এতো অর্জনেও তৃপ্ত নন মোস্তাফিজ
বিশ্বকাপের এক আসরেই শিকার ২০ উইকেট। ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসে খেলতে নেমেই ৫ উইকেট পেয়েছেন তিনি। এতে ঐতিহাসিক অনার্স বোর্ডে নাম উঠেছে তার। গড়েছেন গর্বের একাধিক রেকর্ডও। কিন্তু এতো অর্জনেও তৃপ্তি নেই মোস্তাফিজুর রহমানের। শুক্রবার আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৯৪ রানে হার দেখে টাইগাররা। আর ম্যাচ শেষে মোস্তাফিজ বলেন, ‘সবাই বলছে প্রমাণ করতে পেরেছি, কিন্তু আমি খুশি না। রানটা যদি কম দিতাম, তাহলে ভালো হতো।’ মোস্তাফিজ বলেন, ‘আরও ভালো করা যেতো। দল ভালো না করলে ব্যক্তিগত সাফল্য কিছু নয়। সেমিফাইনাল খেলতে পারলে খুশি হতাম।’শুক্রবার লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ক্রিকেটের এ ঐতিহাসিক ভেন্যুতে এটি ছিল বাংলাদেশ দলের প্রথম ওয়ানডে। এই ম্যাচে নৈপুণ্য নিয়ে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ১০০ উইকেটের রেকর্ডও গড়েছেন এই পেসার। যা ওয়ানডে ইতিহাসের চতুর্থ দ্রুততম ১০০ উইকেটের কীর্তি। ক্যারিয়ারের ৫৪তম ওয়ানডেতে এ ল্যান্ডমার্ক ছুলেন মোস্তাফিজ। তার আগে কেবল রয়েছেন সাকলায়েন মুশতাক (৫৩) মিচেল স্টার্ক (৫২) রশিদ খান (৪৪)। সেঞ্চুরি কিংবা ৫ উইকেট পেলে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ড্রেসিংরুমে লিখে রাখা হয় খেলোয়াড়ের নাম। তবে ব্যাপারটি এমন নয় যে, সঙ্গে সঙ্গেই নাম উঠে যাবে। শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে অনার্স বোর্ডে নাম তোলা ‘ফিজ’ পরেরবার এখানে এলে দেখতে পারবেন নিজের নাম। ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে সংবাদমাধ্যমকে মোস্তাফিজ বলেন, ‘যদি আবার আসি, তখন দেখবো।’ শুক্রবারের ম্যাচে লর্ডসের অর্নাস বোর্ডে নাম উঠেছে পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটার ইমাম-উল-হক (১০০ রান) ও শাহীন শাহ আফ্রিদিরও (৬ উইকেট)।আগে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে টেস্ট ফরম্যাটের সেঞ্চুরিয়ান ও ৫ উইকেট শিকারির নাম লেখা হতো শুধু। চলতি বছরের শুরু থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটের ক্রিকেটেও এই ধারা চালু করেছে লর্ডস ভেন্যুর মালিকপক্ষ মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। মোস্তাফিজের আগে দু’জন বাংলাদেশির নাম উঠেছে এই বোর্ডে। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে ৫ উইকেট নিয়ে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অনার্স বোর্ডে নাম তোলেন পেসার শাহাদাত হোসেন রাজিব। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি নিয়ে এখানে নাম তোলেন তামিম ইকবাল। আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষেও ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। সব মিলিয়ে নিজের প্রথম বিশ্বকাপে ২০ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। অজি পেসার মিচেল স্টার্কের ঝুলিতে রয়েছে ২৪ উইকেট। এরপরও নিজের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নন বাংলাদেশের এ ‘কাটার মাস্টার’। উইকেট পেলেও কিছুটা বাড়তি রান খরচ করেছেন মোস্তাফিজ। বোলিংয়ে ইকোনমি রেট বেশি হওয়াতে কিছুটা হতাশ তিনি। মোস্তাফিজ বলেন, ‘সবাই বলছে প্রমাণ করতে পেরেছি, কিন্তু আমি খুশি না। রানটা যদি কম দিতাম, তাহলে ভালো হতো।’বিশ্বকাপ শেষে মোস্তাফিজের উপলব্ধি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। নিজের ভুলগুলো বুঝতে পেরে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তিনি। মোস্তাফিজ বলেন, ‘ভ্যারিয়েশন আরেকটু ভালো হতে পারতো। কাটার আছে, ইয়র্কার ফিফটি-ফিফটি পেরেছি। অ্যাকুরেসি আরেকটু ভালো হলে ডেথ ওভারে আরও ভালো করতে পারবো।’