মেট্রোরেলের দ্বিতীয় প্যাড পড়ে মৃত্যু, সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটে মেট্রোরেলের একটি পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে গতকাল রোববার এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন।
একই স্থানে কাছাকাছি আরেকটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল ১৩ মাস আগেও। ফলে ফলে মেট্রোরেল ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
গতকাল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এ ঘটনার পর নিরাপত্তার কারণে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ রেল সেবা বন্ধ করে দেয়। ফলে হাজারো যাত্রী চরম ভোগান্তিতে পড়েন এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
গতকাল বিকেল ৩টার দিকে উত্তরা–আগারগাঁও রুটে আবার মেট্রোরেল সেবা চালু হয়। তবে আগারগাঁও–মতিঝিল অংশ রাত ৯টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। রাত ৭টা ১৫ মিনিটে মতিঝিল–শাহবাগ অংশে রেলসেবা চালু হয়, কিন্তু উত্তরা–মতিঝিল রুট তখনও বন্ধ ছিল।
২৩ ঘণ্টা পর আজ সোমবার সকাল ১১টায় শাহবাগ–আগারগাঁও অংশেও মেট্রোরেল চালু হয়েছে। ফলে রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরোদমে চালু হয় মেট্রোরেল।
গতকালের দুর্ঘটনায় নিহতের নাম আবুল কালাম আজাদ (৩৫)। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন। আজাদ একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করতেন এবং প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া থেকে উত্তরা অফিসে যাতায়াত করতেন।
আহতদের মধ্যে একজন দোকানদার আমির। আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি।
মেট্রোরেলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, দুটি বিয়ারিং প্যাড পড়েছিল। তবে একটি উদ্ধার করা গেছে।
উঁচু কাঠামো, যেমন ব্রিজ বা মেট্রোরেল লাইনের ক্ষেত্রে বিয়ারিং প্যাড বসানো হয় ভায়াডাক্ট ও পিয়ারের মাঝখানে। প্রতিটি পিয়ারে চারটি করে প্যাড বসানো হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এগুলো মূল কাঠামোর ভার নিচে স্থানান্তর করে এবং ট্রেন চলাচলের সময় সৃষ্ট কম্পন নিয়ন্ত্রণ করে।
এর আগে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ৪৩০ নম্বর পিয়ার থেকে একটি প্যাড পড়ে গিয়েছিল। তখন আগারগাঁও–মতিঝিল অংশে প্রায় ১১ ঘণ্টা মেট্রোরেল সেবা বন্ধ ছিল। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
গতকাল পিয়ার নম্বর ৪৩৩ থেকে প্যাডটি পড়ে যায়। এঠা ঠিক আগের ঘটনার জায়গা থেকে মাত্র দুটি পিয়ারের দূরত্বে এবং ফার্মগেট স্টেশনের পাশে।
ঘটনাস্থলের পাশে থাকা দোকানদার ও প্রত্যক্ষদর্শী চম্পা আক্তার বলেন, 'প্রথমে একটা বিকট শব্দ শুনি। তারপর দেখি ওই জিনিসটা (বিয়ারিং প্যাড) রাস্তায় লোকটার (আজাদ) ঘাড়ে পড়ে। লোকটা সঙ্গে সঙ্গে ফুটপাতে পড়ে যান, নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উনি নিস্তব্ধ হয়ে যান।'
পরে প্যাডটা পাশের দোকানে গিয়েও আঘাত করে। এতে করে দোকানের কাচ ভেঙে যায় বলে জানান চম্পা।