You have reached your daily news limit

Please log in to continue


তনু থেকে গুঁইমারার কিশোরী: ধর্ষকের পেছনে ক্ষমতার ছায়া

সোহাগী জাহান তনুর রক্তমাখা পোশাক, মোসারাত জাহান মুনিয়ার নিথর দেহ আর খাগড়াছড়ির গুঁইমারার এক মারমা কিশোরীর অসহায় আর্তনাদ—সবকিছুকে যেন একই সুতোয় গাঁথা যায়। আলাদা সময়, ভিন্ন ভিন্ন স্থান, কিন্তু মিল একটা আছে—ক্ষমতার কাছে ন্যায়বিচার পরাস্ত হওয়ার। তনুর মেডিকেল রিপোর্ট থেকে ধর্ষণের আলামত পেয়েও মুছে ফেলা হয়েছিল, মুনিয়ার পরীক্ষাই হয়নি আর খাগড়াছড়ির কিশোরীর ক্ষেত্রে ‘ধর্ষণ হয়নি’—এই পূর্বনির্ধারিত বয়ান চালিয়ে দেওয়া হল। যেন অপরাধ নয়, অপরাধীর ক্ষমতাই মূল সত্য।

ধর্ষণ ও হত্যার বিচারহীনতার বড় নজির কুমিল্লার নাট্যকর্মী ও ইতিহাসের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনু। যাকে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে মৃ্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সেনানিবাসের ভেতরে স্টাফ কোয়ার্টারে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন তনু। হত্যাকাণ্ডের দিন সন্ধ্যায় ৩০০ গজ দূরে স্টাফ কোয়ার্টারেরই আরেকটি ছাত্র পড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। তার মাথায় আঘাত, শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন এবং পোশাকের অবস্থা থেকে ধর্ষণ ও হত্যার স্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়। কিন্তু এই ভয়াবহ ঘটনা যতটা দ্রুত জাতীয় আলোচনায় ওঠে এসেছিল, তার বিচারপ্রক্রিয়া ততটাই ধীরে এবং রহস্যজনকভাবে থেমে গিয়েছে।

পরের ঘটনাটিরও শিকার হলেন কুমিল্লার আরেকটি মেয়ে মোসারাত জাহান মুনিয়া। তবে ঘটনাস্থল কুমিল্লায় নয়, ঢাকায়। ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে আত্মহত্যা হিসেবে ঘটনাটি উপস্থাপন করা হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি একটি সম্ভাব্য ধর্ষণ ও হত্যার ধারণা তৈরি করে।

মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধারের রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। শুরু থেকে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে এবং সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুনিয়ার বড় বোন তানিয়া তাকে ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ আনছিলেন। সংবাদমাধ্যম এই ঘটনায় সবসময় বেছে বেছে খবর প্রচার করেছে, অবশেষে অভিযুক্তরা অব্যাহতি পাওয়ার পর পুরোই নীরব হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে জনমানস থেকেও মুনিয়া হারিয়ে যেতে চলেছে।

এই দুটো ঘটনা গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনার উদাহরণ, যেখানে তনু ও মুনিয়া হত্যায় অপরাধী বলে সন্দেহভাজনরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাভোগী জনগোষ্ঠীর অংশ, যা প্রমাণ করে, কীভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা অপরাধ ধামাচাপা দিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে। হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে, এটা তো প্রমাণ হয়নি। একদিন হয়তো শুনব তনু-মুনিয়াকে কেউ খুন করেনি, ওরা নিজে নিজেই মরে গেছে। তারপর যন্তর-মন্তর ঘরে মগজধোলাই শেষে আমরাই বলব তনু-মুনিয়া বলে কেউ ছিলই না। কাজেই বলা চলে গুঁইমারার মারমা কিশোরীটিকে তনুদের মতো মরে যেতে হয়নি, সেটা মন্দের ভালো।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে, এ বছর ২০২৫ সালে প্রথম ছয় মাসেই ধর্ষণের সংখ্যা ৪৪১টি। এর আগের বছর ২০২৪ সালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে মোট ৪০১টি। এছাড়াও, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ৪ হাজার ৭৮৭টি। আর শিশু ধর্ষণের ঘটনায় বলা হচ্ছে, গত আট বছরে তিন হাজার ৪৩৮ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রতি বছর এ ধরনের নানান উপাত্ত প্রকাশ করা হয়, কিন্তু তারপরও বাংলাদেশে ধর্ষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। Data Pandas-এর ধর্ষণ পরিসংখ্যানে ২০২৫ সালের উপাত্ত অনুযায়ী, ধর্ষণের হার অনুসারে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে ৭ম স্থানে রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশকে দায়ী করছে, যেখানে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পরও অপরাধীরা শাস্তি পায় না এবং বিচারপ্রক্রিয়া হয় অনুপস্থিত, নয় পক্ষপাতদুষ্ট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলম্বিত। ধর্ষক যদি প্রভাবশালীবর্গের কেউ না হন, তাহলে কিছু ক্ষেত্রে বিচার পাওয়া যায়, কিন্তু ধর্ষক যদি হন প্রভাবশালী, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মামলাই নেওয়া হয় না।

ধর্ষণের ঘটনাগুলোকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশে ধর্ষণ যেন শুধু লিঙ্গভিত্তিক অপরাধ নয়—এটি এখন ক্ষমতা প্রদর্শন এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু দমনের একটি রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়াও। ধর্ষণের ভুক্তভোগী যদি হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী, তখন পাহাড়ের মানুষের ওপর বাঙালি সেটেলারদের লেলিয়ে দেওয়ার উপায়ও হয়ে যায়। তনুর ঘটনা দেখায়, ক্ষমতার মাত্রাভেদে কখনো কখনো স্বয়ং রাষ্ট্র সেখানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। মুনিয়ার ঘটনায় পাওয়া যায়, তদন্তকে প্রভাবিত করার অভিযোগ। মোদ্দাকথা ক্ষমতাই এখানে সবচেয়ে বড় প্রভাবক হিসাবে কাজ করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন