
ছবি সংগৃহীত
যে দশ কারণে পারমাণবিক বোমার চেয়ে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা
আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৬, ০৫:১৯
১৯৬১ সালে চালানো একটি আণবিক বোমা পরীক্ষার সংগৃহীত ছবি
(প্রিয়.কম) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়ে জাপানের হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমার তান্ডবলীলা দেখেছিল বিশ্ব। তার তেজে পুড়ে মুহুর্তেই মারা যায় কয়েকলাখ মানুষ। ধংসস্তুপে পরিণত হয় শহর দুটি। আর কয়েক প্রজন্ম ধরে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এখনও বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মাচ্ছে সেখানকার শিশুরা।
বুধবার উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানোর ঘোষনা দেয়ার পর থেকে আলোচনায় ওই শক্তিশালী বিস্ফোরক। পারমাণবিক বোমার চেয়ে কয়েকগুন বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন এ বোমা চালাতে পারে আরো ভয়ঙ্কর তান্ডব। তবে পৃথিবীবাসীর সৌভাগ্য এখনও তাদের দেখতে হয়নি হাইড্রোজেন বোমার ধংসলীলা।
কিন্তু পারমানবিক বোমার চেয়ে কতটা বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন এই বোমা। সেরকম দশটি পয়েন্ট প্রিয়.কমের পাঠকদের জন্য।
১. একটি হাইড্রোজেন বোমা পারমানবিক অস্ত্রের চেয়ে কয়েকগুন বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন।
২. আনবিক বোমার চেয়ে কয়েক মাত্রার বেশি শক্তি নিঃসরিত হয় হাইড্রোজেন বোমা থেকে। একটি বিস্ফোরণে গোটা একটা শহর মুহুর্তের ধংস করে দিতে পারে এই বোমা।
৩. হাইড্রোজেন বোমা ফিউশন প্রক্রিয়ায় তার শক্তি সংগ্রহ করে। আর পারমানবিক বোমা শক্তি সংগ্রহ করে ফিশন প্রক্রিয়ায়।
৪. নিউক্লিয়ার ফিউশন( Nuclear fusion) আর নিউক্লিয়ার ফিশন( nuclear fission) শক্তি নির্গমনের আলাদা দুটি বিক্রিয়া। ফিশন বিক্রিয়ায় একটি পরমাণুকে দুই বা আরো বেশি ভাগে ভাগ করে শক্তি তৈরি করা হয়।
৫. আর ফিউশন বিক্রিয়া তার উল্টা। দুই বা আরো বেশি পরমাণুকে এক করে আরো ভারি ও বড় পরশাণু বানানো হয়।
৬. হাইড্রোজেন পরমাণুর ফিউশন ঘটিয়ে হাইড্রোজেন বোমা বানানো হয়। সেকারণেই তার নাম হােইড্রোজেন বোমা।
৭. ফিউশন বিক্রিয়ায় বোমা বানানো ফিশন বিক্রিয়ার চেয়ে আরো বেশি স্পর্শকাতর এবং কঠিন। এটির জন্য অনেক বেশি তাপমাত্রা দরকার পড়ে। এবং তা কয়েক লক্ষ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত। এত বেশি তাপ উৎপন্ন করার জন্য প্রথমে ফিশন বিক্রিয়া ঘটানো হয়। এবং সেই শক্তি ফিউশন বিক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়।
৮. ছোট আকারের হাইড্রোজেন বোমা বানানো অপেক্ষাকৃত সহজ। এবং এ কারণে এটি মিসাইল দিয়ে ছুড়ে লক্ষ্যবস্তুতে ফেলা সম্ভব।
৯. হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা দুটি বোমাই পারমাণবিক বোমা। এখন পর্যন্ত কোন যুদ্ধে হাইড্রোজেন বোমা ব্যবহার করা হয়নি।
১০. বুধবারের পরীক্ষার ফলে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো আনবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটালো উত্তর কোরিয়া, যার মধ্যে এটিই প্রথম হাইড্রোজেন বোমা। পরীক্ষাগারে চালানো এই বোমার ফলে ৫ দশমিক এক মাত্রার ভুমিকম্প অনুভূত হয়।
আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো প্রথমে উত্তর কোরিয়ায় ভুমিকম্পের সনাক্ত করে তা প্রচার করে। পরে দেশটির রাষ্ট্রীয় চ্যানেলে হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দেয়ার পর এই ভুমিকম্পের কারণ জানা যায়।