‘সেই ছবিতেই বোঝা যায় এটা আত্মহত্যা নয়, খুন’—নীলা চৌধুরীর দাবি

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৫১

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনে সালমান শাহর বাসা থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এটাকে আত্মহত্যা বললেও গত সোমবার ২৯ বছর পরে হত্যা মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ এই সময় ধরে ছেলে হত্যার বিচার চাওয়া সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে প্রথম আলোর মুখোমুখি হলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মনজুরুল আলম।


অবশেষে হত্যা মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত...


নীলা চৌধুরী: দীর্ঘদিন পরে একটা ভরসার জায়গা তৈরি হলো। মামলার কার্যক্রম এত দ্রুত হয়ে যাবে ভাবিনি। এ জন্য শুকরিয়া। অনুভূতি আর কী বলব। আমার সমস্ত শরীর–মন খালি খালি মনে হচ্ছে। ফাঁকা ফাঁকা মনে হচ্ছে। ছেলেকে মার্ডার করা হয়েছে, মামলা হচ্ছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে অবশেষে ন্যায়বিচার পাব—এটাই ভালো লাগার কথা।


আপনাকে লড়তে হয়েছে ২৯ বছর


নীলা চৌধুরী: এই ২৯ বছর কিছু মানুষ আমাকে খারাপ বলেছে। আমার ছেলেকে খারাপ বলেছে। আমার জন্য ছেলে মারা গেছেন, সেটাও শুনতে হয়েছে আমাকে। লালনপালন করে বড় করে আমি নাকি আমার ছেলেকেই মেরেছি, এটাও আমাকে শুনতে হয়েছে। আমাকেই দায়ী করেছে সামিরা, আজিজ, ডনরা। কিন্তু ২৯ বছর ধরে আমার বিশ্বাস ছিল, আইনে একদিন প্রমাণ হবে এটা খুন। আদালত যেভাবে সোমবার ঘটনাটা উপস্থাপন করেছেন, সেখান থেকে আমাকে যেভাবে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে; সেটা আমাকে মানসিকভাবে শান্তি দিয়েছে।


আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা কতটা করতে পারছেন?


নীলা চৌধুরী: এটাই আমার কাছে মনে হয়েছে ন্যায়বিচার পাচ্ছি। প্রত্যাশা আছে বলেই, ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার পাব। এত দিন যারা এত কথা বলেছে, আমাকে হুমকি দিয়েছে, তাদের বিচার হতেই হবে।


আপনাকে কে ভয় দেখিয়েছে?


নীলা চৌধুরী: এই এক মাস আগেও ডন আমাকে হুমকি দিয়েছে। প্রেসক্লাবের সামনে যেতে বলেছে। চিন্তা করা যায়, যে আমার ছেলের পিছে পিছে ঘুরত। সাহস পেত না আমাদের সঙ্গে কথা বলার। সেই ডন কত বড় ব্যাপআপ থাকলে আমাকে হুমকি দিতে পারে।


অতীতে বিচারপ্রক্রিয়ায় কেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে?


নীলা চৌধুরী: একবার কোর্ট থেকে যে রায় দেওয়া হলো সেটা, উভয় পক্ষকে খুশি করার জন্য। কাউকে খুশি করা তো আদালতের কাজ না। আদালতে মানুষ যায় ন্যায়বিচারের আশায়। বেশ কয়েকবার এমনও হয়েছে, আমি কোর্টে গেছি, আমাকে নিয়ে বিচারক টিটকারি করেছেন। ১৬-১৭ সালেও একবার একজন বিচারক পারিবারিক কারণে কোর্টের ডেট বাতিল করে দিয়েছিলেন। একসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। ন্যায়বিচার চাইতে আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই। তিনি আমাকে সন্ধ্যার পর থেকে রাত একটা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন। রাত একটায় কোনো ভদ্রমহিলা কারও বাসায় দেখা করতে পারে না, কিন্তু আমি ন্যায়বিচারের জন্য ২৯ বছর ধরে সব সহ্য করে গেছি। পরে মন্ত্রী কামাল সাহেব বললেন, ‘এটা ডেড মামলা। এখন আর কি।’ আমি সালমান শাহর একটা লাশের ছবি কামাল সাহেবকে দিয়ে আসতে চেয়েছিলাম, পারিনি। এই ছবিতেই বোঝা যায়, এটা আত্মহত্যা নয়, খুন। পরে পিবিআইতে মনোজ কুমার আমাকে অপমান–অপদস্থ করেছে। অনেক আগের মামলা নিয়ে হাসাহাসি পর্যন্ত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সব জায়গায় সামিরাদের লোক আছে। রাগ–ক্ষোভ নিয়ে নীরবে ধৈর্য ধরেছি।


কোনো আলামত দেখে মনে হয়েছিল খুন?


নীলা চৌধুরী: খুনের চিহ্ন আর আত্মহত্যার চিহ্ন আলাদা। সেটা তার শরীরেও ছিল। এটা খুন, বোঝাই যাচ্ছিল। প্রমাণও ছিল। সামিরার ঘনিষ্ঠরা পরে তো বলেই দিল কীভাবে খুন করেছে। এটা পরিকল্পিত খুন। সামিরা চিটাগং থেকে লোক এনেছে। এরাই অন্যদের সঙ্গে মিলে ইমনকে খুন করেছে। ওই বিল্ডিংয়ের অনেক ফ্ল্যাট ছিল আজিজ মোহাম্মদের ভাড়া করা। সেখানে তার লোকজন থাকত। ২৯ বছর ধরেই আমি বলে আসছি, আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। আরেকটা কথা, তখন সালমানের নিয়মিত শুটিং নিয়ে ব্যস্ততা ছিল। সেগুলো নিয়ে ছেলে খুন হওয়ার আগে আমাদের কথা হয়েছিল। এ ছাড়া আমি এতিমখানা দেব, খুনের আগের দিনও এতিমখানা করার প্ল্যান করছিলাম ছেলের সঙ্গে। সেই ছেলে কেন আত্মহত্যা করবে? আমি মুখস্থ বলে দিতে পারি, আমাদের কাছে সব সাক্ষী আছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও