ছবি সংগৃহীত

অ্যান্ড্রয়েডের জন্য সেরা কিছু ব্রাউজার

আবীর হাসান
লেখক
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০১৬, ১৬:৫৫
আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৬, ১৬:৫৫

আমরা যারা অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী আছি তারা ব্রাউজিং-এর জন্য ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন রকম ব্রাউজার। কেউ বা এমন ব্রাউজার ব্যবহার করে থাকেন যেগুলোয় ইন্টারনেট ডাটা তুলনামূলক ভাবে কিছুটা কম খরচ হয়ে থাকে, আবার কেউ কেউ ব্যবহার করে থাকেন ফাস্ট ব্রাউজার যার মাধ্যেমে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করা যায়। আবার অনেকেই আছেন কোনটি আসলে ভালো সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারায়। আর তাই আজ লিখতে বসলাম অ্যান্ড্রয়েডের সেরা কিছু ব্রাউজার সম্পর্কে যেগুলো হয়তবা আপনার ব্রাউজিং এক্সপেরিয়েন্স কিছুটা হলেও বদলে দিতে পারে। তাহলে চলুন, কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আজকের মূল লেখাটি। 

নোট - সবচাইতে বহুল জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড ব্রাউজারগুলি হচ্ছে ক্রোম, ফায়ারফক্স, ইউসি ব্রাউজার এবং ডলফিন ব্রাউজার। তাই আমি নতুন কিছু ব্রাউজার নিয়েই আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি আজ তাই আমার তালিকায় উপরের ব্রাউজারগুলোকে রাখিনি। 

অপেরা 

অপেরার একটি চমৎকার শ্লোগান রয়েছে এবং শ্লোগানটি হচ্ছে, 'Do more online with Opera for Android', এবং এই শ্লোগানে যে অনেকেই বিশ্বাস রাখেন তার সত্যতার দেখা মেলে প্লে স্টোর থেকে এর ডাউনলোড হওয়ার সংখ্যার মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই গুগগলে প্লে স্টোর থেকে অপেরা ব্রাউজারটি ডাউনলোড করা হয়েছে প্রায় ৫০ মিলিয়নেরও বেশি সংখ্যক বার। কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য অপেরা ব্রাউজার প্রায় ২০ বছর সেবা প্রদান করে আসছে এবং মজার বিষয় হচ্ছে কম্পিউটারের ভার্সনটির প্রায় সকল সুবিধাই একজন ব্যবহারকারী অপেরার অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনেও উপভোগ করতে পারবেন। 

অপেরা ব্রাউজারটি একাধিক ডিভাইসের সাথে ব্রাউজিং ডাটা সিংক্রোনাইজ করতে সক্ষম ফলে আপনি ব্রাউজারটি একাধিক ডিভাইসে ব্যবহার করলেও সকল ব্রাউজিং ডাটা একটি স্থানেই পাবেন। তবে, অপেরার যে ফিচারটি ব্যবহারকারীরা সবচাইতে বেশি পছন্দ করেছে তা হচ্ছে এর ডাটা-সেভিং ফিচারটি যা আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে খুবই সহজে ব্যবহার করতে পারবেন। অপেরা ব্রাউজারের সাহায্যে আপনি যখন কোন ভিডিও দেখবেন তখন ব্রাউজারটি সেই ভিডিওটিকে কম্প্রেস করে থাকে ফলে আপনার তুলনামূলক ভাবে কম ডাটা খরচ করতে হয় তবে এতে যে ভিস্যুয়াল পার্থক্য দেখা যায় তা খুবই সামান্য, বলতে গেলে আপনি বুঝতেও পারবেন না। 

হ্যাঁ, ব্রাউজারটিকে সবচাইতে ফাস্ট ব্রাউজার হিসেবে বলা না গেলেও ব্রাউজ করার সময় এটি যখন একটি পেজ পুরোপুরি লোড করে নেয় তখন আবার আপনাকে উক্ত পেজের কোন  কনটেন্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবেনা যা মাঝে মাঝে অন্যান্য ব্রাউজারের কিছুটা বিরক্তির সৃষ্টি করে থাকে। 

ডাউনলোড লিংক - গুগল প্লে স্টোর। 

এপিইউএস ব্রাউজার 

এপিইউএস (APUS) নামটি মূলত বিখ্যাত এর লঞ্চারের জন্য তবে বর্তমানে আপনি নেট বা প্লে স্টোর ঘাটলেই এপিইউস ব্রাউজারটি দেখতে পারবেন। ইতোমধ্যেই ব্যবহারকারীরা এই ব্রাউজারটি বেশ পছন্দ করছে এবং এর মূল কারণ মূলত ব্রাউজারটির লাইটওয়েট, ব্রাউজারটি মাত্র ৬ মেগাবাইটের। ব্রাউজারটির ইন্টারফেস বেশ সহজ এবং এটিও অন্যতম কারণ হতে পারে। তবে, সিম্পল ইন্টারফেস এবং লাইটওয়েট দেখেই 'কম ফিচারের ব্রাউজার' ভেবে বসার কিন্তু কোন কারণ নেই। ব্রাউজারটিতে স্বাভাবিক ফিচারের পাশাপাশি বেশ কিছু অ্যাডিশনাল ফিচারও রয়েছে যার ফলে হয়তবা আপনি অবাকও হয়ে যাবেন।  

ব্রাউজারটির একটি ফিচার আমার বেশ ভালো লেগেছে যেটি হচ্ছে আপনি যখনই এই ব্রাউজারটি ব্যবহার করার সময় কোন টেক্সট কপি করবেন তখনই ব্রাউজারটি সেই টেক্সটুকু ইন্টারনেটে সার্চ করার জন্য আপনাকে প্রম্পট করবে। এটি আসলেই বেশ কাজের, কেননা হঠাত কোন অচেনা বিষয় সম্পর্কে দ্রুত জানার জন্য এই ফিচারটি বেশ সহায়ক।

ব্রাউজারটি এছাড়াও ডাটা সংরক্ষণের জন্যেও বেশ কিছু ফিচার প্রদান করে থাকে। আর যেহেতু ব্রাউজারটি একটি ফ্রি ব্রাউজার তাই আমি মনে করি একবার ডাউনলোড করে দেখাই যায় - কি বলেন? 

ডাউনলোড লিংক - গুগল প্লে স্টোর। 

 

ক্রোম বেটা

অনেকেই ক্রোমের সাথে এই ব্রাউজারটিকে মিলিয়ে ফেলতে পারেন তাই আগেই বলে দিচ্ছি এটি মূলত আপনাদের পরিচিত রেগুলার ক্রোম নয়, কথা বলছি ক্রোমের আরও একটি ভালো বেটা ভার্সন নিয়ে। 

ক্রোম বেটা ভার্সনে আপনি বেশ কিছু নতুন সুবিধা পাবেন যা রেগুলার ক্রোমে তখনই দেয়া হয়ে থাকে যখন সেই ফিচারগুলো স্ট্যাবল প্রমাণিত হয়। মজার বিষয় হচ্ছে ক্রোম বেটার মাধ্যমে আপনি সেই নতুন ফিচারগুলো ব্যবহার করার পাশাপাশি ফিচারগুলো সম্পর্কে আপনার নিজস্ব মতামত বা ফিডব্যাকও প্রদান করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ, বিভিন্ন স্মার্টফোনে ক্রোম বেটা ভার্সনটি কিছুটা স্ট্যাবিলিটি সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। 

ডাউনলোড লিংক - গুগল প্লে স্টোর। 

 

লিংক বাবল ব্রাউজার 

লিংক ব্রাউজারের একটি ড্র-ব্যাক রয়েছে এবং সেটি হচ্ছে এতে কোন ডেডিকেটেড সার্চ ফাংশন নেই তবুও ব্রাউজারটি অনেক ব্যবহারকারীরই প্রথম পছন্দ হয়েছে এর বেশ কিছু ইউনিক ফিচারের জন্য। 

ক্রিস লেসির তৈরি এই ব্রাউজারটির সবচাইতে চমৎকার একটি দিক যা আমার কাছে মনে হয় সেটি হচ্ছে আপনি যদি কোন অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করার সময় সেই অ্যাপলিকেশনে থাকা কোন লিংক-এ ক্লিক করে থাকেন তবে এই ব্রাউজারটি ব্যাকগ্রাউন্ডেই সেই ওয়েব পেজটি লোড করতে শুরু করবে এবং সম্পূর্ণ লোড হয়ে গেলে আপনাকে নোটিফাই করবে। এর ফলে আপনি যা করছিলেন তা করে যেতে পারবেন কোন ওয়েব পেজ লোড হবার জন্য কোন বাড়তি সময় অপচয় করা ছাড়াই। 

ডাউনলোড লিংক - গুগল প্লে স্টোর। 

 

পাফিন ব্রাউজার 

পাফিন ব্রাউজারটিকে আপনি ইচ্ছেমত কাস্টোমাইজ করে ব্যবহার করতে পারবেন, পাশাপাশি আপনার ব্রাউজিং এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধি করতে এবং সহজে ব্রাউজ করার জন্য এতে রয়েছে বেশ কিছু অ্যাড-অনস। শুধু তাই নয়, ব্রাউজারটি এমনকি ব্রাউজ করার সময় একটি মাউস কার্সর এবং ট্র্যাকপ্যাডও ইমুলেট করতে সক্ষম। মূলত যারা স্মার্টফোনে ব্রাউজ করার সময় তাদের ল্যাপটপের কথা মনে করে থাকেন তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার পছন্দ হতে পারে। 

পাফিন ব্রাউজার মূলত আপনার হ্যান্ডসেটে আপনার ব্রাউজিং রিকোয়েস্ট আপনার হ্যান্ডসেটে ট্র্যান্সফার করার আগে এর ক্লাউড সার্ভিসে পাঠায় ফলে আপনি কম্প্রেসড ডাটা পেয়ে থাকেন যা আপনার ডাটা সংরক্ষণ করে থাকে। যদি এখনও এই ব্রাউজারটি ব্যবহার না করে থাকেন তবে ফ্রি ভার্সনটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন, অপছন্দ হবেনা বলেই আমার বিশ্বাস। 

ডাউনলোড লিংক - গুগল প্লে স্টো।