গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের শরীফ পাড়ার সৌদি প্রবাসী নিজাম উদ্দিন শরীফের মেয়ে স্কুলছাত্রী আরজু মনির শয়ন কক্ষ থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গোপীনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আরজু মনি তার শয়ন কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. হযরত আলী। তবে, আরজু মনির পরিবারের সদস্যরা বলেছে ভিন্ন কথা। আরজু মনির মা লতিফা বেগম বলেছে, আরজু মনি মৃত্যুর আগে নিজ হাতে ৫ পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে রেখে গেছে। তাতে, উল্লেখ করা হয়েছে, আমার মেয়ে আরজু মনি স্কুলে যাওয়া-আসার সময় গোপীনাথপুর গ্রামের শরীফপাড়ার রেজাউল শরীফের বখাটে ছেলে রাহাত শরীফ ও তার বন্ধু-বান্ধব বেশ কিছু দিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। শুধু তাই নয়, স্কুলে যাওয়া-আসার সময় তারা আমার মেয়ে আরজু মনির পথরোধ করে বাজে কথাও বলতো। ওদের ভয়ে আমার মেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়ে ছিল। চিরকুটে সে লিখেছে, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। ও মা, তুমি আমাকে মাফ করে দিও। আমি চাইনা আমার মা-বাবার সম্মান নষ্ট হোক। আমি আগেই এখানে (বাড়িতে) না থাকার জন্য তোমাদের বলেছিলাম। কিন্তু তোমরা আমার কথা রাখোনি। আমার মৃত্যুর পর তোমরা আর এখানে থেকো না। কারণ এখানে থাকলে আর কেউ লেখাপাড়া শিখতে পারবে না। তাই তোমাদের কষ্ট হলেও এখান থেকে অন্য কোথাও চলে যেও। মা, সত্যি কথা বলছি, রাহাতের সাথে আমার কোন খারাপ সম্পর্ক ছিলো না। তবে রাহাত এবং অন্যরা আমার নামে যে মিথ্যা কথা বলে অপবাদ দিয়েছে তার বিচার আল্লাহ করবে। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে গেলাম, দেখো আল্লাহ একদিন ওর বিচার করবেই। আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দিও। আরজু মনির মা লতিফা বেগম অভিযোগ করে বলেন, রাহাত এবং তার বন্ধু-বান্ধব আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার হুমকিদেয়ার পর আমি বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানাই। এরপর গ্রামবাসী এক সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে রাহাতকে শাসিয়ে দেয়ার পরে সে থেমে থাকেনি। একের পর এক হুমকি-ধমকি দিয়ে বেড়িয়েছে। ওদের ভয়ে আমি মেয়েকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেই। ঘটনার দিন গত ২০শে এপ্রিল আনুমানিক বেলা ১১টার সময় আমি মেয়ের জন্য নোটবুক কিনতে বাজারে যাই। প্রায় এক ঘণ্টা পর ফিরে এসে দেখি আমার মেয়ে আরজু মনি তার শয়ন কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ সময় তার হাতের লেখা একটি চিরকুটও পাওয়া যায়। এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের এসআই মো. আউয়াল হোসেন রানা বলেছেন, স্কুল ছাত্রী আরজু মনির আত্মহত্যার ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.