জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা- প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

জাগো নিউজ ২৪ অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৩৪

জানা কথা যে অধিকাংশ দেশ আজ সমুদ্রের স্তর উপড়ে উঠা এবং তীব্র ঝড়ো আবহাওয়ার প্রাবল্যের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট জলবায়ুজনিত পরিবর্তনের মুখোমুখি। তবে সম্ভবত সবার চেয়ে অধিকতর ঝুঁকিপ্রবণ অঞ্চল হিসাবে বাংলাদেশের নাম শীর্ষে স্থান পায় কেন না, এবং কে না জানে যে, ব্যাপক বার্ষিক বন্যা এবং অন্তর অন্তর ঘটা বন্যা বাংলাদেশে প্রাত্যহিক জীবনেরই অন্যতম এক অংশ। আরও বিপজ্জনক হলো বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর সত্তর ভাগ সমুদ্রস্তর থেকে মাত্র পাঁচ মিটার উপরে অবস্থিত এবং জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বাস করে গড় সমুদ্রস্তর হতে ১০ মিটারের ভেতর। আর এই জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর খাত হচ্ছে কৃষি যেখানে মোট কর্মসংস্থানের প্রায় অর্ধেক সংগঠিত হয়, কৃষি খাদ্যের ঝুড়ি তো বটেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা কৃষি, গবাদিপশু মাছচাষ এবং বনায়নের উপর নির্ভরশীল তারা ইতোমধ্যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পড়েছেন। এমতাবস্থায় এটাই স্বাভাবিক যে জলবায়ু বিষয়টি ঘিরে গেল এক দশকে কর্মসূচির দ্রুত বিস্তার, নীতিমালা সংক্রান্ত সংলাপ এবং গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচার গুরুত্ব এবং গতিময়তা লাভ করে। 


সফল অভিযোজন (এডাপটেসন) নির্ভর করে ঝুঁকি সম্পর্কিত তীক্ষ্ণ সচেতনেতার উপর যাতে করে সময়োপযোগী উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। তবে জলবায়ু পরিবর্তন -প্রসূত নির্দিষ্ট ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা ভিন্ন হতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী কম্যুনিটিগুলোর তথ্য ও বিতর্কে সমান সুযোগ নাও থাকতে পারে। বাংলাদেশের পূর্বেকার অধ্যয়নগুলোতে দেখা গেছে যে সচেতনতা আয়, শিক্ষা ও জেন্ডারের উপর নির্ভরশীল। এমনকি, মানব সাস্থ্যের উপর দৃষ্টিবদ্ধ সাতটি জলবায়ু -ঝুঁকিপূর্ণ জেলায় প্রায় সাত হাজার খানার উপর পরিচালিত সমীক্ষা থেকে জানা যায় উত্তরদাতাদের প্রায় অর্ধেক জলবায়ু পরিবর্তন -প্রসূত ঝুঁকি সম্পর্কে মোটেও অবহিত নন। প্রসঙ্গত বলা দরকার যে, বিআইজিডি-এর রোহিনি কামাল, এম সাইফুল ইসলাম এবং আদিবা নুরাইনা রিসা গবেষণাটি করেছেন।


এর বিপরীত চিত্রও আছে। অতি সম্প্রতি একটি উপজেলায় পরিচালিত সমীক্ষায় কৃষকদের ধারণার উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। প্রায় নব্বুই ভাগ উত্তরদাতা বলেছেন জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে তাদের ধারণা আছে এবং আবহাওয়াসংক্রান্ত প্রাপ্ত তথ্য এবং তাদের ধারণা অধিকাংশ সহগের সাথে সহগামী-  যেমন গড় তাপমাত্রার পরিবর্তন, বার্ষিক এবং মৌসুমি বর্ষণ ইত্যাদি। তবে যেখানে উত্তরদাতা বলছেন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, সেখানে আবহাওয়াসংক্রান্ত ধারণার দ্বিমত রয়েছে সম্ভবত এই কারণে যে, যেমনটি বলেছেন হিউ ব্রামার, আবহাওয়া অফিসগুলো শহরাঞ্চল বা তাপ- দ্বীপে অবস্থান করে। যাই হোক, একটা উপজেলা অথবা একটা পেশার মানুষের এবং সীমিত সময় বিস্তৃত ধারণা দীর্ঘকালীন গল্প হবে এমন কোনো কথা নেই ।  এর অর্থ দাঁড়ায়, উপলব্ধ জলবায়ু পরিবর্তন -প্রসূত ঝুঁকি এবং মাঠ পর্যায়ে পরিবেশ -প্রসূত অভিজ্ঞতা পেতে প্রয়োজন জাতীয়ভাবে প্রতিনিধিত্বশীল অধ্যয়ন।


সমস্যা অন্যখানেও। গবেষকগণ দেখেছেন যে, অতীতের চরম আবহাওয়ার অভিজ্ঞতা আর জলবায়ু-ঝুঁকি পাশাপাশি যায়। যাই হোক, বিরূপ ঘটনার অভিজ্ঞতা প্রকৃত ঝুঁকি আড়াল করতে পারে যদি বাস্তব ঝুঁকি পরিমাপগুলো পর্যালোচনা থেকে ছিটকে যায়। বস্তুত বাংলাদেশের বন্যা ঝুঁকি নিয়ে সবচেয়ে বড় জাতীয় পর্যায়ের অধ্যয়ন মনে করে বন্যার উপলব্ধ ঝুঁকি প্রদর্শন প্রকৃত ঝুঁকি প্রদর্শনের দুর্বল প্রতিনিধি। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত উপলব্ধ ঝুঁকির ক্ষেত্রে এটা খুব প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয় যেখানে এই ঝুঁকিগুলো ভিত্তিবছরের আবহাওয়া সংক্রান্ত অবস্থান- যেমন তাপমাত্রা, তুফান, বন্যা এবং ভারী বর্ষণ - থেকে আলাদা করা যায় না।


এসব কথা মাথায় রেখে গবেষকগণ বর্তমান গবেষণায় ৬৪ জেলা-বিস্তৃত জাতীয়ভাবে প্রতিনিধিত্বশীল ডেটাসেট ব্যবহার করেছেন। এই তথ্য এসেছে ২০১৭ সালে ৩৩, ৫৫৪ খানার উপর পরিচালিত একটা জরিপ থেকে এবং জরিপটি যৌথভাবে বিআইজিডি ও ব্র্যাক- গবেষণা এবং মূল্যায়ন বিভাগ (রেড) করেছে এসপিএ -র বেসলাইন সমীক্ষার জন্য। সমীক্ষায় ব্যবহৃত প্রশ্নমালায় জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতাসূচক কিছু প্রশ্ন রাখা হয়েছিল যেমন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ‘ কথাটার সাথে পরিচিতি, অধুনা উপলব্ধ তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, বন্যা, বর্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা। জানা মতে, এটা বাংলাদেশে অনুভূত জলবায়ু ও পরিবেশ পরিবর্তন নিয়ে সবচেয়ে বড় এবং একমাত্র জাতীয়ভাবে প্রতিনিধিত্বশীল মূল্যায়ন।


তাছাড়া  এবং জাতীয় পর্যায়ের উপাত্তের সমন্বয় করে পরিস্থিতি অবলোকন করার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে। বিশেষত তারা দেখতে চেয়েছি আইপিসিসি তালিকাভুক্ত নির্দেশকগুলো তাদের কাছে থাকা সমীক্ষার তথ্য এবং জাতীয় প্রতিবেদনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কি না। স্মর্তব্য, ঝুঁকিতে উপলব্ধ পরিবর্তন পরীক্ষায় তারা ডেটাসেট থেকে গেল দশ বছরের সাথে তার আগের দশকগুলোর অভিজ্ঞতায় পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করার প্রচেষ্টা নিয়েছেন। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল ঃ (ক) কম্যুনিটির  বিশেষজ্ঞ এবং নীতিনির্ধারক দ্বারা শনাক্তকৃত বর্তমান জলবায়ু ঝুঁকি বাংলাদেশের সর্বত্র জানানো হচ্ছে কিনা এবং (খ) বেসলাইন ও পরিবর্তনশীল জলবায়ুজনিত অবস্থার কারণে আঘাতপ্রাপ্ত মানুষের জীবন -জীবিকার অভিজ্ঞতা যথেষ্টভাবে নীতিমালায় প্রতিফলিত হচ্ছে কি না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও