ছবি সংগৃহীত

জেনে নিন সানস্ক্রিন ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও পরিত্রাণের উপায়

Nisheta
লেখক
প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০১৫, ১৪:২০
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫, ১৪:২০

(প্রিয়.কম) আজকাল সুর্যটা যেন কারো কথাই শুনছে না। প্রচন্ড গরমে জীবন হাপিয়ে উঠেছে। তবু কর্মজীবন বা শিক্ষাজীবন তো আর থেমে থাকে না। এই গরমেই তাই বাধ্য হয়ে বের হতে হয় ঘরের বাইরে। এই রৌদ্রজ্জ্বল দিনে আনুষঙ্গের কথা বলতেই সবার প্রথমে আসে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিমের কথা। কিন্তু জানেন কি এই উপকারী জিনিসটি আপনার ত্বক বা দেহের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আসুন তবে জেনে নেওয়া যাক সানস্ক্রিন লোশনের ৫টি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও এর সমাধান।

১। এলার্জি

সানস্ক্রিন লোশনে কিছু রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত থাকে যা আপনার ত্বকের জন্য এলার্জির সৃষ্টি করতে পারে। ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, ত্বকে চুলকোনী হওয়া ইত্যাদির কারন হতে পারে সানস্ক্রিন।  PABA নামক উপাদান যে সকল সান্সক্রিনে আছে সেগুলো বিশেষ করে এলার্জির কারন হয়ে দাঁড়ায়। অনেক নামকরা সানস্ক্রিন লোশন থেকে এই উপাদান তাই বাদ দেয়া হয়েছে।

আপনি যখন সানস্ক্রিন লোশন কিনবেন তখন খেয়াল করবেন এর গায়ে ‘hypoallergenic’ কথাটি আছে কিনা। এর মানে হল সেই সানস্ক্রিনে PABA নামক উপাদানটি অনুপস্থিত। যেসব সান্সক্রিনে জিঙ্ক অক্সাইড রয়েছে সেগুলো ব্যবহারের জন্য ভালো। কারন পরীক্ষায় দেখা গেছে এ ধরনের সানস্ক্রিন ত্বকে এলার্জির সৃষ্টি করে না। আর তারপরও যদি সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহারে আপনার ত্বকে এলার্জির সমস্যা হয় তবে তা ব্যবহার না করাই উত্তম।

২। ব্রণ যুক্ত ত্বকের ক্ষতির কারণ

আপনার ত্বকে যদি খুব বেশি পরিমান ব্রণ থাকে তবে জেনে রাখুন, সানস্ক্রিনে রয়েছে এমন বেশ কিছু উপাদান যা আপনার এই ব্রণ সমস্যাকে আরো বাড়াবে।  এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সানস্ক্রিন কেনার সময় non-comedogenic এবং  non-oily লেখা সানস্ক্রিন কিনুন। আপনার ত্বকের ধরণ বুঝে সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন। শরীরের জন্য নির্বাচিত সানস্ক্রিন লোশন, মুখের ত্বকে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। সেগুলো বেশ ভারী এবং আপনার মুখের পাতলা ত্বকের ক্ষতির কারণ।

৩। চোখ জ্বলা

চোখের ভেতর সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম প্রবেশ করা চোখ ব্যথা ও জ্বালার কারন হতে পারে।  কেমিকেলযুক্ত বেশ কিছু সানস্ক্রিন ক্রিম আপনার চোখের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এমনকি আপনার অন্ধত্বের কারনও হতে পারে! তাই ভুল করেও চোখে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম প্রবেশ করলে ঠান্ডা পানি দিয়ে জলদি ধুয়ে ফেলুন এবং যত তাড়তাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৪। স্তন ক্যান্সারের হার বৃদ্ধি করে

কেমিকেলযুক্ত সানস্ক্রিন লোশনে এমন উপাদান থাকে যা স্তন ক্যান্সারের কোষের উপর প্রভাব ফেলে। এছাড়া এই রাসায়নিক পদার্থগুলো রক্তের ইস্ট্রোজেন এর মাত্রার উপরও প্রভাব ফেলে।  শিশুদের ত্বকে সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কারন রাসায়নিক পদার্থগুলো ত্বকের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ক্ষতি করতে পারে।

৫। চুলযুক্ত স্থানে ফুসকুড়ি সৃষ্টি

সানস্ক্রিন বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এই যেমন লোশন, ক্রিম, স্প্রে, জেল ইত্যাদি। চুলযুক্ত স্থান যেমন পুরুষের বুকে সানস্ক্রিন হিসেবে জেল ব্যবহার করা উচিৎ। অন্যথায় দেখা যায় সানস্ক্রিন লোশন চুলযুক্ত স্থানে র‍্যাশ, ফুসকুড়ির সৃষ্টি করে। অনেক সময় এগুলোতে পুঁজ জমে এবং ত্বক ফেটে যায়।

সানস্ক্রিন ক্রিমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধে করনীয়

  • সানস্ক্রিন লোশন দিলে যদি ত্বক জলে তবে সাথে সাথে ধুয়ে ফেলুন এবং সেই লোশন বা ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করুন।
  • নতুন সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম নির্বাচনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • ঘরের বাইরে থাকলে ২ ঘন্টা অন্তর অন্তর সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন।
  • ঠোটের জন্য নির্বাচিত সানস্ক্রিন কেবল ঠোঁটেই ব্যবহার করুন।
  • ৬ মাসের কম বয়সী শিশুর ত্বকে সানস্ক্রিন লোশন বা জেল দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • আপনার ত্বক তৈলাক্ত হলে oil-free এবং non comedogenic সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন।

এবার থেকে জেনে বুঝে আপনার ত্বকের জন্য পার্ফেক্ট সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম বেছে নিন আর ত্বককে ভালো রাখুন।

রেফারেন্সঃ স্টাইল ক্রেজ