
রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা আরোপে প্রস্তুত বিশ্ব সম্প্রদায়
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে ৭০টি দেশের প্রতিনিধি এতে অংশ নেন। এতে গুরুত্ব পায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন ও তার আগ পর্যন্ত পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত রাখা। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মিলে ৯৬ মিলিয়ন ডলারের অনুদান ঘোষণা করেছে।
‘সম্মেলনে প্রথমবারের মতো আমরা দেখলাম এ সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় তাদের পলিটিক্যাল উইল ইনভেস্ট (রাজনৈতিক সদিচ্ছা আরোপ) করতে প্রস্তুত রয়েছে।’ জাগো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের নিউইয়র্ক প্রতিনিধি ইসমাইল হোসাইন রাসেল।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন হলো। সম্মেলনটির মাধ্যমে অর্জন কী হলো?
খলিলুর রহমান: গত বছর প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে এসে এই সম্মেলনটি আহ্বানের অনুরোধ করেছিলেন। অতি দ্রুততার সঙ্গে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সেটি অনুমোদন করে। সেই পথ ধরে আজকে আমরা এই সম্মেলনে এসেছি। অধিবেশনে দুইটি কথা কথা খুব স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। প্রথমটি হলো নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে দিতে হবে। প্রত্যাবাসন প্রথম প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার)। দ্বিতীয়টি হচ্ছে তাদের ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে তাদের যে অবস্থান তার জন্য পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক সাহায্য সরবরাহ করতে হবে। এই দুইটি বিষয়ের কনক্লুশন আমরা ইতিমধ্যে পেয়ে গেছি এবং সেগুলো অন্তত প্রয়োজনীয় দুইটি উপসংহার।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। তাদের সহযোগিতার ব্যাপারে আপনারা কতোটা আশাবাদী?
খলিলুর রহমান: আমরা আশা করব আগামী দিনগুলোতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে এ সমস্যার সমাধানের জন্য সব প্রকার সাহায্য পাবো। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এরজন্য প্রয়োজন জিওরাজনৈতিক সদিচ্ছা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সেটি দেবে বলে আমরা আশা করছি। এ যাবত আমরা যা দেখেছি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি প্রধান উপজীব্য বিষয় ছিলো পর্যাপ্ত পরিমাণ সহায়তা আদায় করা। কিন্তু প্রথমবারের মতো আমরা দেখলাম এ সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় তাদের পলিটিক্যাল উইল ইনভেস্ট করতে প্রস্তুত রয়েছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সুসংবাদ। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের জন্য এটি একটি বড় ঘটনা।