![](http://imgwww.priyo.com/files/story/201601/Untitled-1_11.jpg)
ছবি সংগৃহীত
রাজ্জাককে নিয়ে বন্ধু আমজাদ হোসেনের মূল্যায়ন
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৬, ০৮:০৪
ছবি: সংগৃহীত
(প্রিয়.কম) জহির রায়হান ‘বাহানা’ চলচ্চিত্র নির্মাণের পরে নতুন চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু হিসেবে বেছে নেন বাংলার প্রচলিত ও অতিপরিচিত এক লোককাহিনী। সেটি ছিল হিন্দু পুরাণ মনসামঙ্গল কাব্যের বেহুলা-লখিন্দরের উপাখ্যান। বেহুলা চরিত্রের জন্য তিনি নির্বাচন করেন সুচন্দাকে। লখিন্দরের ভূমিকায় তৎকালীন নায়কদের পছন্দ না হওয়ায় নতুন কাউকে নেওয়ার কথা ভাবেন পরিচালক।
অভিনেতা রাজ্জাক কে খবর পাঠিয়ে আসতে বলেন জহির রায়হান। তখন তাকে দেখে প্রাথমিক পছন্দ হয় তাঁর।সেসময় তাঁকে বলে দেওয়া হয়-এক সপ্তাহ দাঁড়ি না কেটে আবার পরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে। সাত দিন পর খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে পূর্ন সন্তুষ্ট হয়ে তিনি লখিন্দর চরিত্রে চূড়ান্ত করেন রাজ্জাককে। চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে এটিই ছিল রাজ্জাকের প্রথম ছবি।
এ ছবিতে নায়ক রাজ্জাক আর আমজাদ হোসেন প্রথমবারেরমত অভিনয় করেন। যার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৬২ সালে। আর সেসময় থেকেই নায়ক রাজ্জাক আর আমজাদ হোসেনের বন্ধুত্ব। যা বহাল আছে আজও। আর আজ নায়করাজের ৭৫তম জন্মদিন। সে উপলক্ষেই বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষেই লেখাটি লিখেছেন আমজাদ হোসেন।
আমাদের বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের কাছে জনপ্রিয় নায়করাজ রাজ্জাক। তাঁর শুরু হয় আমার সাথে ‘বেহুলা’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। সে ছবিতে আমি অভিনয় করি, রাজ্জাকও অভিনয় করে। সেই থেকে আমাদের পরিচয়। রাজ্জাক বাংলা চলচ্চিত্র কিংবা বাংলাদেশের একমাত্র নায়ক যিনি বলতে গেলে দীর্ঘদিন টানা চার যুগেরও বেশি সময় ধরে নায়ক হিসেবে কাজ করেযাচ্ছেন।
তাঁকে শুধু তারকা বললেই হবে না, নায়করাজ তারকাদের শ্রেষ্ঠতারকা। রাজ্জাক ছাড়া তো একসময় কোন ছবিই হিট হত না। সেসময়কার অনেক পরিচালকদেরও নাম নিতে হয়। পরিচালক ভাল না হলে ছবি ফ্লপ গেলে তো আর তারকা হওয়া যায় না। সেই জহির রায়হান, কাজি জহির,নারায়ন ঘোষ মিতাসহ কত বড় বড় সব পরিচালকের ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন।
প্রায় সব ছবিই হিট হয়েছিল। রাজ্জাক বাংলা চলচ্চিত্রের গর্ব, অহংকার। বাংলাদেশের মানুষ তাকে চিরদিন মনে রাখবে। কোন বিশেষণ দিলে একটা মানুষ খুশি হয়? একজন প্রতিভাবানকে যত ধরনের বিশেষণ দেওয়া যায়, সবই নায়করাজের বেলায় যায়। আমি চাই রাজ্জাক আরও দীর্ঘজীবী হোক। যদিও চলচ্চিত্রের অবস্থা এখন ভাল না। নায়করাজের মত একজন নায়ক থাকলে বাংলা চলচ্চিত্র আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
আমাদের ভিতরে বন্ধুত্ব এত গাঢ় থাকার পরও আমরা দুজন-দুজনকে এখন পর্যন্ত আপনি বলেসম্বোধন করি। রাজ্জাকের ৭৫তম জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। রাজ্জাক মাঝখানে বেশ অসুস্থ ছিল। আমার কাছে মনে হয় স্রষ্টা তাঁকে নতুন করে জীবন দিয়েছেন।
অনুলিখন: মিঠু হালদার