ডা. মিলন শহীদ হলো, গণতন্ত্র এল কি?

প্রথম আলো সেলিনা আখতার প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৩৮

২৭ নভেম্বর। শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের শাহাদাতদিবস। ১৯৯০ সালের এই দিনে আনুমানিক বেলা ১১টায় তৎকালীন স্বৈরশাসকের মদদপুষ্ট দুর্বৃত্তের ছোড়া একটি বুলেট টিএসসির প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের কোনায় মিলনের জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আমার হৃদয়ে সেই শ্বাসরুদ্ধকর দিনটি আজও অম্লান, তা যেন চিরকাল অক্ষয় হয়ে থাকবে।


শহীদ মিলনের রক্তের বিনিময়ে জনগণের বহু কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হলো। সাধারণ মানুষ উল্লাসভরে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করল। তারপর সংসদীয় গণতন্ত্রে দীর্ঘ ২৫ বছর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দল পালাবদল করে সরকার গঠন করেছে। লক্ষণীয়, প্রতিটি সরকারের আমলে সরকারি দলের একশ্রেণির রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন দেশে-বিদেশে। পাকিস্তান আমলে আমরা ২২ ব্যবসায়ী পরিবারের কথা জানতাম, দেশের অর্থ-সম্পদের বিরাট একটি অংশ যাদের কুক্ষিগত ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে শোনা যায় আজ ২২ হাজার পরিবারের কথা, যারা এমন অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছে।


শহীদ মিলন ছিল একজন বন্ধুবৎসল ও ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠা নির্লোভ, সাহসী ও আপসহীন ত্যাগী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। স্কুলজীবন থেকেই সে অত্যন্ত মেধাবী ছিল। কিশোর বয়স থেকেই ও বুঝতে শিখেছিল, আমরা বাঙালিরা পাকিস্তানিদের দ্বারা নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত এক জনগোষ্ঠী, যাদের বাক্স্বাধীনতা নেই।


মিলনের ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল। তার কিশোর বয়সের লেখা ডায়েরির পাতায় একটি লেখা খুঁজে পেয়েছিলাম। তখন থেকেই সামাজিক কাজকর্মে আত্মনিয়োগ করার প্রবণতা ওর চরিত্রে প্রকাশ পেতে থাকে। তখন আমাদের বাসা ছিল মগবাজারের গ্রিন ওয়েতে। ওই সময়ে এলাকায় ‘প্রদীপ্ত সবুজ সংঘ’ নামে শিশু-কিশোরদের একটি সংগঠন ছিল। মিলনের দায়িত্ব ছিল প্রতি মাসে একটি দেয়ালপত্রিকা বের করা। মিলন নিজেও কিছু কিছু লিখত। তখন থেকেই ওর মধ্যে গড়ে ওঠে সাংগঠনিক দক্ষতা/ক্ষমতা, যা পরবর্তী রাজনৈতিক জীবনেও প্রতিফলিত হয়েছিল।


বই পড়া ও কেনার এক অদম্য নেশা ছিল ওর। টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে বই কিনত সে। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার পর মিলন উপলব্ধি করেছিল, রাজনৈতিক শিক্ষা ছাড়া রাজনীতির আদর্শ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই ওর পড়ার ঘরটি নানা বইয়ের সম্ভারে ঠাসা ছিল। সেখানে ছিল বাংলাদেশের ইতিহাস, দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিষয়ের নানা পত্রিকা। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, সুকান্ত থেকে আরম্ভ করে মঁপাসা, চেকভ, তলস্তয়, বার্ট্রান্ড রাসেল, ম্যাক্সিম গোর্কি, এর্নেস্তো চে গুয়েভারা, লেনিন, মার্ক্স—এমন নানা লেখকের বইয়ে মিলনের ঘর ঠাসা ছিল।


মিলন স্বপ্ন দেখেছিল, বুর্জোয়া-পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার মূলোৎপাটন করে শ্রেণিহীন এক সমাজব্যবস্থা কায়েম করবে। রৌমারীর মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে সে বলেছিল, ‘যাদের পেটে ভাত জোটে না, তাদের কী চিকিৎসা দেব? ওদের সব রোগের মূলে রয়েছে অপুষ্টি।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও