কল করে ‘কাকন বাহিনী’র প্রধান বললেন, তিনি প্রকৌশলী, ইজারা নিয়ে বালুর ব্যবসা করছেন
পদ্মার চরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, খুন, চাঁদাবাজি ও বালু লুটের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ নাম সামনে আসছে। পুলিশ ৯ নভেম্বর ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ নামে অভিযান চালিয়ে ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
পরদিন রাত ১১টার পর ‘কাকন বাহিনী’র একজন এই প্রতিবেদককে কল করে বলেন, কাকন কথা বলতে চান। কথামতো ওই ব্যক্তির মুঠোফোনে কাকন কল করেন। তিনি ফোনটি এই প্রতিবেদককে ধরিয়ে দেন। তাঁর সঙ্গে ৩৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড কথা হয়। কথোপকথনের সেই রেকর্ড কাকনকে চেনেন, এমন কয়েকজনকে শোনালে তাঁরা কণ্ঠটি তাঁর বলে নিশ্চিত করেন।
কথা শুরু করে বলেন, মামলার একেক এজাহারে একেক নাম ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর প্রকৃত নাম হাসানউজ্জামান কাকন। তিনি প্রকৌশলী, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছেন। ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি বিদেশে ছিলেন। তারপর ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। তাঁর দাবি, ২০২০ সাল থেকে তিনি নাটোরের লালপুরের দিয়াড় বাহাদুরপুর বালুমহাল ইজারা নিয়ে বৈধভাবে বালুর ব্যবসা করছেন। তিনি মূল মালিক নন। তিনি একজন অংশীদার। ইজারার মূল্য ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
তাঁর নামের সঙ্গে মিলিয়ে ‘কাকন বাহিনী’কেন বলা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন করলে হাসানউজ্জামান কাকন দাবি করেন, ‘এটা আসলে আমি নিজেও জানি না কেন, কীভাবে হলো। এটা আমি দেখতে পাচ্ছি, কিছু দুর্বৃত্ত খারাপ মানুষের কারণে হচ্ছে। এগুলা ফটোশুট করা এবং বানানো।’
গত ২৭ অক্টোবর চরে ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে ‘কাকন বাহিনী’র গুলিতে তিন কৃষক নিহত হন। এ ঘটনায় হাসানউজ্জামান কাকনসহ কয়েকজনের নামে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় একটি মামলা হয়। রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় মোট ছয়টি মামলা হয়েছে এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। মামলার প্রধান আসামি হিসেবে কেন হাসানউজ্জামান কাকনের নাম এল, এর জবাবে তিনি দাবি করেন, এটা ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি সেখানে ছিলেন না, তিনি কিছু জানেন না। পুরোটাই সাজানো। তাঁর নামে যে কয়টা মামলা হয়েছে, কোথাও তিনি ছিলেন না। অস্ত্র, স্পিডবোট নিয়ে যেসব ছবি আছে, তার কোথাও তাঁর ছবি নেই।