ছবি সংগৃহীত

মানুষের শরীর থেকে বিদ্যুৎ শক্তি তৈরী

techadmin
লেখক
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০১১, ১০:৫৫
আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১১, ১০:৫৫

(প্রিয় টেক)- আমরা সাধারণত একটা ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে শুধুমাত্র ঘরের প্লাগের সাথে সংযোগ ঘটিয়ে - অথবা ব্যাটারি প্রবেশ করিয়ে - অথবা সৌর প্যানেলের সাহায্যে - বিদ্যুৎ পাবার কথা চিন্তা করে থাকি। কিন্তু যদি দেহের সাথে লাগিয়ে চার্জ দেবার কথা বলি তাহলে কিরকম হবে?

fuelcell
এই ক্ষুদ্র বায়োফুয়েল সেলটি আপনার দেহের গ্লুকোজ এবং অক্সিজেনকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি করবে।
শুনে মনে হচ্ছেনা গাজাখুড়ি গল্প! কিন্তু গ্রেনোবলের জোসেফ ফুরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ সার্জ কজনিয়ার এবং তার দল এরকম একটি যন্ত্র নির্মাণে সক্ষম হয়েছেন। তাদের এই যন্ত্র, যার নাম দেয়া হয়েছে বায়োফুয়েল সেল, শরীরের পাওয়া ঘনীভূত গ্লুকোজ এবং অক্সিজেন ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম। বিশ্বের তারাই প্রথম দল যারা তাদের এই যন্ত্র জীবন্ত প্রাণীর দেহে বসিয়ে এর কার্যক্ষমতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। যদি সবকিছু ঠিকঠাক মত চলে তাহলে আশা করা যাচ্ছে আগামী এক বা দুই দশকের মধ্যে, বায়োফুয়েল সেলস ব্যবহার করে দেহের কৃত্রিম অঙ্গ প্রতঙ্গকে বিদ্যুৎ শক্তি প্রদান করা যাবে। তাদের বিদ্যুৎ শক্তি দেবার জন্য আপনার প্রয়োজন শুধু একটা চকলেট বার খাওয়া অথবা কোকাকোলা পান করা। এই মুহূর্তে যে ধরনের কৃত্রিম, বৈদ্যুতিকভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অঙ্গপ্রতঙ্গ তৈরি হচ্ছে, হৃদয়, কিডনি, এবং ব্ল্যাডার সহ, এবং সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, যেমন হাত, আঙুল, এমনকি চোখ। কিন্তু তাদের প্রধান সমস্যা: এগুলো চালাতে বিদ্যুতের প্রয়োজন। ব্যাটারীর সাহায্যে শক্তি শুধুমাত্র সেই সকল ইমপ্ল্যান্টের জন্য ভালো যেগুলো চালাতে বেশি শক্তি প্রয়োজন হয় না, কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যাটারির শক্তি দ্রুত ফুরিয়ে যায়, যা একটি মৌলিক সীমাবদ্ধতা।
ফ
ফুয়েল সেলটি একধরণের জাল দ্বারা আচ্ছাদিত করা হয় যাতে দেহ একে প্রত্যাখ্যান না করতে পারে
এমনকি পেসমেকারের মত যন্ত্র যা চালাতে খুব একটা শক্তি প্রয়োজন পরে না, তাদেরও রয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমা। সাধারনত এগুলোর ব্যাটারী ৫ বছর পর পর পরিবর্তন করতে হয়। এক গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে ৭০ বছর বয়স্ক যারা পেসমেকার ব্যবহার করছে তাদের ৫ জনের মধ্যে ১ জন আরো ২০ বছর বেঁচে থাকে, তারমানে তাদেরকে আরো ৩ টি অপারেশনের সম্মুখিন হতে হবে, শুধুমাত্র ব্যাটারি পরিবর্তনের জন্য। আর একেকটা সার্জারীতে কত ধরণের সমস্যা হতে পারে তার কোন সীমা নেই। আর তাই বায়োফুয়েল সেল নিয়ে আরো অনেকের মত ডঃ কজনিয়ার আর দল এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করছিলেন। যদিও এ গবেষণাটিকে আরো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। তবে তারা আশা করছেন যে সকল সমস্যার সম্মুক্ষিন তারা এই মুহূর্তে হচ্ছেন তা আগামী এক দশকের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব হবে। এই বায়োফুয়েল সেল পদ্ধতিটি চালু হলে কৃত্রিম অঙ্গ এবং প্রোসথেটিক এর ক্ষেত্রে যে বিপ্লব ঘটবে তা প্রতি বছর হাজারেরো বেশী মানুষের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাবে। সুত্রঃ বিবিসি