
ছবি সংগৃহীত
আল-হাদিসের পরিভাষা পরিচিতি -৪ : সনদ, মতন
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ০৩:০৮
সনদ, মতন ইত্যাদি শব্দগুলো পৃথক পৃথক পরিভাষা হলেও একটি অপরটির সাথে সম্পৃক্ত । তাই একটি উদাহরণ দ্বারা প্রত্যেকটি শব্দের অর্থ ও ব্যবহার স্পষ্ট করছি, যেন পাঠকবর্গ সহজে বুঝতে পারেন। সনদ ও মতন : হাদিসের দু’টি প্রধান অংশ: সনদ বলা হয় রাসুল সা. থেকে লেখক/ মুহাদ্দিস পর্যন্ত হাদিসটি যে সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, এই বর্ণনা সূত্রকে। আর বর্ণনাসূত্রের মাধ্যমে বর্ণিত মূল কথা টুকু হল মতন। উদাহরণ : এখানে উদাহরণসরূপ বুখারি শরীফের একটি হাদিস সনদ ও মতন সহ পেশ করা হল : حدثنا عبد الله بن يوسف قال أخبرنا مالك عن أبي الزناد عن الأعرج عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : لولا أن أشق على أمتي أو على الناس لأمرتهم بالسواك مع كل صلاة- এ হাদিস ইমাম বুখারি বর্ণনা করেছেন। এখানে ইমাম বুখারির (১৯৪-২৫৬হি.) উস্তাদ আব্দুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ (২১৮হি.), তার উস্তাদ মালিক (৮৯-১৭৯হি.), তার উস্তাদ আবুয যিনাদ (৬৫-১৩১হি.), তার উস্তাদ আ‘রাজ (১১৭হি.), তার উস্তাদ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু (৫৭হি.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যদি আমার উম্মতের উপর কষ্ট না হত, অথবা [বলেছেন] মানুষের উপর, তাহলে আমি অবশ্যই তাদেরকে প্রত্যেক সালাতের সাথে মিসওয়াকের নির্দেশ দিতাম”। বিশ্লেষণ : এ হাদিসে ইমাম বুখারির উস্তাদ আব্দুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ থেকে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু পর্যন্ত অংশকে سَنَد ‘সনদ’ বলা হয়। নবি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদিসের অবশিষ্ট অংশকে مَتْن ‘মতন’ বলা হয়। হাদিসের মতন ও সনদ একটির সাথে অপরটি ওতপ্রোত জড়িত। সনদ ব্যতীত মতন হয় না, মতন থাকলে অবশ্যই তার সনদ আছে। তবে একটি ‘সহিহ’ হলে অপরটি ‘সহিহ’ হওয়া জরুরি নয়। কখনো সনদ সহিহ হয়, কারণ সহিহর সকল শর্ত তাতে বিদ্যমান, যেমন সনদ মুত্তাসিল, রাবিগণ আদিল ও দ্বাবিত, তবে মতন শায বা ‘ইল্লতের কারণে সহিহ নয়। কখনো মতন সহিহ হয়, তবে রাবির দুর্বলতা বা ইনকিতা‘ (বর্ণনাপরম্পরা কাটা পড়া) এর কারণে সনদ সহিহ হয় না। সনদ ও মতন উভয় সহিহ হলে হাদিস সহিহ। মুফতি মনিরুল ইসলাম মুহাদ্দিস, জামিয়া ফারুকিয়া রওজাতুল উলুম, মুন্সীগঞ্জ।