(প্রিয়.কম) পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, নিজের দেশে খেলা। প্রত্যাশার চাপ অনেক ছিল, তবু সেমিফাইলে জার্মানির সাথে ৭-১ গোলে অপ্রত্যাশিত পরাজয়ে হতাশ ব্রাজিল সর্মথকরা। সমালোচনা, বিশ্লেষণ আর ভবিষ্যত আশাবাদ প্রকাশ করে অনেককে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে। প্রিয়.কম পাঠকদের জন্য কিছু স্ট্যাটাস প্রকাশিত হলো। Zahid Newaz Khan

`শুধু একদিন ভালবাসা মৃত্যু যে তারপর তাও যদি পাই'... জার্মানদের এখন মরে গেলেও আফসোস নেই। আর যাদের তারা মেরে ফেললো, সেই ব্রাজিলিয়ানদের শুধু ফিনিক্স পাখির মতো নতুন করে বেঁচে উঠার স্বপ্ন। তবে সেটা যে শিগগিরই এমন নয়। এমন হারের পর এই দলের অনেক ফুটবলারের জাতীয় দলের জন্য খেলাটাই এক বড় মাসসিক সমস্যা হয়ে দেখা দেবে। যেমন ঘুমানোর আগেই একটা টেক্সট পেয়েছিলাম: ‘এটাও দেখার জন্য আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছিলেন! লাইফ ইজ সো অ্যামেজিং উইথ বান্ডলস অব সারপ্রাইজেস।’ আসলেই তাই। দিনশেষে ফুটবল আসলে ফান। তবে যে পর্যন্ত আপনি ফাইনাল খেলার স্বপ্নটা বাঁচিয়ে রাখতে পারেন ততোক্ষণ। তা না হলে তার নাম অশ্রু। তবু তো ব্রাজিলে আজ সূর্য উঠেছে। আজ আরেকটি সেমিফাইনাল, শনিবার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী, রবিবার ফাইনাল। এরপর চার বছরের অপেক্ষা।

ফাইনালটা যদি জার্মানী আর নেদারল্যান্ডে হয় তবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা খেলা হবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণের জন্য। সেদিন কি ঢাকায় বিজিবি নামাতে হবে? অবশ্য ফা্ইনালটা জার্মানী ও আর্জেন্টিনায়ও হতে পারে। তখন নেদারল্যান্ডের সাথে খেলা হবে ব্রাজিলের। তবে যার সাথেই খেলা হোক, ব্রাজিলের দায়িত্ব হবে তার হৃত গৌরবের অংশবিশেষ পুনরুদ্ধার করা। নইলে শৈল্পিক ফুটবলের ব্রাজিলের পতন ঘটবে।

ব্রাজিলের মাত্র ১৪ বিলিয়ন ডলার পানিতে গেলো!

বাংলাদেশে ব্রাজিল শিবিরে যে ভয়াবহ শোকেরর ছায়া নেমে এসেছে আশা করি আজ রাতেই তা কেটে যাবে- আর্জেন্টিনার পরাজয়ের দৃশ্য দেখে। বাঙালি নিজে কিছু না পেলে যে কষ্ট পায়, তার থেকে বেশি কষ্ট পায় অন্যের পাওয়ায়। তারা যে জয়ের উৎসব করে সেটা আসলে নিজেদের জয়ের না, অন্যের পরাজয়ের।

" অতিকায় হস্তি লোপ পাইয়াছে তেলাপোকা টিকিয়া আছে , তাই বলে হস্তির সাথে তেলাপোকার তুলনা শোভা পায় "- ছিলাম , আছি ,থাকব ব্রাজিলের সাথেই ...

ঈশ্বর একজন ব্রাজিলিয়ান। আর ঈশ্বর যা কিছু করেন মঙ্গলের জন্যই করেন। কারণ ঈশ্বর ভালো করেই জানেন, যে ফাইনালের স্বপ্ন দেখছিল সবাই, তা ব্রাজিল-অার্জেন্টিনায় যাই করুক, বাংলাদেশে দুঃস্বপ্ন ডেকে অানতে পারে। মহান ঈশ্বরকে তো সবার কথাই ভাবতে হয়। তাই বাংলাদেশের কথা ভেবেই ঈশ্বর একটি দলকে আগেই ফাইনাল থেকে ছিটকে ফেলেছেন। ঈশ্বর সত্যি মহান। আর তিনি যা কিছু করেন মঙ্গলের জন্যই করেন। শিরোপা থাকুক ল্যাতিন আমেরিকাতেই...আমার প্রথম পছন্দ ব্রাজিল। তবে আমি মূলত ল্যাতিন ঘরানার ফুটবলের সমর্থক। ল্যাতিন ফুটবলের সৌন্দর্য আমাকে সবসময়ই টানে। এবার বিশ্বকাপ হচ্ছে ব্রাজিলে, মানে ল্যাতিন আমেরিকায়। তাই আমি চাই কোনো ল্যাতিন দলই শিরোপা জিতুক। জার্মান বিপর্যয়ে ছিটকে গেছে স্বাগতিক ব্রাজিল। তবে এখনও ল্যাতিন পতাকা উর্ধ্বে তুলে ধরে টিকে আছে আর্জেন্টিনা। ল্যাতিন আমেরিকা থেকে ইউরোপিয়ানরা কাপ নিয়ে যাবে, এটা মেনে নেয়া কষ্টকর। তাই চাই আর্জেন্টিনা জিতুক। শিরোপা থাকুক ল্যাতিন আমেরিকাতেই। তবে হল্যান্ড অনেক ভালো দল। গতবারের রানার্স আপ দলটি বিশ্বকাপের সবচেয়ে দুর্ভাগা। তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপা পায়নি। এবার নিশ্চয়ই আরেকটা ট্রাই করবে। তবে আমি চাই, আর্জেন্টিনা-জার্মানি ফাইনাল এবং আর্জেন্টিনার জয়।

একটা হরতাল দেয়া যায় না? খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করলে হয়। ৭-১ গোল!!! ষড়যন্ত্র, পুরোটাই ইউরোপীয়দের চক্রান্ত!!! খালেদা জিয়া তো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার, আপোষহীন- বিএনপির দাবি তো এমনই। এই দু:সময়ে (!) বাংলাদেশের ব্রাজিল সমর্থকেরা কি তাঁকে পাশে পেতে পারেন না? ২৪ ঘন্টার হরতাল বা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ, নিদেনপক্ষে প্রেসক্লাবের সামনে ১ ঘন্টার প্রতীকী অনশন? যতই সময় যাচ্ছে, জার্মানদের এই নিষ্ঠুর আচরণ, বুকের ব্যথা ততই বাড়িয়ে দিচ্ছে। অস্থির লাগছে। একটা হরতাল দেয়া যায় না?

খেলাধূলা সম্পর্কে আমার জ্ঞান সংসদে হাজী সেলিমের বাজেট বক্তৃতার মত.. তবু বলি.. ব্রাজিল-আর্জেটিনা বা অন্য দলের সমর্থনের ক্ষেত্রে দেখছি..যার খেলা ভাল লাগে তাদের মনে করি- নান্দনিক, ধ্রুপদি ও শিল্প আর যাদের অপছন্দ করি তাদের মান গ্রাম্য ও হাটুরে.. জয়-পরাজয় নিয়ে আমাদের মানসিকতা-যখন গুরুত্বপূর্ণ কোন খেলায় জিতি তখন যেন ‘আকাশ ছুঁতে চাই’ আর যখন হারি তখন খেলোয়াড়দের কামারশালায় পাঠাই.. এই ভাবনা কি ঠিক..? কেউ/কোন দল কখনো বা সাধারণত ভাল খেলে তার মনে কি সে/দল সবসময় ভাল খেলবে, তার গেরান্টি..? কখনো কি সে খারাপ করতে পারে না? আবার ভাল করতে পারে না? নতুন/ভিন্ন কেউ কি ভাল খেলতে পারে না? যেমন, সাকিব’র শাস্তি হওয়া না হওয়া নিয়ে বা এই সিন্ধান্তের আগে-পরে অনেক বন্ধুর মতামত দেখছি ভিন্ন বা একশো ভাগ পক্ষে ও বিপক্ষে..! এখানে লক্ষ্য করছি সেই ‘সাদা-কালো তত্ত্বের’ সরল সমিকরণ.., যেন এর বাইরে আর কোন রং নেই..? বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেমন পক্ষে-বিপক্ষের দ্বি-দলীয় চরিত্র দেখা যায়, এ ক্ষেত্রে কি তার ব্যতিক্রম..? এটা কি মনস্তত্বের সমস্যা..? এ কোন রুগ্ন সংস্কৃতি আমাদের..?

খেলা শুরু হওয়ার আগেই টিভির সামনে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পাশের বাসার আর্জেন্টাইন সাপোর্টারদের বীভৎস চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গল। দ্বিতীয় গোল হয়েছে। ঘুম ঘুম চোখে আমি রিপ্লে দেখতে থাকলাম। দশ মিনিট পরে টের পেলাম রিপ্লে না, এর প্রত্যেকটাই একেকটা গোল!

ব্রাজিলের সরকার কি পতন হবে? হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে তৈরী হয়েছিল অনেক স্টেডিয়াম। ৪০০ কোটি ডলারেরও বেশি ঋণ নেয়া হয়েছিল ইউরোপিয় ইউনিয়নের কাছ থেকে। সেই ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তি চুকাল ব্রাজিল।

অনেকে কইছিল-এই বাধ টিকবো না- ভাইঙ্গা যাইব......... এক- আমার খারাপ লাগছে নেইমারের জন্য- খারাপ লাগছে ব্রাজিলের সেই সহজ সরল ফুটবল সমর্থকদের জন্য। ব্রাজিলের বিরাট সংখ্যক মানুষের শিক্ষা-স্বাস্থ্য- কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা না থাকার পরেও এবং জনগণের একটা বড় অংশের প্রতিবাদের পরেও তাদের সরকার এতো বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে এই মহাযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল বিশ্ব সেরা হওয়ার স্বপ্ন আর ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকে। দেখা গেল তারা যে দলটির উপর নির্ভর করলো সেই দলটি বেড়ে উঠেছে এক ব্যক্তির উপর ভর করে। দক্ষ টিম বলে যে কিছু ছিল না তা খেলা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে অবাক - হতভাগ হয়ে- ক্ষুব্ধ হয়ে অবলোকন করলো ব্রাজিলের সমর্থক আর তার সমালোচকরা । আমরা যারা ব্রাজিলের পরাজয় চেয়েছি তারা কিন্তু এমন অসহায় পরাজয় চাই নি। আপনি যুদ্ধে নেমেছেন, আপনার এক সেনাপতি যুদ্ধে আহত হল আর সাথে সাথে আপনার সব সৈন্য ইউনিফর্মে হিসু করে দিল ! আমি এদের যোদ্ধা না বলে কুলিয়ার চর গ্রাম "আইন - শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণ” কমিটির সদস্য বলতে চাই দেখা গেল, নেই নেইমার তো নেই প্রতিরোধ- নেই আক্রমণ- নেই জ্বলে ওঠার ক্ষমতা। দুই - খেলায় হার জিত আছে। তবে আমরা যারা আর্জেন্টিনার সমর্থক আমরা বিশ্বাস করি সাবেলার বাহিনী যদি খেলায় পরাজিত ও হয় তাদের সমর্থকদের অন্তত সাত গোল হজম করার শক্তির অধিকারী হতে হবে না ।

নির্ভরশীলতার পরিনাম! যে কোনো দলীয় খেলা বা কাজে দু-একজেনর উপর নির্ভরশীল হলে তার পরিনাম কত ভয়াবহ হতে পারে তারই প্রদর্শনি দেখলাম যেন ব্রাজিল-জার্মান ম্যাচে! মেসি বিহীন আর্জেন্টিনাও এরকম বিপর্যস্ত হলে অবাক হবো না।

অহেতুক ঝগড়া, উল্লাস করে কেউ ব্যক্তিগত বিরোধ তৈরি করবেন না প্লিজ... এটা খেলা, জীবন না।

ব্রাজিল সাত গোল খাওয়ায় ব্রাজিল সাপোর্টার দের কেমন লাগতেছে তা আমি একটু হলেও বুঝি। একটু না, আমি পুরোটাই বুঝি, রিমেম্বার আর্জেন্টিনা চার গোল খাইছিলো। তো আমার বাসার সামনে ব্রাজিলের তথাকথিত সমর্থক রা পতাকা পুড়াইলো। তারপর বাজি টাজি ফুটাইলো। স্লোগান ও দিলো, তারা জানতো আমি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। অস্বীকার করতে পারবেন না, আর্জেন্টিনার প্রতিটি ম্যাচে মেসি নব্বই মিনিটে কেন গোল দিলো, অমুক কেন দিলো, তমুক কেন দিলো শুনতে হইছে। এগুলো বলছে জেতার পরও, হারলে কি করতো ভাবি। তারা আমার খুব কাছের বন্ধুরাই ছিলো। সময় পাল্টায়। হয়তো আমিও মেতে উঠতে পারতাম গতকাল বিকৃত উল্লাসে। সুনীলের একটা লাইন আমার খুব প্রিয়। আমি মানুষের পায়ের পায়ের কাছে কুকুর হয়ে বসে থাকি-তার ভেতরের কুকুরটাকে দেখবো বলে। আমি আক্রোশে হেসে উঠি না..... আমি আক্রোশে হেসে উঠি না আসলেই। ব্রাজিলের ট্রু ফ্যানস রা সাত গোল কেন, চৌদ্দ গোল খেলেও ব্রাজিলের সাপোর্ট করবে। কারন তারাই আসল সমর্থক। আর যারা নিজের টীম বাদ দিয়ে অন্য ঠিম কখন গোল দিলো, এ না থাকলে গোল হতো না, জিতছে অনেক কষ্ট করে এগুলা বলে, তারা আসলে মূলত তাদের স্বভাবজাত খোচাখুচি র জন্য খেলা দেখে। তাদের কোন বিকারও নাই ব্রাজিল হারাতে আমার মনে হয়। ওয়েলপ্লেইড ব্রাজিল। বর্ণাঢ্য ইতিহাস তোমাদের। রোনালদো রিভালোদো রবার্তো কার্লোস কাকা রোলানদিনহোর টীম তোমরা। বেটার লাক নেক্সট টাইম। কাপ টা বোধহয় এবার ইউরোপেই যাবে। আর জার্মানি কে বিশ্বকাপ খেলতে না দিয়ে গ্যালাক্সিকাপ খেলতে পাঠানো উচিত। তারা এলিয়েন দের সাথে খেলবে। এলিয়েন রা ক্লোজ ওজিল পোডোলোক্সি দের দেখে বলবে, ' আমাগো রে চিনছেন ? আমরা ছোটবেলায় মেলায় হারায় গেছিলাম।'

ব্রাজিল হেরেছে কিন্তু এই পরিনত বয়সেও এটা আমার এতো কষ্টের কারন কেনো হলো নিজেকে প্রশ্ন করেছি বারবার। খেলায় খারাপ দিন থাকেই। ১৯৯৮ এ ফাইনালে ফ্রান্সের সাথে ৩-০ গোলে পরাজয়ে ব্যাক্তিগতভাবে আমি আর বেশী কষ্ট পেয়েছিলাম। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোনালদো ফাইনাল ম্যাচের আগে আনফিট হলো, টেনশন চলল ফাইনালে সে খেলছে তো? খেলার মতো ৫০% ফিটও সে ছিলো না, বেদনানাশক ঔষধ দিয়ে জোর করে খেলানো হলো, ফলাফল মাঠে আমরা রোনালদো নয় তার ছায়া দেখলাম শুধু। রোনালদোকে মাঠে রেখেই ৩-০ গোলের পরাজয় বিশাল কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়ালো। আজকাল ব্রাজিল এমনই বিকল্প প্লেয়ার নেই। বেঞ্চের প্লেয়ারদের উপর আমাদের কি কোচেরই আস্থা নেই। গতকাল ম্যাচটা হারতে পারে জানাই ছিলো, তবু আশা ছিলো হয়তো ভাগ্য সাথে থাকলে উৎরিয়েও যেতে পারি। ৭-১ এ পরাজয় সেই হিসেবে বিশাল এক ধাক্কা। নেইমার- সিল্ভা বিহীন ব্রাজিল আসলে কতোটা দুর্বল সেটা নগ্নভাবে প্রকাশ পেলো। এই পরাজয়ে কষ্টের চেয়ে তো লজ্জা বেশী থাকার কথা, তাহলে আমি এতো কষ্ট কেনো পাচ্ছি? কাল রাত থেকেই চোখের সামনে শুধু ভেসে উঠছে ৬০ হাজার দর্শকের কান্নাভেজা মুখ। কাউকে কাউকে হাউকাউ করেও কাঁদতে দেখেছি। ব্রাজিল স্বাগতিক না হলে এতোটা খারাপ লাগতো না তাদের জন্য। দেশের মাটিতে শতাব্দীর সবচেয়ে জঘন্য হার মেনে নেয়া যে কোনও জাতির জন্যই বিশাল বেদনার। ব্রাজিল ফুটবল খেয়ে বেঁচে থাকে। ফুটবল নিয়ে ঘুমায়। ব্রাজিলের একদল পথশিশু গোল একটা বল বানিয়ে খেলতে খেলতে ভুলে যায় ক্ষুধার কথা। আগামীতে এই ফুটবল পাগল জাতির কি হবে? ক্ষুধা ভুলতে কিসের আশ্রয় নিবে এরা? রাস্তা থেকে উঠে আসা কোনও প্রতিভা কি আমরা আর পাবো? ব্রাজিলের হলুদ জার্সি পরা কি সম্মানের মনে হবে পরবর্তি প্রজন্মের জন্য? হয়তো এগুলো কিছুই হবে না। হয়তো ঘুরে দাঁড়াবে ব্রাজিল। হয়তো আমরা আবার দেখতে পাবো তাদের নান্দনিক ফুটবল। কামনা করি তাই যেনো হয়। বেঁচে থাকুক ব্রাজিল। ব্রাজিল মানেই যে ফুটবল। বেঁচে থাকুক ফুটবল। সুসময়ে যেমন পাশে ছিলাম, দুঃসময়েও পাশে আছি।

শিল্প কখোনই নিছক আবেগ নয়। শিল্প হচ্ছে অধ্যায়ন, অনুশীলন, অনুসন্ধান, চিন্তা-যুক্তিশীলতা ও হৃদয়ের মিশেল... ব্রাজিল জারমানি সেমি ফাইনালে তা আরো একবার প্রমানীত... আজ হল্যান্ড-আরজেনটিনার খেলায় দেখা যাক কি হয়, দু’দলেই শিল্প ব্যাপারটি আছে..

ব্রাজিল-জার্মানি ম্যাচ শুরুর ছয় ঘন্টা আগেই বলেছিলাম অলৌকিক কিছু না হলে অজেয় এই জার্মানির সামনে নেইমার, সিলভাবিহীন ব্রাজিলের পরাজয় নিশ্চিত। হয়েছেও তাই। তবে ব্রাজিল সাতটা গোল খাবে সেটা কস্মিনকালেও ভাবিনি। বাংলাদেশের অর্ধেক লোকের বিশ্বকাপ এখন শেষ। আর্জেন্টাইনরা যতোই বর্বরের মতো খোচাখুচি করেন, ব্রাজিল খুব কম হারে বলেই হারের তীব্র কষ্টটা বুঝি। আর সে কারণেই চাই মেসি জাদুতে আর্জেন্টিনা আজ জিতে ফাইনালে যাক। বাংলাদেশের বাকি অর্ধেক মানুষের বিশ্বকাপের স্বপ্ন পূরণ হোক।

ব্রাজিল হারলেও হারার মত হেরেছে। হেরেও ইতিহাস গড়েছে। দুর্দান্ত দুজন খেলোয়াড় ছাড়া ব্রাজিলকে আরও বেশি আপন মনে হচ্ছিল, যেন বাংলাদেশ খেলছে বিশ্বকাপে। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়। ভূমিধ্বস পরাজয়ের পরও ব্রাজিলের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে - আগামীতে জয়ী হওয়ার প্রত্যাশায়।

খেলারই জয় হলো। যদিও লক্ষ-কোটি ব্রাজিল ভক্তের হৃদয় ভেঙ্গেচুরে চুরমার। তবুও বিশ্ব একটি অসাধারণ ম্যাচ উপভোগ করেছে। রের্কডের ছড়াছড়ি। মিরাস্লেভ ক্লোসা সর্বচ্চো গোল দাতা হলো, এটাই চেয়েছিলাম...... রের্কড ভাঙ্গায় মজা আছে।

আন্ডারডগরা ভাল খেলা উপহার দিবে, কিন্তু কাপ জিতবে ব্রাজিল, এটাই ছিল বিশ্বকাপের মূল সৌন্দর্য। সেই সৌন্দর্য ধ্বংস করা হয়েছে। ষড়যন্ত্র! গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে ব্রাজিলকে নিয়ে। জার্মানরা বিশ্বযুদ্ধ করে যেমন বিশ্ব শান্তি নষ্ট করলো, তেমনি আজকে বিশ্বকাপ ফুটবলের শান্তি বিনষ্ট করলো। অশান্তির প্রতীক জার্মানী।

ফুটবলের ইতিহাসে এটি একটি বিস্ময়কর দিন, দিনটি ব্রাজিল ফুটবলের জন্য অবশ্যই কলংকিত এবং একই সাথে শিক্ষনীয়! আমার মনে হয় এমন জয়ে খোধ জার্মান রাও হত বিহবল এবং কিছুটা বিব্রত! এই পরাজয়ের পড়ে বাংলাদেশের ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সাপোর্টারদের কথা চিন্তা করে নিজেরই খারাপ লাগছে। খারাপ দিন সবারই আশে, আশবে, আপনারা ধৈর্য হারাবেন না। অতি আবেগে এমন কিছু করবেন না যেটা খেলার সাথে সম্পৃক্ত নয় এবং নিজের ও অন্যের জন্য ক্ষতিকর। ফুটবল আমাদের জন্য শুধুই বিনোদন, আর কিছু নয়। আজ হেরেছেন, কাল জিতবেন। এটাই খেলা। আমি একজন আর্জেন্টাইন সমর্থক হয়ে আপনাদের বলছি, আপনাদের এই শোকের সময় আমরা পাশে আছি, চলুন খেলাটা উপভোগ করি, আর কিছুই নয়।

ব্রাজিল হারলো কেনো,আমি কেমনে বলবো,যদি জানতে চাও, তবে ব্রাজিল যাও এবং ব্রাজিলে গিয়ে দেখবে ৫/৬ লক্ষ শিশু শুধু ক্ষুদার জন্য দেহ বিক্রি করছে, লক্ষ লক্ষ/ কোটি কোটি মানুষ যারা অনাহারে/অর্ধহারে আছে...