
ছবি সংগৃহীত
আমরা দেশকে রক্ষা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত আছি: প্রিয়.কমকে নারী হ্যাকার বারবি হ্যাক্সর
আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৩, ১৩:১৮
(প্রিয় টেক)বাংলাদেশে হ্যাকারদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। হ্যাকার গ্রুপে এখন নারী হ্যাকারদেরও পদচারনা বাড়ছে। হ্যাকারদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অনেক কৌতূহল। কিন্তু তাদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানার সুযোগ কম। সম্প্রতি বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস গ্রুপের নারী সদস্য "বারবি হ্যাক্সর" এর সাথে টেলিফোনে কথা হয়। বাংলাদেশের হ্যাকিং ও হ্যাকারদের সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন। তবে তিনি কোন কিছু বিস্তারিত বলতে চাননি। গুগলে খোঁজ করে হ্যাকার হিসেবে তার একটি ফেসবুক পেজের সন্ধান পাওয়া গেছে, তবে সেখানে তার এক্টিভিটি লক্ষ্য করা যায়নি। ফেসবুক পেজ ঠিকানা।
প্রিয় টেক: আপনি কবে হ্যাকার দলের সদস্য হয়েছেন এবং কেন?
বারবি হ্যাক্সর: ১১ মাস আগে জয়েন করেছি। আমি জয়েন করেছি মূলত বাংলাদেশের সাইবার রক্ষা করার জন্য। ভারত, পাকিস্তান আর মিয়ানমার মিলে আমাদের সাইবারে হামলা করার কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ছি। এটা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা শুধু আমাদের রক্ষাই করিনা, বরং সময় মতো তাদের সমীচীন জবাবও দেই।
প্রিয় টেক: হ্যাকিং তো আইনত অপরাধ। তারপরেও আপনারা হ্যাকিং করছেন। হ্যাকিং করে নিজেকে কি কখনও অপরাধী মনে হয়েছে?
বারবি হ্যাক্সর: উত্তর দিবো। তার আগে আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিন, আপনার ঘরে যদি কেউ আক্রমণ করে তাহলে তা রক্ষা করা কি আপনার অপরাধ হবে? ভারত বা মিয়ানমার যখন আমাদের ওপর হামলা করে তখন আমাদের কি চুপ থাকা উচিৎ? তাদেরটা কেন অপরাধ মনে হয় না? আর আমাদের সরকারই বা কেন আমাদের সাইবার রক্ষা করতে পারছে না? জানি আপনি আপনার উত্তর পেয়ে গেছেন।
প্রিয় টেক: আপনাদের নিয়মিত কার্যাবলী এবং কার্যক্রম কিভাবে পরিচালনা করেন? কোথায় বসেন? বা আপনাদের কি কোন কার্যালয় আছে?
বারবি হ্যাক্সর: আমাদের কার্যক্রম নির্ধারণের একমাত্র জায়গা ফেসবুক। এর বাইরে আমাদের খুব একটা যোগাযোগ হয় না। তবে প্রয়োজন হলে আমরা একত্রিত হয়। তাও নির্ধারিত হয় ফেসবুকে বসে। কেউ সেখানে না আসলে তাকে ফেসবুকেই জানিয়ে দেওয়া হয়।
প্রিয় টেক: এখন আপনাদের সদস্য কতজন/ আরও কতজনকে নেবেন?
বারবি হ্যাক্সর: আমাদের বর্তমান সদস্য প্রায় ৫০ জন। আমাদের সংগঠনের জন্ম মাত্র এক বছরও হয়নি। কিন্তু আমাদের সদস্য সে তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে। আর আমাদের কোন টার্গেট নেই যে কতজনকে নেবো। হ্যাকিং সম্পর্কে জানা আছে বা আগ্রহ আছে এমন যে কেউ আমাদের সাথে যোগ দিতে পারেন।
প্রিয় টেক: আপনাদের সদস্য হওয়ার উপায় কি?
বারবি হ্যাক্সর: আগেই বলেছি হ্যাকিং সম্পর্কে জানা আছে বা আগ্রহ আছে এমন যে কেউ আমাদের সাথে যোগ দিতে পারেন। কিন্তু আমরা সব সময় লোক নেই না। কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে আমরা আমাদের ফেসবুক পেজে আগ্রহীদের এক্টিভিটি দেখে তারপর তাদেরকে আমাদের দলে নিই। তাদেরকে প্রাথমিক অবস্থায় প্রশিক্ষণ নিয়ে তারপর তাদের কার্যক্রম শুরু করি।
প্রিয় টেক: আপনি ছাড়া আপনাদের গ্রুপে নারী সদস্য কতজন আছেন? একজন নারী হ্যাকার হিসেবে আপনার অনুভূতি কি?
বারবি হ্যাক্সর: আমাদের গ্রুপে আমি ছাড়া আরও ৪ জন নারী হ্যাকার আছেন। যখন কোন সফল হ্যাকিং শেষ হয় তখন নিজের কাছে খুব ভালো লাগে।
প্রিয় টেক: আপনারা কি দেশি সাইটও হ্যাক করেন?
বারবি হ্যাক্সর: না। আমরা আমাদের দেশকে ভালবাসি। তাহলে দেশি সাইট হ্যাক করবো কেন? যেসব দেশ আমাদের দেশের সাইটের ওপর হামলা করে আমরা তাদের জবাব দিতে তাদের সাইট হ্যাক করি। আর আমাদের হ্যাকিং হওয়া সাইট অনেক সময় দেখা যায় দীর্ঘ দিনেও ঠিক করা হয় না। এক্ষেত্রে নতুন পুরানা যখন যে দেশি হ্যাক সাইট পাই, তা আমরা আমাদের নিজ দায়িত্বে ঠিক করে দেই। আর এ জন্য বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স গত বছর আমাদেরকে স্বাগত জানিয়েছিল।
প্রিয় টেক: আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের জানান।
বারবি হ্যাক্সর: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আগে জানাতে চাই, আপনারা হ্যাকিংকে খারাপ চোখে দেখবেন না। হ্যাকিং মানেই খারাপ কিছু নয়। আর আমাদের দূরবর্তী কোন প্লান নেই। যখন যেখানে আমাদের প্রয়োজনীয়তা হয়, তখন প্লান করা হয় যে আমাদের কার কি দায়িত্ব? আমরা বরাবর দেশকে ভালবেসেছি এবং ভালবেসে যাবো। আমাদের দেশের ওপর কেউ আঘাত করলে আমরা বসে থাকবো না। আমরা দেশকে রক্ষা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত আছি।