বাণিজ্য উদারীকরণ ও সরকারি হস্তক্ষেপ কমিয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল চীন-ভিয়েতনাম

বণিক বার্তা ড. মইনুল ইসলাম প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৩

২০০৮ সালের পর শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব-একাধিপত্যের পতনের ধারা। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর ৮০ বছর চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বৈশ্বিক-আধিপত্য (হেজিমনি)। ১৯৪৫-৯১ পর্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র প্রতিরোধ চালিয়ে গেছে। ফলে ওই পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য কোনো দেশেই ‘আনচ্যালেঞ্জড একাধিপত্যে’ পরিণত হতে পারেনি। প্রায় সব দেশেই ওই পর্বে সরকার পরিবর্তনের পেছনে হয় মার্কিন হস্তক্ষেপে নয়তো সোভিয়েত সহযোগিতা কার্যকর থাকত। কিন্তু ওই পর্বে লাতিন আমেরিকায় কিউবা ও নিকারাগুয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে উঠতে দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। কয়েকটি লাতিন আমেরিকার দেশে কয়েকবার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সফল হলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ আগ্রাসন কিংবা গোপন ক্যু-দেতার কারণে সেসব সরকারের পতন ঠেকানো যায়নি। গ্রানাডায় সরাসরি মার্কিন সেনাবাহিনী সরকারের পতন ঘটিয়েছে, আবার চিলিতে সিআইএ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সালভাদর আলেন্দেকে হত্যা করে সরকারকে উৎখাত করেছে। নিকারাগুয়ায় সান্দিনিস্তা সরকারকে সিআইএ উৎখাত করলেও তারা আবার জনগণের ভোটে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। বলা হয় যে লাতিন আমেরিকার প্রায় সব দেশে সামরিক একনায়কদের ক্ষমতায় বসানোর পেছনে ওই সময় সিআইএর কালো হাত প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করত। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও রাষ্ট্রক্ষমতার পট-পরিবর্তনে প্রায়ই মার্কিন অথবা ফ্রান্স ও ব্রিটেনের গোপন ভূমিকা থাকত ওই পর্বে। এতদ্সত্ত্বেও এশিয়ার কয়েকটি দেশে ১৯৪৫-৯১ পর্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ঠেকাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৫০-৫৩-এর কোরিয়া যুদ্ধের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা আজও টিকে রয়েছে। ১৯৫৪ সালে ভিয়েতনামের সমাজতান্ত্রিক শক্তির কাছে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে ফ্রান্সকে।


কিন্তু ১৯৫৫ সালে আবার যুক্তরাষ্ট্রের পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দক্ষিণ ভিয়েতনামে জেঁকে বসে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে কুড়ি বছর ধরে ভিয়েতনামে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম উত্তর ভিয়েতনামের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মহারক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। প্রায় বিশ লাখ ভিয়েতনামির মৃত্যুর বিনিময়ে ওই যুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ভিয়েতনাম, লজ্জাজনক পরাজয় মেনে নিয়ে দক্ষিণ ভিয়েতনাম থেকে ১৯৭৫ সালে পালাতে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে। ওই সময় কাম্পুচিয়া (বর্তমান কম্বোডিয়া) ও লাওসেও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৪৯ সালে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হলেও যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭১ সাল পর্যন্ত চীনের ওই রাষ্ট্রকে স্বীকার করে নেয়নি। (১৯৭১ সালে চীন সফরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন চীনকে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিপক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে)। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা সত্ত্বেও। আশির দশকে পোল্যান্ডে সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন সফল হওয়ায় পূর্ব ইউরোপের সব সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের সংগ্রামের মাধ্যমে ডমিনো স্টাইলে ভেঙে পড়ে সমাজতন্ত্র। সব শেষে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপ ঘোষণা করে রাশিয়া। এসব পরিবর্তনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কালো হাত প্রতিটি ক্ষেত্রেই সক্রিয় ছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও