
ছবি সংগৃহীত
ইসলামে অসহায় মানুষকে সহযোগিতার গুরুত্ব
আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ০০:১৮
হজরত আনাস [রা.] বর্ণনা করেন, রাসুল [সা.] বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো দুঃখী, অসহায় উম্মতের হৃদয় খুশি করে, সে যেন আমার অন্তরই খুশি করে। আর যে আমাকে খুশি করল, সে যেন আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করল। যে আল্লাহকে খুশি করল, তাকে আল্লাহপাক জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে, যখন কেউ অন্যের কোনো দুঃখ-বেদনা দূর করা বা তার কোনো প্রয়োজন পূরণ করার জন্য চেষ্টা করে, আল্লাহপাক জাহান্নামকে তার থেকে তিন খন্দক পরিমাণ দূর করে দেন [এক খন্দকের পরিমাণ আসমান ও জমিনের ফাঁকা জায়গা]। অন্যত্র রাসুল [সা.] বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো দুঃখী ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সমবেদনা ও সাহায্য করে, আল্লাহপাক তার আমলনামায় ৭৩টি মাগফিরাত লিখে দেন। একদিন একজন ক্ষুধার্ত ও বিপন্ন ব্যক্তি রাসুল [সা.]-এর কাছে সাহায্য চায়। নবিজি [সা.]-এর হাতে তখন দান করার মতো কিছুই ছিল না। তখন তিনি সেই লোকটিকে বললেন, যাও আমার নামে কারো থেকে ধার করে নিয়ে যাও। পরে আমি দিয়ে দেব। হজরত ওমর [রা.] সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তিনি বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এতখানি ভার বহন করার কী প্রয়োজন ছিল! তিনি চুপ থাকলেন, তখন উপস্থিত একজন দুঃখী ব্যক্তিকে ঋণ দিলে রাসুল [সা.] ব্যাপক খুশি হন। হাদিস শরীফে রাসুল [সা.] বলেছেন, দ্বীন হলো অপরের কল্যাণকামিতার নাম। ইসলামে মৌলিক মানবিয় গুণাবলির মধ্যে সামাজিক বন্ধন এবং পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা অন্যতম। দুর্বল অসহায় মানুষের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনার গুণাবলিকে ইসলাম সর্বদা উৎসাহ দেয়। বিশ্বমানবতার নবি মুহম্মদ [সা.] দুঃখী ও বিপন্ন মানুষের সহায়তার ক্ষেত্রে সদা প্রস্তুত থাকতেন। কাফেরদের প্রতি তার দয়া ও সহমর্মিতার হাত অনেক প্রসারিত ছিল। এক হাদিসে রাসুল [সা.] বলেন, একজন মুসলমান যখন তার অপর ভাইয়ের অসুস্থতায় সমবেদনা জানাতে তাকে দেখতে যায় এবং তার কাছে অবস্থান করে যতক্ষণ না সে ফিরে আসে, সে যেন জান্নাতের বাগানেই ততক্ষণ অবস্থান করে। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আলী [রা.] বলেছেন, দুঃখী ও বিপন্ন মানুষের কান্না শুনে যদি কেউ এগিয়ে না আসে, তবে একদিন এমন হতে পারে যে, সেও কাঁদবে অথচ তখন কেউ এগিয়ে আসবে না। রাসুল [সা.] বলেন, যে মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করে না, আল্লাহ তার প্রতিও অনুগ্রহ করেন না। আর যারা দুঃখী মানুষকে সমবেদনা জানায়, তাদের সহযোগিতা করে, তাদের প্রয়োজন পূরণ করে দেন। তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, অনুগ্রহকারীদের প্রতি দয়াময় আল্লাহ অনুগ্রহ করেন। যেমন হাদিসে রয়েছে, তোমরা পৃথিবীবাসীকে অনুগ্রহ কর, তাহলে আসমান-জমিনের মালিক তোমাদেরও অনুগ্রহ করবেন। [আবু দাউদ] মাওলানা মিরাজ রহমান