ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বাঙালি মুসলমানের নতুন লড়াই

যুগান্তর ড. হাসান মাহমুদ প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৯

গত সপ্তাহে একটি ছোট লেখায় বাংলাদেশের বামপন্থার মধ্যে ইসলামবিদ্বেষ ও বাঙালি মুসলমানের প্রতি বর্ণবাদ নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই বিষয়টি জানেন এবং বোঝেন। তাই এখন জরুরি হলো এ বাস্তবতায় বাঙালি মুসলমান কীভাবে কার্যকরভাবে এ বর্ণবাদের মোকাবিলা করতে পারে, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা।


২০২৩ সালের বইমেলায় প্রকাশিত আমার ‘বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন’ গ্রন্থে মুসলমানের সন্তান হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত বোধ করার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছি; পাশাপাশি নানা একাডেমিক তত্ত্ব ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করেছি বাংলাদেশে বাঙালি মুসলমানের বিরুদ্ধে চলমান বর্ণবাদী ধ্যানধারণা ও চর্চাগুলো। জুলাই-২৪ বিপ্লবপরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাঙালি মুসলমানের সন্তানরা প্রথমবারের মতো কথা বলার, চিন্তার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পেয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন হলো, তারা কীভাবে ইসলামবিদ্বেষ ও মুসলমানবিরোধী বর্ণবাদকে রাষ্ট্র ও সমাজের প্রাতিষ্ঠানিক পরিসর থেকে দূর করতে পারে? আজকের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু সেটাই।


বর্ণবাদ : বস্তুগত দারিদ্র্য থেকে আত্মিক নিপীড়ন


বর্ণবাদ নিঃসন্দেহে অশুভ; তা বিদেশিই করুক, আর স্বদেশিই করুক। একটি ক্ষুদ্রগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠের জীবনের ওপর কর্তৃত্ব করার অধিকার রাখে-এমন উদ্ধত অনুমানকে কোনো দর্শন বা মতবাদ ন্যায্যতা দিতে পারে না। বর্ণবাদ যদি সর্বোচ্চ নিষ্ঠার সঙ্গেও প্রয়োগ করা হয়, তবুও তা নিন্দনীয় এবং সৎ দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন সবার কাছ থেকে প্রতিরোধের যোগ্য। বস্তুগত অভাব কষ্টদায়ক বটে, কিন্তু যখন তা আত্মিক দারিদ্র্যের সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন তা মানুষকে ভেতর থেকে মেরে ফেলে। এ আত্মিক শূন্যতাই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মুক্তির পথে পাহাড়সম বাধা তৈরি করেছে।


গ্রামীণ চাষাভুষা বাঙালি মুসলমানের বস্তুগত অভাব নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু আত্মিক দারিদ্র্য নিয়েও চিন্তা করা জরুরি। কেন বাঙালি মুসলমান তার প্রকৃত শক্তি প্রকাশে ব্যর্থ হয়? সে কি নিজেকে অক্ষম মনে করে? তার জিনে কি সেই বিরল গুণের অভাব আছে, যা মানুষকে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জীবন উৎসর্গে উদ্বুদ্ধ করে? নাকি সে আসলেই এক পরাজিত মানুষ? উত্তর জটিল, কিন্তু শেষটা সঠিক উত্তরের কাছাকাছি।


ইসলামবিদ্বেষ ও জ্ঞানের উপনিবেশ


‘বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন’ গ্রন্থে আমি দেখিয়েছি যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা যদিও পূর্ববাংলার মুসলমান সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য, জন্মলগ্ন থেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামবিদ্বেষী ভূমিকা পালন করেছে। ইতিহাস, দর্শন, সমাজবিদ্যা প্রভৃতি বয়ানের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে মুসলমানদের উনমানুষ হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রথমে ইংরেজদের, পরে কলকাতাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবিতার অধীনস্থ হিসাবে তাদের নির্মাণ করা হয়েছে একটা অক্ষম জনগোষ্ঠী হিসাবে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাঙালি মুসলমানের গৌরবময় ঐতিহ্য থাকলেও তা আড়াল করা হয়েছে। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগোষ্ঠীকে মুখাপেক্ষী করে রাখা হয়েছে ‘শাহবাগী’, তথা নিজেদের সেক্যুলার বা প্রগতিশীল দাবিদার একটি ক্ষুদ্র বর্ণবাদী গোষ্ঠীর কাছে। শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য ও গণমাধ্যমে প্রবেশ করেও মুসলমানের সন্তানরা একরকম অনুগত খোলসে পরিণত হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও