বেতন-ভাতায় সরকারের খরচ বেড়েছে, উন্নয়নে কমেছে
সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন–ভাতাসহ পরিচালন খরচ আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। অন্যদিকে উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ কমেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন–ভাতা, দেশি বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধসহ বিভিন্ন খাতের সরকারের পরিচালন খরচ বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। তিন মাসের হিসাবে সরকারের পরিচালন খরচ প্রথমবারের মতো এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
পরিচালন খরচ বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়ন প্রকল্পে পর্যাপ্ত অর্থ খরচ করা যাচ্ছে না। জুলাই–সেপ্টেম্বর হিসাবে এবারই গত আট বছরের মধ্যে উন্নয়নে সবচেয়ে কম খরচ হয়েছে। সরকারের অন্যতম রাজস্ব আদায়কারী সংস্থা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চার মাসে ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকা।
সরকারের মতো দেশের সাধারণ মানুষেরও খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু আয় ততটা বাড়ছে না।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। সর্বশেষ অক্টোবর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে এনেছে, যদিও তা এখনো অনেক বেশি।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মজুরি বৃদ্ধি না পাওয়ায় সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে টানা তিন বছর ১০ মাস ধরে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম। বাজারে জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। দারিদ্র্য কমার পরিবর্তে তা বেড়ে যাওয়ায় কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ আরও বেড়েছে। তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব বেশি।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, প্রকৃত আয় কমে যাওয়া, চাহিদার নিম্নগতি, প্রত্যাশিত বিনিয়োগ না হওয়া—এসব নানা কারণে ব্যবসা–বাণিজ্যেও চাঙাভাব নেই।