কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


বদলে গেছে অডিওপাড়া

পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলি। একটা সময় খ্যাত ছিল অডিওপাড়া বলে। গানের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও সর্বোপরি শ্রোতাদের মিলনমেলা ছিল এই জায়গাটি। দেশের শীর্ষ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কয়েক শতাধিক অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল এখানে। বিশেষ করে নব্বইয়ের দশকে ক্যাসেটের যুগে সবচাইতে রমরমা অবস্থা ছিল পাটুয়াটুলির। একেকটি প্রতিষ্ঠান মাসে কয়েক কোটি টাকার ক্যাসেট বিক্রি করতো পাইকারি ও খুচরা। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা এখানে গানের ক্যাসেটের বেচাকেনা চলতো। আর ঈদের সময়তো দম ফেলার ফুরসত থাকতো না অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর। ঈদের এক মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যেতো তোড়জোড়। আর তারও আগে থেকে বিভিন্ন শিল্পীর একক, দ্বৈত ও মিশ্র অ্যালবামের পরিকল্পনা চলতো। শুধু ব্যবসায়িক নয়, পাটুয়াটুলির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো শিল্পী ও সংগীতসংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠতো। এমনকি সিডির প্রথম দিককার সময়েও পাটুয়াটুলি ছিল জমজমাট। কিন্তু সিডি মাধ্যম বিলুপ্তির পর ডিজিটালি গান প্রকাশ শুরু হয়। বিশেষ করে গত সাত-আট বছরে ক্রমাগতভাবে পাল্টেছে পাটুয়াটুলির চেহারা। গান শোনার মাধ্যম বদলেছে। ডিজিটালি মোবাইল ও ল্যাপটপে গান শুনছেন শ্রোতারা। রূপান্তরিত হয়েছে অডিও ব্যবসাও। ডিজিটালি গান প্রকাশ করতে হচ্ছে, তাই পাটুয়াটুলির বেশিরভাগ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। এরমধ্যে হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠান সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডিজিটালি গান প্রকাশ শুরু করেছে। তবে বেশিরভাগই অডিও ব্যবসা ছেড়ে মনোযোগী হয়েছে অন্য ব্যবসায়। ডিজিটালি গান প্রকাশ করতে অনেক প্রতিষ্ঠানই পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলি থেকে তাদের প্রতিষ্ঠান সরিয়ে এনেছেন নতুন ঢাকার বিভিন্ন জায়গায়। এরমধ্যে মগবাজার ও কাকরাইল অন্যতম। পাটুয়াটুলিতে গিয়ে সরজমিনে দেখা যায়, সেখানে যেকোনো সময় ক্যাসেট-কিংবা সিডির ব্যবসা হতো, সেটা বোঝাই কঠিন। আগে যেখানে গেলেই গানের আওয়াজ আসতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে, সেখানে এখন তা নেই। ক্যাসেট কিংবা সিডির দোকানের পরিবর্তে সেখানে গড়ে উঠেছে ইলেকট্রনিক্সের দোকান। এসব দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে ফ্যান, লাইট, মোবাইলসহ বিভিন্ন পণ্য। আবার কিছু সিডির দোকান পরিণত হয়েছে বিরানির দোকানে। এক সময়কার ডিসকো, সারগাম, শার্প প্রডাক্টস (মূর্ছনা), ডন, মুন, ইলেক্ট্রো ভয়েস, দোয়েল প্রডাক্টস, ইউসুফ ইলেক্ট্রনিক্স, বেতার জগৎ (মার্স), সিডি টাচ, জিল, কমিটমেন্ট, গিতালী, মিউজিক হ্যাভেন, মিউজিক বেঙ্গল, সিডি সাউন্ড, মিউজিক জোন, অ্যাসটন মিউজিকসহ অনেক অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছে। অন্যদিকে সাউন্ডটেক, সংগীতা, সিএমভি, ঈগল মিউজিক, সিডি চয়েস, অনুপম রেকর্ডিং, সুরঞ্জলির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল গান ব্যবসার দিকে ঝুঁকেছে। এর সঙ্গে আরো রয়েছে জি-সিরিজ, লেজারভিশন, গানচিল, ফাহিম মিউজিক, ডেডলাইন মিউজিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পুরানা ঢাকার পাটুয়াটুলির সেই চিরচেনা রূপ পাল্টে যাওয়া নিয়ে বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, একটা সময় পাটুয়াটুলিতে যেতাম। রমরমা একটা অবস্থা ছিল। তখন গান প্রকাশেও আলাদা অনুভূতি কাজ করতো। কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই। আমি পাটুয়াটুলিতে গিয়েছিলাম সম্প্রতি। দেখলাম সিডির দোকানের বদলে বিরানির দোকান গড়ে উঠেছে। অন্য দোকানও রয়েছে। এটা দুঃখজনক ব্যাপার। কারণ সময়ের সঙ্গে যতই আমরা ডিজিটাল হই না কেন, ক্যাসেট কিংবা সিডির আবেদন অন্য কিছুতে নেই। কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী বলেন, ২০০৯ সাল পর্যন্তও গানের অবস্থা ভালো ছিল। পাটুয়াটুলিতে তো নিয়মিত যাওয়া আসা হতো। তখনকার রমরমা অবস্থা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। এটা যারা দেখেছে কেবল তারাই বলতে পারবে। আর কোনো উৎসবের সময় তো কথাই নেই। অনেক আগে থেকে শুরু হয়ে যেতো প্রস্তুতি। সেই অবস্থা আর নেই। পাটুয়াটুলির চেহারাও বদলে গেছে। সেখানে গেলে এখন কষ্ট পাই। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সাউন্ডটেকের কর্ণধার সুলতান মাহমুদ বাবুল বলেন, পাটুয়াটুলি ছিল অডিও ব্যবসায়ীদের জায়গা। শিল্পী ও আমাদের মধ্যে যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সেটা অব্যাহত ছিল পাটুয়াটুলিতেই। এখানে যে কত স্মৃতি রয়েছে তা বলে বোঝানো যাবে না। আমরা অনেক চেষ্টা করে গেছি ক্যাসেট ও পরে সিডি দিয়ে টিকে থাকার। সময়ের সঙ্গে বদলে যেতে হয়।  সিডির বদলে ডিজিটালি এখন গান প্রকাশ হচ্ছে। আমরাও তা করছি। কিন্তু ক্যাসেট ও সিডির সময়কার সেই আবেদন কিংবা অনুভূতি এখন আর পাই না। কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবী বলেন, আমি একটি কথাই বলবো- ডিজিটালি গান প্রকাশ হচ্ছে হোক। কিন্তু সংরক্ষণের জন্য অন্তত সিডি কিছু হলেও করা উচিত। এটা সব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও সংগীতসংশ্লিষ্টরা মিলে উদ্যোগ নিলেই করা সম্ভব। কারণ সিডির আবেদন অন্য কিছুতে নেই।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন