
ছবি সংগৃহীত
কোরবানির অর্থ ও প্রচলন
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১২:৩৬
কোরবানির অর্থ ও প্রচলন আরবী কুরবান শব্দটি ফারসী বা ঊর্দূতে কোরবানি রূপে পরিচিত হয়েছে, যার অর্থ নৈকট্য। আর কুরবান শব্দটি কুরবাতুন শব্দ থেকে উৎপন্ন। আরবী কুরবাতুন এবং কুরবান উভয় শব্দের শাব্দিক অর্থ নিকটবর্তী হওয়া, কারো নৈকট্য লাভ করা প্রভৃতি। ইসলামী পরিভাষায় কোরবানি ঐ মাধ্যমকে বলা হয়, যার দ্বারা আল্লাহ রাববুল আলামীনের নৈকট্য অর্জন ও তার ইবাদতের জন্য পশু জবেহ করা হয়। (মাজদুদ্দীন ফীরোযাবাদী, আল-ক্বামূসুল মুহীত্ব, পৃ. ১৫৮; মুফরাদাত লি ইমাম রাগিব ৩/২৮৭; তাফসীরে কাশশাফ, ১/৩৩৩; রায়যাবী, ১/২২২। আরবীতে কোরবানি শব্দটি ব্যবহৃত হয় না। তাই কুরআনে কোরবানির বদলে কুরবান শব্দটি মোট তিন জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে যেমন১. নং সূরা আল ইমরানের ১৮৩ নং আয়াত, ২. নং সূরা মায়িদার ২৭ নং আয়াত এবং ৩. নং সূরা আহক্বাফের ২৮ নং আয়াত। অনুরূপভাবে হাদিসেও কোরবানি শন্দটি ব্যবহৃত না হয়ে তার পনিবর্তে উযহিয়্যাহ এবং যাহিয়্যাহ প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। উযহিয়্যাহ কোরবানির দিনসমূহে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে জবেহ যোগ্য উট, গরু, ছাগল বা ভেড়াকে বলা হয়। এ শব্দটি যুহা শব্দ থেকে গৃহীত যার অর্থ পূর্বাহ্ণ। যেহেতু কোরবানি যরেহ করার উত্তম সময় হলো ১০যিলহজ্জের (ঈদের দিনের) পূর্বাহ্ণকাল, তাই ঐ সামঞ্জস্যের জন্য তাকে উযহিয়্যাহ বলা হয়েছে। এটিকে আবার যাহিয়্যাহ বা আযহাও বলা হয়। আর আযহাহ এর বহুবচন হলো আযহা, যার সাথে সম্পর্ক জুড়ে ঈদের নাম হয়েছে ঈদুল আযহা। বলা বাহুল্য, ঈদুযযোহা কথাটি ঠিক নয়। মূলত ফারসী, হিন্দী, উর্দূ ও বাংলা ভাষায় আরবি কুরবান শব্দটি কোরবানি অর্থে ব্যহৃত হয়। বাংলার মুসলিমরাও কোরবানি শব্দটির সাথে বেশ পরিচিত। বর্তমানে আমাদের নিকটে কোরবানির পশুকেই বিশেষভাবে কুরবান বলা হয়। (তাফসীরে আল-মানার, ৬/৩৪২) পরিশেষে ঐ জবেহকৃত পশুকেই কুরবান বলা হয়, যা লোকেরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য পেশ করে থাকে। (তাফসীরে মাযহারী, ২/১৮৮) ভারতীয় উপমাহাদেশ তথা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে কোরবানি বলতে বোঝায় যিলহজ্জ মাসের ১০ (দশ) থেকে ১২ (বারো) বা ১৩ তের) তারিখ আসর পর্যন্ত আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে উট, গরু, বকরী ও ভেড়া প্রভৃতির মধ্য হতে কোনো এক পশুকে জবেহ করা। লেখক : ড. মো. আবদুল কাদের সম্পাদনায় : ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী সৌজন্যে : ইসলামহাউজ