ধানের শীষে কি শাপলা কলি ফুটবে

প্রথম আলো সালেহ উদ্দিন আহমদ প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:১৭

জুলাই আন্দোলন ছিল স্বল্পকালীন; কিন্তু তা ফল এনেছে বিশাল। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেকে দেশের জন্য অপরিহার্য ভাবা শেখ হাসিনাকে তাড়িয়ে ছাত্ররা দেশের ক্ষমতা নিলেন। যেসব তরুণ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরা খুব তাড়াতাড়িই ক্ষমতার আস্বাদ পেয়েছেন। কেউ পেয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা। কেউ পেয়েছেন প্রভাব খাটানোর অবাধ স্বাধীনতা। এ পরিস্থিতিতে একসময় তাঁরা দল করলেন। দলটির নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।


ছাত্রদের এই দলকে শুরু থেকে অনেকেই ‘কিংস পার্টি’ বলে আসছিল। এর যৌক্তিক কারণও আছে। দেশের এখন যাঁরা ‘কিং’, তাঁদের নিয়োগকর্তাও ছিলেন এই ছাত্ররাই। তাঁরা শুধু রাজনৈতিক দলই করেননি, সরকারে তাঁদের প্রতিনিধি রেখে গেছেন; সরকারের অনেক কলকবজা তাঁরাই নাড়ছেন। অনেকে এর নাম দিয়েছেন ‘সরকারের মাঝে সরকার’।


ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ও চাপের রাজনীতি


আমাদের দেশের জনগণ সব সময় যেকোনো আন্দোলনে ছাত্রদের পেছনে এসে দাঁড়ায়, কিন্তু আন্দোলন সফল হওয়ার পর ছাত্রদের পেছনে ঠেলে দেয়। তাই
রাজনীতিতে পাকাপোক্ত রাজনীতিবিদেরাই সব সময় এগিয়ে থাকেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের পতাকা উড়িয়েছিলেন যে তরুণেরা, তাঁরা স্বাধীনতার পর জাসদ গঠন করেছেন এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে দ্রুতই তাঁরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছেন।


দল গঠনের পর গণসংযোগে গিয়ে যে প্রতিকূল অবস্থায় পড়েন, সম্ভবত সে অভিজ্ঞতাই এনসিপির তরুণ নেতাদের আরও জেদি করে তোলে। এনসিপি নেতাদের পরবর্তী পদক্ষেপগুলোয় এর স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। দল করার প্রথম থেকেই এনসিপি চাপের রাজনীতি শুরু করে। সরকারকে তাদের অনেক দাবি চাপের মুখে মেনে নিতে হয়েছে। সর্বশেষ এনসিপির শাপলা প্রতীক দাবির চাপে নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে শাপলার কলি ফোটাতে হলো।


 প্রথম থেকেই এনসিপির দুটি লক্ষ্য ছিল—ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ও চাপের রাজনীতি অব্যাহত রাখা। তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে তারা কোনো লুকোচুরি করেনি। তারা স্পষ্টই বলে আসছিল, জুলাই আন্দোলনের স্বার্থ পাহারা দেওয়ার জন্য তাদের সরকারে থাকা উচিত। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি। বিভিন্ন সময় তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়েও তাঁরা প্রকাশ্যে চাপ সৃষ্টি করেছেন। এভাবে এনসিপি জন্ম থেকেই দারুণ প্রভাব ও সরকারি স্বীকৃতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।


এনসিপি পথ খুঁজছে


ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। বর্তমানে যারা ক্ষমতায়, তারা চলে যাবে; নতুন সরকার আসবে। সরকারের ছায়া ছাড়াই এনসিপিকে রাজনীতি করতে হবে। কেমন তাদের প্রস্তুতি এবং নিজেদের প্রভাব টিকিয়ে রাখতে তাদের প্রচেষ্টাগুলো বর্তমান রাজনীতির একটা মূল আলোচ্য বিষয়। এনসিপি জন্মের পর ধরে নিয়েছিল, তারাই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং চ্যালেঞ্জ করবে বিএনপিকে। সে পরিপ্রেক্ষিতে জন্মের পর থেকেই এনসিপি বিভিন্নভাবে জামায়াতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে। তারা মনে করেছিল, জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে এনসিপি বিএনপির বিরুদ্ধে বড় একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।


এনসিপি ও জামায়াতের সহযোগিতায় সবচেয়ে লাভবান হয়েছে জামায়াত। তাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকাকে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিবিরকে এনসিপির পরিপূরক হিসেবে ভোট দিয়েছেন। এনসিপি সাংগঠনিক দুর্বলতা ও নেতাদের অপরিপক্বতার জন্য বেশি দূর এগোতে পারেনি। কিছু নেতার ব্যক্তিগত প্রভাবের মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রইল।


এনসিপির সংস্রবে ও নিজেদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলায় জামায়াত দ্বিতীয় দল হিসেবে বিরাট ‘বুস্ট’ পেল। এনসিপি এখন হয়তো বুঝতে পারছে যে জামায়াত দ্বিতীয় দল হিসেবে তাদের গ্রাস করেছ, তারা এখন বড়জোর দূরতম তৃতীয় দল। আরেকটি পরিবর্তন রাজনীতিতে ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে। ডাকসু-রাকসু নির্বাচনে হারার পর হঠাৎ রাজনীতির পুঁজিবাজারে বিএনপির বেশ ধস নেমেছিল। এখন বিএনপি তা কাটিয়ে আবার শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও