আগারগাঁও সিসমিক সেন্টার থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে মাধবদীতে ছিল ২১ নভেম্বর ২০২৫-এর ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। মাইলে হিসাব করলে দাঁড়াবে ৮ মাইল।
রিখটার স্কেলে ৫.৭ বলছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিসের সিসমিক অবজারভেটরি ও রিসার্চ সেন্টার। আর যুক্তরাষ্ট্র বলছে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৫।
একটা ধাক্কা দিয়ে, একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ভূমিকম্প আমাদের সতর্ক করে দিল। ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শত শত আহত প্রধানত পায়ের চাপে পিষ্ট হয়ে, কেউ–বা ভবন থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে।
অনেক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে, বেশ কিছু ভবন হেলে পড়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন জ্বলেছে, মাঠের মাটি দুভাগ হয়ে গেছে, ঘরের জিনিসপত্র তাক থেকে পড়ে গেছে।
আরেকটু বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে কী হবে?
বাংলাদেশের সেরা কাঠামো-প্রকৌশলী শামীমুজ্জামান বসুনিয়ার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫। তিনি বলেছিলেন: ‘ভূমিকম্প হলে আমাদের যা হবে…যারা বেঁচে যাবে, তারাও থাকতে পারবে না।
এখানে বীভৎস অবস্থা হবে। আগুন, পানি এবং পয়ঃপ্রণালির যে সিস্টেম আমাদের, এগুলোর যে অবস্থা, এগুলোকে সরাতেও পারবা না। এগুলোর গন্ধে কেউ থাকতে পারবে না।
আগুন তো আছেই। প্লাস এগুলোর যে অবস্থা, তুমি ক্লিয়ারই করতে পারবা না।
ভূমিকম্প এক্সপার্ট যেটা বলে, আমিও বিএসএর আর্থকোয়েক সোসাইটির মেম্বার, সেখানে ওরা দেখেছে যে ভূমিকম্প কত বছর পরপর একটা রিপিটেশন হয়।
যে ফল্টগুলো আছে, সেগুলো মুভ করছে। প্রতিটি আলাদা মুভ করে। কোনোটা একই ডিরেকশনে মুভ করে, কোনোটা উল্টো দিকে করছে।
এটার মধ্যে দুই জয়েন্টগুলো, যেগুলো আছে, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে ডিফিকাল্ট জায়গা। ডাউকি ফল্ট আমাদের সিলেটের ওপর দিয়ে আছে, এটাও একটা।
ভূমিকম্প ডেইলি হচ্ছে। ভূমিকম্পের ইতিহাস দেখলে মনে হয় যে ডেইলি ২ মাত্রা বা ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হচ্ছে। এগুলো আমরা ধরি না।
ফলে একটা ভূমিকম্প যদি হয়, আমি জানি না কী হবে। এখানে বড় বড় এক্সপার্ট, ওনারা যারা পড়াশোনা করেন, তাঁরা বলেন, দেড় লাখ বিল্ডিং এখানে ভালনারেবল।
আমি বলব, ‘একসেপ্ট ফিউ বিল্ডিংস অল বিল্ডিংস আর ভালনারেবল। ইদানীং আমাদের ডিজাইনাররা ভেরি স্ট্রং ডিজাইন করছে। এগুলো ছাড়া অল বিল্ডিংস আর ভালনারেবল।’
অর্থাৎ তিনি বলছেন, ‘অল্প কিছু ভবন ছাড়া বাংলাদেশের সব স্থাপনাই ভূমিকম্পের সামনে ভঙ্গুর অবস্থায় আছে।’
- ট্যাগ:
- মতামত
- ভূমিকম্প
- দুর্যোগ মোকাবেলা