খণ্ডিত বক্তব্যের নৈরাজ্য

ঢাকা পোষ্ট রাহাত মিনহাজ প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫২

ধরুন, আপনি কোনো সভায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করছেন। এতে আপনি কোনো একটি রাজনৈতিক দলের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বললেন, এই রাজনৈতিক দল রাজপথে মানুষ হত্যা করেছে। তারা খুনি। তাদের হাতে রক্তের দাগ।


এরপর আপনি আরও প্রায় ৬০ মিনিট বক্তব্য রাখলেন। যাতে এক পর্যায়ে অন্য প্রেক্ষাপটে বুঁনো শূকর বা বাঘের আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় বলতে গিয়ে আপনি বললেন তাদের (শূকর বা বাঘকে) প্রয়োজনে গুলি করে মারতে হবে।


এখন কেউ যদি আপনার এই বক্তব্য, এই রাজনৈতিক দল মানুষকে রাজপথে হত্যা করেছে। তারা খুনি। তাদের হাতে রক্তের দাগ। এরপর … তাদের প্রয়োজনে গুলি করে মারতে হবে। তাহলে কী অর্থ দাঁড়াবে? সম্পূর্ণ অর্থই বদলে যাবে। তৈরি হতে পারে নৈরাজ্য ও এমনকি হামলা, হাঙ্গামা। 


প্রযুক্তির সুপার হাইওয়েতে বিশ্বগ্রামের (Global village) বাসিন্দা একজন মানুষ এখন নেট নাগরিক (Netizen) হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। ইন্টারনেট দুনিয়ার মানুষ এখন অনেক কাছাকাছি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে একতাবদ্ধ। এছাড়া বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে মানুষ উপভোগ করছেন অভূতপূর্ব সুযোগ ও স্বাধীনতা।


ছোট্ট একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। সারাবিশ্বে ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম ইউটিউব ব্যবহার করেন প্রায় ২৭০ কোটি মানুষ। প্রতিদিন মাত্র ২৪ ঘণ্টায় এই মাধ্যমে ভিডিও আধেয় আপলোড করা হয় ৭ লাখ ২০ হাজার ঘণ্টা। গুগলের পর ইউটিউব এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত সাইট। (YouTube statistics 2025)


অনেকেই জানেন তারপরও উল্লেখ করছি ইউটিউব এর মূল স্লোগান হলো নিজ সম্প্রচার (Broadcast Yourself)। শুধু ইউটিউব নয় বর্তমানে ফেসবুক, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপ বা ইনস্টাগ্রামসহ প্রায় সব সামাজিক যোগাযোগ ও শেয়ারিং মাধ্যমই নিজেকে প্রকাশের বা নিজের মত প্রকাশের এক অভূতপূর্ব সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এতে মানুষ যেমন নিজের সৃজনশীলতা, মত ও দ্বিমত প্রকাশ করতে পারছেন ঠিক তেমনি উল্টো পিঠে তৈরি হয়েছে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত আপদ।


জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের মতে সামাজিক যোগাযোগ বা ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যমের নানাবিধ বিপদের মধ্যে অন্যতম ঘৃণা বক্তব্য প্রচার (Hate speech)। আর এই ঘৃণাবাক্য বা আধেয়র ভীতিকর রূপ হলো উদ্দেশ্যমূলক খণ্ডিত বক্তব্যে প্রচার। যাকে ইউনেস্কো উল্লেখ করছে উদ্দেশ্যমূলক খণ্ডিত বক্তব্য (tailored speech) হিসেবে।


বর্তমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও শেয়ার মাধ্যমগুলোয় এই খণ্ডিত বক্তব্যের বিপদ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। যাতে বিপন্ন হচ্ছে বহু মানুষের জীবন। লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার, তৈরি হচ্ছে নানামুখী বিপদ। বিশেষ করে ধর্ম ও রাজনীতিভিত্তিক উদ্দেশ্যমূলক খণ্ডিত বক্তব্য কেন্দ্র করে জেল-জরিমানা, সংঘাত-সহিংসতা, মামলা-হামলা এমনকি প্রাণনাশের ঘটনাও ঘটছে।


২০১৫ সালে ইউনেস্কো কাউন্টারিং অনলাইন হেট স্পিচ (Countering Online Hate Speech) শিরোনামের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে। সংস্থাটির সংজ্ঞা অনুযায়ী, উদ্দেশ্যমূলক খণ্ডিত বক্তব্যের প্রচার এক ধরনের অপতথ্য (Disinformation)। যার লক্ষ্য থাকে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ব্যক্তি, সমাজ, জাতিগোষ্ঠী, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দল বা দেশের ক্ষতি সাধন করা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও