
শিক্ষক দিবস : জাতি গঠনে নেপথ্যের নির্মাতাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়বোধ
আজ শিক্ষক দিবস। প্রতি বছর ৫ অক্টোবর আমরা দেশজুড়ে এই দিবসটি পালন করি। এই দিবসকে কেন্দ্র করে পত্রিকায় নিবন্ধ লেখা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। কিন্তু আনুষ্ঠানিকতার এই আবরণের আড়ালে আছে এক গভীর প্রশ্ন—আমরা কি সত্যিই আমাদের শিক্ষকদের প্রাপ্য মর্যাদা দিতে পারছি?
শিক্ষক দিবস কেবল ধন্যবাদ জানানোর দিন নয়, এটি হওয়া উচিত আত্মসমালোচনার দিন—আমরা জাতি হিসেবে কেমন আচরণ করছি তাদের সঙ্গে, যাদের হাতে আমাদের, আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ তথা দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে।
শিক্ষকতা কোনো সাধারণ পেশা নয়; এটি এক মহান দায়িত্ব, এক নৈতিক আহ্বান। একজন শিক্ষক কেবল পাঠদান করেন না, তিনি আলোকিত করেন মন, জাগিয়ে তোলেন কৌতূহল, শেখান প্রশ্ন করতে ও ভাবতে। কিন্তু এর জন্য দরকার সেই মানের শিক্ষক।
আমরা শিক্ষকতা পেশাকে যথেষ্ট আকর্ষণীয় করতে পেরেছি যাতে মেধাবীরা শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে? শুধু মেধাবীরা স্বপ্ন দেখলে হবে না তাদের বাবা মায়েরাও নিজ নিজ সন্তানদের যেদিন শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখবে সেদিন থেকে আমরা যোগ্য শিক্ষক পেতে শুরু করব যারা এই পেশার দায়িত্ব বুঝবে, বুঝে বুঝে বড় হবে যে এটি কোন সাধারণ পেশা না।
আজকের পৃথিবী তথ্যের জোয়ারে ভাসছে, কিন্তু জ্ঞানের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষকই সেই আলোকবর্তিকা, যিনি শেখান তথ্যের ভেতর থেকে সত্য খুঁজে নিতে, আর জ্ঞানের ভেতর থেকে মানবতা চিনে নিতে।
দেশ স্বাধীন হয়েছে অনেক বছর হলো। এত বছরে শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করতে পেরেছি? আমরা তো এখনো আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেহারায় জীর্ণশীর্ণ, গো বেচারা ভাব দেখি। এমন শিক্ষক দিয়েও আমাদের স্বপ্নের আগামীর বাংলাদেশ গড়তে পারবো না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বিশ্ব শিক্ষক দিবস