফলতা না পেলেও যা পেয়েছি তাতেই আমি অনেক খুশি।
প্রিয়.কম: এতো বড় বড় কাজ করছেন, এই সময়ে কোন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন?
স্বপন চৌধুরী: এতো বড় ইভেন্ট যে বাংলাদেশে হতে পারে এই ধরণের চিন্তা ছিল না আগে। এখনও নেই বললেই চলে। কিন্তু আমি বড় বড় অনুষ্ঠান করে প্রমাণ করেছি যে আমাদের দেশে সবকিছুই করা সম্ভব। আর ইভেন্ট করলে একটু আকটু সমস্যা তো থাকেই। যেমন ভেন্যু পাওয়া যায় না,ট্যাক্স-ভ্যাটের নিয়মকানুন নিয়ে সমস্যা থাকে। তারপরও আমি আমার কাজ করে যাচ্ছি। সমস্যা মোকাবেলা করেই এগোচ্ছি আমি।
প্রিয়.কম: এই বিষয়ে কি তাহলে কোন উদ্যোগ নিয়েছেন?
স্বপন চৌধুরী: আমি এবং আমার আরও ইভেন্ট ফার্মের বন্ধুদের নিয়ে ‘বাংলাদেশ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন করেছি। এবং বিএফডিসি’র মেম্বার হয়েছি আমরা। এই সংগঠনের চেয়ারম্যান আমি। সঠিক নীতিমালা এবং অন্য ব্যবসার মতো আমাদের এই ব্যবসাও যাতে ভালো মতো চালিয়ে নিয়ে যাওয়া তার জন্যই কাজ করছি।
প্রিয়.কম: সরকারের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা আশা করেন?
স্বপন চৌধুরী: এতদিন পর্যন্ত যা করে আসছি তার সবকিছুতেই সবাই খুব সহযোগিতা করেছে। কারণ আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক সংস্কৃতিমনা তিনি সবসময় আমাদের সহযোগিতা করেন। তবে আমার একটা চাওয়া হচ্ছেন খেলাধুলার মতো আমাদের যেন একটা ফিক্সড ভেন্যু দেয়া হয় যাতে আমরা এরকম আরও অনুষ্ঠান বাংলাদেশের মানুষের জন্য আয়োজন করতে পারি। কারণ এরকম অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য একটা ভালো ভেন্যু পাওয়া খুব কঠিন।
প্রিয়.কম: ইভেন্ট ফার্মগুলোর বিদেশি তারকা নিয়ে কাজ করার প্রবণতা বেশি কেন?
স্বপন চৌধুরী: এটা বললে বলতে হবে আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলের কথা। কারণ তাদের দেখানো সব কিছু দেখেই বিদেশি তারকাদের প্রতি একটা অন্যরকম চাহিদা তৈরি হয়ে গেছে। তাই আমাদের মত ইভেন্ট ফার্মগুলো বিদেশি তারকাদের পিছে ছুটছে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমাদের দেশের দর্শকদের উপর। তাছাড়া আমি কিন্তু শতকরা ৯০ ভাগই দেশি তারকাদের নিয়ে দেশে বিদেশে অনুষ্ঠান করি। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন বড় কোন অনুষ্ঠান করলে কভারেজ বেশি হয় তাই অনেকে মনে করে আমিও বিদেশিদের নিয়েই বেশি কাজ করি।
প্রিয়.কম: ইভেন্ট ফার্মগুলো উপর একটা অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়, তা হলো ট্যাক্স লুকানো। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?
স্বপন চৌধুরী: একটা অনুষ্ঠান করতে গেলে তারকাদের পারিশ্রমিকের শতকরা ৩০ ভাগ ট্যাক্স, টিকিটের ১৫ ভাগ, কোম্পানির ৪০ ভাগ আগেই দিতে হয়। এতো ট্যাক্স যদি দিতে হয় তাহলে কিভাবে একটা প্রতিষ্ঠান চলবে। সব ট্যাক্সেই চলে যায়। তবে আমি এনবিআর-এর সঙ্গে দুবার মিটিং করেছি এই বিষয়ে। যে শার্টের দোকান থেকে কেউ কিন্তু ফ্রি কিছু কিনতে পারে না। তাই সেই দোকান গুলোর ট্যাক্স দিলেও সমস্যা নেই। কিন্তু আমরা কোন অনুষ্ঠান করলেই ফ্রি টিকিটের জন্য সবাই বলে। এটা কেন হবে। কারণ যারা ফ্রি দেখে তাদের পক্ষ থেকেও আমার ট্যাক্স দিতে হয়। তাই এদের ট্যাক্স মুক্ত করা নিয়েও আলোচনা করছি।
প্রিয়.কম: অনেকেই এখন ইভেন্ট ফার্ম ব্যবসা শুরু করছে, তাদের উদ্দেশ্যে কি বলবেন?
স্বপন চৌধুরী: তাদের জন্যই তো আমার সংগঠন তৈরি করা। তাদের পথকে আরও সহজ করে দিয়েছি। এই শিল্পটাকে যেন তারা ধরে রাখতে পারে সেই জন্য সৎ থেকে একনিষ্ঠ হয়ে কাজ করতে হবে।
- ট্যাগ:
- তারকার জীবন
- বিনোদন
- অন্তর শোবিজ
- স্বপন চৌধুরী