ছবি সংগৃহীত

উপকারী সবজি ঢেঁড়স

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ০২ জুলাই ২০১৩, ০৫:৪৩
আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৩, ০৫:৪৩

ঢেঁরশ বাংলাদেশের জনপ্রিয় সবজিগুলোর মধ্যে একটি। ঢেঁরশ ভাজি দিয়ে গরম ভাত খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। ঢেঁরশ মূলত শীতকালের সবজি হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্ষার শুরু থেকেই ঢেঁরশ বাজারে সহজলভ্য হয়ে যায়। ঢেঁরশের ভাজি তো বটেই ঢেঁরশের অন্যান্য তরকারি, ডাল, চচ্চড়ি, ভর্তাও সমান জনপ্রিয়। ঢেঁরশের ইংরেজি নাম হলো Okra। তবে ঢেঁরশ Lady's fingers, Gumbo, Bhindi ইত্যাদি নামেও পরিচিত। ঢেঁরশের Okra নামটি যুক্তরাষ্ট্রে বেশি ব্যবহৃত হয়, তবে উচ্চারণ একেক জায়গায় একেক রকম। Okra শব্দটি এসেছে আফ্রিকার Igbo ভাষা থেকে। ঢেঁরশের বৈজ্ঞানিক নাম Abelmoschus esculentus অথবা Hibiscus esculentus L।

ঢেঁরশ বর্ষজীবী উদ্ভিদ। গাছ প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। গাছের গা থাকে ছোট ছোট খসখসে রোঁয়াযুক্ত। পাতার রং গাঢ় সবুজ এবং ১০-২০ সে.মি. লম্বা। গাছের মতো পাতাও খানিকটা খসখসে হয়। গাছে হালকা ঘিয়া বা সাদাটে ফুল ফোটে। ফুলের মাঝে থাকে লাল বা গোলাপি রঙের ছিটে। পাঁচটি পাপড়ি সম্বলিত ফুলগুলো দেখতে বেশ সুন্দর হয়। ফুল থেকে গাঢ় সবুজ রঙের ঢেঁরশ হয়। ঢেঁরশের গায়েও ছোট ছোট রোঁয়া থাকে। আঙুলের মতো দেখতে এই সবজিটি ১৬ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। ঢেঁরশের ভেতরে অসংখ্য সাদা রঙের গোল গোল বীজ থাকে। ঢেঁরশ কচি অবস্থাতেই খাওয়ার উপযুক্ত থাকে। পরিপক্ব ঢেঁরশ খাওয়ার উপযুক্ত নয়। পরিপক্ব ঢেঁরশের বীজ থেকে এক ধরনের তেল তৈরি করা হয়, যা খুবই উপকারী। ঢেঁরশের আদি নিবাস কোথায়, তা নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। ধারণা করা হয় যে, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ এশিয়া অথবা পূর্ব আফ্রিকার কোথাও ঢেঁরশের উত্‍পত্তি। তবে বেশির ভাগ উদ্ভিদ বিজ্ঞানীর ধারণা ইথিওপিয়ার উচ্চ ভূমিতে ঢেঁরশের আদি নিবাস। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১২শ ও ১৩শ শতকের মিশরীয় ও মূর ভাষার রচনায় ঢেঁরশের কথা উল্লিখিত রয়েছে। ধারণা করা হয়, প্রাচ্য থেকেই ঢেঁরশ এখানে এসেছে। ১২১৬ সালে এক স্পেনীয় মূর ব্যক্তির লেখনী থেকে জানা যায়, মিশরীয় ব্যক্তিরা ঢেঁরশ আটার সাথে মিশিয়ে খেত। পরে সেখান থেকে ঢেঁরশ পূর্ব দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টের জন্মের পর ভারতবর্ষে ঢেঁরশের আগমন ঘটে। উত্তর আমেরিকায় ঢেঁরশের আগমন ঘটে ১৮শ শতকের শুরুর দিকে। ঢেঁরশ স্বাদে যেমন চমত্‍কার, তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম কচি ঢেঁরশে রয়েছে -
খাদ্যশক্তি- ৩৩ কিলোক্যালরি শর্করা- ৭.৪৫ গ্রাম চিনি- ১.৪৮ গ্রাম খাদ্যআঁশ- ৩.২ গ্রাম চর্বি- ০.১৯ গ্রাম আমিষ- ২.০০ গ্রাম জলীয় অংশ- ৯০.১৭ গ্রাম ভিটামিন এ- ৩৬ আইইউ থায়ামিন- ০.২ মিলিগ্রাম রিবোফ্লেভিন- ০.০৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন- ১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি- ২৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই- ০.২৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন কে- ৩১.৩ আইইউ ক্যালসিয়াম- ৮২ মিলিগ্রাম আয়রন- ০.৬২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম- ৫৭ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম- ২৯৯ মিলিগ্রাম জিংক- ০.৫৮ মিলিগ্রাম ঢেঁরশ মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি সবজি। এতে রয়েছে এমন সব পুষ্টি উপাদান, যা মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। রোগ প্রতিরোধেও ঢেঁরশ তুলনাহীন। যেমন -
  • ঢেঁরশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • ঢেঁরশ শিশুদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও জিংক। এসব পুষ্টি উপাদান শিশুর হাড় গঠন ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য খুবই জরুরি।
  • এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এবং এ। ভিটামিন সি দাঁত, মাঢ়ি ও ত্বকের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং ভিটামিন এ চোখের যাবতীয় রোগ প্রতিরোধ করে।
  • ঢেঁরশে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা অন্ত্র, পাকস্থলী ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ঢেঁরশে বিদ্যমান খাদ্যআঁশ পেট পরিষ্কার রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
ঢেঁরশ মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি সবজি। এতে রয়েছে এমন সব পুষ্টি উপাদান, যা মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। রোগ প্রতিরোধেও ঢেঁরশ তুলনাহীন। যেমন-
  • ঢেঁরশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • ঢেঁরশ শিশুদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও জিংক। এসব পুষ্টি উপাদান শিশুর হাড় গঠন ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য খুবই জরুরি।
  • এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এবং এ। ভিটামিন সি দাঁত, মাঢ়ি ও ত্বকের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং ভিটামিন এ চোখের যাবতীয় রোগ প্রতিরোধ করে।
  • ঢেঁরশে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা অন্ত্র, পাকস্থলী ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ঢেঁরশে বিদ্যমান খাদ্যআঁশ পেট পরিষ্কার রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।