ঐকমত্য কমিশনের বাজেট ৭ কোটি ২৩ লাখ, আপ্যায়ন ব্যয় ৪৫ লাখ টাকা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের 'আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ কোটি টাকা' ব্যয়ের তথ্যটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচার বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি মহলবিশেষের পক্ষ থেকে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারে বলা হচ্ছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এই তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও সর্বৈব মিথ্যাচার। স্পষ্টতই, যেহেতু এটি একটি পরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা, স্বাভাবিকভাবেই অপপ্রচারকারীরা এ বিষয়ে কমিশনের কোনো ভাষ্য সংগ্রহ করেনি। সংশ্লিষ্ট তথ্যের যথার্থতা যাচাইয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেনি।
এতে বলা হয়, অপপ্রচারকারীদের নির্জলা মিথ্যাচারের ফলে জনমনে যেন কোনো ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়—সেই লক্ষ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো যাচ্ছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করার পর ২০২৪–২৫ এবং ২০২৫–২৬ অর্থবছরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সর্বমোট বাজেট ছিল সাত কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর বিপরীতে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত কমিশনের ব্যয় হয়েছে এক কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। কমিশনের মোট বরাদ্দের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা।
বিবৃতিতে বলা হয়, কমিশনের এই আপ্যায়ন বরাদ্দের বড় অংশ ব্যয় হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সময় এবং কমিশনের অন্যান্য বৈঠকে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিন ধাপের আলোচনাকালে প্রতিদিন কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, তাদের সহযোগী, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের ৪৪টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে এই খাতে ব্যয় হয় ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২৩টি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা। এই বৈঠকগুলো সকাল থেকে রাত অবধি চলায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য নাশতা, মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের ব্যবস্থা করতে হয়। গড়ে প্রতিদিন ব্যয় হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকার কম। তৃতীয় পর্যায়ে সাতটি বৈঠকে ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন, এতে ব্যয় হয় সাত লাখ আট হাজার ৬০০ টাকা। এর বাইরে কমিশনের নিজস্ব সভা হয়েছে ৫০টি, যার অনেকগুলো ছিল ছুটির দিনে এবং দিনব্যাপী। এতে ব্যয় হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার ৫২০ টাকা। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক, তিনটি সংবাদ সম্মেলনসহ মোট ১৩টি অনুষ্ঠানে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৩৪০ টাকা।