এই সময়ের জনপ্রিয় ছড়াকার জগলুল হায়দার। ইদানীং ফেসবুকে বারোভাজা নামে অণুকাব্য লিখে তিনি আরও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। ভালোবাসা নিয়ে তার যৌথ সম্পাদিত ‘বাংলাদেশের ভ্যালেন্টাইন ছড়া’ এবারের মেলায় প্রকাশিত হয়েছে দ্বিতীয় মুদ্রণ। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে তিনি মুখোমুখি হয়েছেন প্রিয়ডটকমের সামনে। প্রিয়ডটকম : ভালবাসা এই শব্দটাকে কিভাবে দেখেন আপনি? জগলুল হায়দার : আমার কাছে এটি মহত্তম একটি শব্দ। মানুষের অভিধানে মজুদ সুন্দরতম এই শব্দ। আর জীবনের জন্য অপরিহার্য। তয় এইটা খালি গড়পড়তা 'ভালোবাসা' শব্দের দিকে খেয়াল রাইখা বলতেছি না। বলতেছি শব্দটার মূল যে essance বা মর্ম তার কথা মনে রাইখাই। প্রিয়ডটকম : আমাদের দেশে ভালবাসা দিবস উদযাপনকে কিভাবে দেখেন আপনি? জগলুল হায়দার : এমনিতে আমি মনে করি না যে ভালবাসা শুধু একটা দিন রে ঘিরাই থাকবো। ভালবাসা তো প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তের বিষয়। তারপরও স্মারক বইলা একটা কথা থাকে। তো ভালবাসার স্মারক দিবস হিসাবে একটা দিন থাকার মধ্যে সেই অর্থে আমি মন্দ কিছু দেখি না। হয় তো দিবসটা আমগো নিজস্ব নয়, তাতেই বা কি ? তোমার হাতের এই ক্যামারা কিম্বা এই ল্যাপটপ, এইগুলাও তো আমগো নিজস্ব নয়। কিন্তু আমগো উদ্দেশ্য অর্জনে কতই না কার্যকরী। আবার যদি বৃহত্তর অর্থে দেখি তাইলে মানব জাতির অংশ হিসাবে বিশ্ব সমাজের অংশ হিসাবে পৃথিবীর মহত্তম অর্জনগুলা তো সব মানুষের। এই ভাবেই তো শিকাগোর মে দিবস সবার। এমনকি আমগো ভাষা দিবসও আজ তামাম দুনিয়ার। তো এইভাবেই ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালবাসা দিবসও আজ আমগ হইয়া গেছে বৈ কি। প্রিয়ডটকম : ভালবাসা দিবস নিয়ে আমাদের তরুণ - তরুণীদের উচ্ছাসকে কিভাবে দেখেন? জগলুল হায়দার : খুব পজেটিভলি দেখি। শোনো , তারুণ্যের একটা নিজস্ব ধর্ম আছে। সেই মতোই তরুণরা চলে এবং চালিতও করে। এইটা সব যুগে সব দেশে একই রকম। সময় আসলে তরুণগো হাত ধইরাই আগায়। তয় সব কিছুর মতো এক্ষেত্রেও সংস্কৃতি রুচি ধর্ম সামাজিক মূল্যবোধ মাথায় রাখতে হইব। বলতে চাইতেসি যে দিবসটা যেইখান থেকেই আসুক আমরা সেইতা উদযাপন করুম আমগো মতোই। প্রিয়ডটকম : কিন্তু কারো কারো কাছে এই ক্রেজ তো বাড়াবাড়িও মনে হয়? জগলুল হায়দার : হইতে পারে। সবাই তো সব কিছু এক ভাবে দেখবো না। সেইটা তুমি আশাও করতে পারো না।অই যে একটা ইংরেজি প্রবাদ আছে না-' many man many minds.' হিংসা ঘৃণায় ভরপুর দুনিয়ায় ভালোবাসার ক্রেজ না হয় একটু থাকলই! তয় হুম, আবারো বলতেসি সব কিছুতেই শালীন থাকা শ্রেয়। প্রিয়ডটকম : ভালবাসা নিয়ে আপনার অনেক কাজ। বিশেষত ছড়া আর বারোভাজায় (অনুকাব্বে) আপনি এ সময়ের তরুণ - তরুণীদের মাতিয়ে রেখেছেন। তো এবারের বইমেলায় ভালবাসা নিয়ে কি উপহার দিলেন পাঠককে? জগলুল হায়দার : এ দেশে যথার্থ অর্থে প্রথম প্রেমের ছড়ার সংকলন আমি করি তবে সেইখানে আমার সংগে যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন ছড়াকার কাদের বাবু। এইটা ২০০৮ এর বইমেলায় আসছিলো । তরুণ বন্ধু গো ভালবাসায় অই মেলায় ছড়ার বইয়ের বিক্রির তালিকায় বইটা সবার ওপরে ছিল । এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে আবারো তারে সাথে নিয়া সম্পাদনা করি ' বাংলাদেশের ভ্যালেন্টাইন ছড়া '। সাহস পাব্লিকেশন্স থেকে প্রকাশিত বইটার দ্বিতীয় সংস্করণ আসছে এইবারের মেলায়। য়ার আমার পাঠকপ্রিয় লিরিকগুলা নিয়া একই প্রকাশনা থেকে আসছে ' ভালোবাসার ১০০ লিরিক' নামের বই। মূলত তরুণ পাঠক বন্ধুগো কথা মনে রাইখাই কাজগুলা করা। প্রিয়ডটকম : ভালবাসা নিয়ে শেষ কথা… জগলুল হায়দার : ভালোবাসা নিয়া শেষ কথা বইলা কোনও কথা নাই। ভালোবাসা চলছে... চলবে। এডেনের উদ্যানে আদম-ইভের মাধ্যমে শুরু হইয়া আজো চলছে। চলবে কিয়ামত পর্যন্ত। ভালোবাসার বিকল্প নাই। প্রিয়ার জন্য যেমন ভালোবাসা তেমনি দেশের জন্যও ভালোবাসা । মায়ের জন্য যেমন ভালোবাসা তেমনি মানুষের জন্যও ভালোবাসা। সব শেষে মাদার তেরেজার মতো কই- 'love until it hurts...' প্রিয়ডটকম : ধন্যবাদ আপনাকে। জগলুল হায়দার : ধন্যবাদ তোমারে এবং প্রিয়ডটকম রে।