ছবি সংগৃহীত

নারী-পুরুষের বন্ধুত্বের ৬টি বিতর্কিত দিক!

Nusrat Sharmin Liza
লেখক
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০১৪, ১৫:০৪
আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৪, ১৫:০৪

বেশ অনেক দিন ধরেই মেয়েটি/ছেলেটির সাথে বন্ধুত্ব আপনার। সারাক্ষণ একসাথে থাকা, একসঙ্গে আড্ডা দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া, ঘোরাফেরা এসব কিছুই যেন পরস্পরকে ছাড়া হয়না। অনেকটাই নির্ভর হয়ে পড়েছেন তার ওপরে আপনি। আর সে? ইদানিং তার আচরণে কেমন যেন খটকা লাগছে আপনার মনে। আগের মত প্রানবন্ততা নেই তার মাঝে। কী যেন বলতে চায় সে সবসময় আপনাকে। আজকাল বেশ অধিকারও চাপিয়ে দিচ্ছে সে আপনার ওপর প্রায়ই। তাহলে কি সে আপনার প্রেমে পড়েছে? কী হবে আপনাদের এত সুন্দর বন্ধুত্বের পরিণতি? অনেকেই বলে থাকেন নারী-পুরুষের মাঝে নিখাদ বন্ধুত্ব নাকি হতে পারে না কখনো। আবার অনেকেই এই কথাটির প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন,একজন নারী ও পুরুষের মাঝেও হতে পারে একেবারে বিশুদ্ধ বন্ধুত্ব। নারী পুরুষের এই "বন্ধুত্ব" নিয়ে নানান মানুষের আছে নানান মতামত। আর এই নানান মতের পেছনে রয়েছে কিছু বিতর্কিত বিষয় যেগুলো নারী-পুরুষের বন্ধুত্বের বিষয়টি নিয়ে দ্বিধার সৃষ্টি করে।

শুধুই কি বন্ধুত্ব?

নারী-পুরুষের বন্ধুত্বের মধ্যে সবসময়েই যে দ্বিধাটি সৃষ্টি হয় তা হলো- এটা কি শুধুই বন্ধুত্ব, নাকি তার চাইতে বেশি কিছু? আমাদের চারপাশের সমাজ,পরিবার এবং বন্ধু বান্ধব সবার মনেই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় এবং প্রতিনিয়ত এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় কাউকে না কাউকে। আর এক পর্যায়ে নিজের মনেও এই প্রশ্ন জেগে ওঠে। কেননা অহরহই দেখা যায় যে, খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মাঝে দুজনের একজন অথবা দুজনেই পরস্পরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। বিভিন্ন গবেষণায় ও জরিপে অনেকবারই বলা হয়েছে যে নারী ও পুরুষের বন্ধুত্বটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র বন্ধুত্বে সীমাবদ্ধ থাকে না। কিন্তু যুগে যুগেই তা অস্বীকার করে আসছে বন্ধুযুগলরা।

শারিরীক আকর্ষন

নারী-পুরুষের শারীরিক আকর্ষন একটি চিরন্তন বিষয়। তাই বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। বিভিন্ন জরিপে জানা গিয়েছে যে প্রায় সব পুরুষই তাদের নারী বন্ধুর প্রতি জীবনে একবার হলেও শারীরিক ভাবে আকর্ষন অনুভব করেছেন। নারীদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ অনুভূতির কথা জানা গিয়েছে। অর্থাৎ নারী পুরুষেরর বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে শারিরীক আকর্ষনের বিষয়টি এড়িয়ে যায় না কখনোই।

অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক-

পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীলতা,টান কিংবা শারীরিক আকর্ষণের কারণে অনেক বন্ধু যুগলকেই দেখা যায় পরস্পরের সাথে যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছেন। বিশেষ করে কমবয়সীদের মাঝে এটা অনেক বেশি দেখা যায়। পাশাপাশি থাকতে থাকতে কোনো একটা দুর্বল মুহূর্তে ঘটে যায় এই বিষয়টি। পরে যখন তারা নিজের ভুল বুঝতে পারে, ততক্ষণে পার হয়ে যায় অনেকটা সময়। এই সম্পর্ক থেকে বন্ধুত্বে ভাঙন তো অনিবার্য, পরবর্তীতে নিজের অন্যান্য প্রেমের সম্পর্কেও তৈরি হয় অশান্তি।

মিথ্যা বন্ধুত্ব

অবাক লাগলেও সত্যি যে নারী পুরুষের বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে অনেক সময়েই স্বার্থের বিষয়টি মাঝে এসে পড়ে। অনেক সময়েই দেখা যায় যে সমাজে কিংবা বন্ধুমহলে দাম বাড়ানোর জন্য মানুষ বিপরীত লিঙ্গের জনপ্রিয় কারো সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। আবার অনেকে ছেলেই ক্লাস নোট পাওয়ার আশায় মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে। কারণ সাধারণত ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পড়াশোনায় বেশি মনোযোগী হয়। আবার অনেক নারীই নিজের নিরাপত্তাজনিত কারণে পুরুষের বন্ধুত্ব কামনা করে। এছাড়াও নারী-পুরুষ বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে আরো নানান স্বার্থ জড়িত থাকতে পারে।

নির্ভরতা

সারাক্ষণ দুজন বন্ধু একসঙ্গে সময় কাটানোর কারণে একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। ক্লাসে যেতে, শপিং-এ যেতে কিংবা বেড়াতে যেতে সব যায়গাতেই বন্ধুটির উপস্থিতি একটি আবশ্যিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কোনো কাজই তাকে ছাড়া চিন্তা করা যায় না। অর্থাৎ নিজের উপর থেকে স্বাবলম্বিতা কমে যায় এবং বন্ধুর উপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যায়। এই নির্ভরতা কখনো কখনো নিজের প্রেমিক-প্রেমিকা বা জীবনসঙ্গীর চাইতেও বেশি হয়। অথচ সম লিঙ্গের দুজন বন্ধুর মাঝে কিন্তু এই দারুণ নির্ভরশীলতা কখনো তৈরি হয় না।

ঈর্ষা

দুজনের বন্ধুত্ব যখন বেশ কিছুটা সময় পার করে ফেলে তখন একজনের কাছে আরেকজনের প্রত্যাশাও বেড়ে যায়। একজনের উপর আরেকজনের অধিকার খাটানোর বিষয়টি যখন অনেক গুরুতর আকার ধারণ করে তখন বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। এমনকি এরকম অবস্থায় বন্ধুর প্রেমিক/প্রেমিকাকেও অসহ্য লাগা শুরু হয় এবং ঈর্ষা সৃষ্টি হয় মনে। যদিও অধিকার ফলানোর বিষয়টি সাধারণত মনের অজান্তেই করে থাকে সবাই। আর তাই কেউ বিষয়টি স্বীকার করতে চায় না। আবার এই ক্রমশ বেড়ে ওঠা ঈর্ষা থেকে বন্ধুত্বে ভাঙন ঘটাও খুব স্বাভাবিক। এবং বলাই বাহুল্য যে সম লিঙ্গের বন্ধুদের মাঝে এই অদ্ভুত ঈর্ষা সাধারণত আসে না।