
পানি যেখানে বিষ
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের দাতিনাখালি গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী শেফালি বিবি সকালটা কাটান মাছ ধরে ও পাশের পুকুরপাড় থেকে ঘাস কেটে। লবণাক্ত পানিতে গোছল ও গৃহস্থালির কাজ করায় এখন তার পুরো শরীরে র্যাশ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আর কি করব বলেন। চুলকানির কারণে রাতে ঘুমাতেও পারি না। পিপাসা পেলেও এক গ্লাসের বেশি পানি খাই না। পানির সংকট আর লবণাক্ততা আমাদের আস্তে আস্তে মেরে ফেলছে।'
তিন বছর আগে শেফালির জরায়ুর অপারেশন হয়। তারপর থেকে তিনি অবসাদ, মাথা ঘোরা ও ক্ষুধামন্দায় ভুগছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পানির সমস্যা থেকে শেফালির এই শারীরিক জটিলতাগুলো হচ্ছে।
তার বাড়ি থেকে সবচেয়ে কাছের পানযোগ্য পানির উৎস প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে নদী ও ভূগর্ভস্থ পানি খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে পরিবারগুলো সংরক্ষিত বৃষ্টির পানি বা দূরে গিয়ে পানি নিয়ে আসার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এলাকায় কয়েকটি পানিশোধক থাকলেও শেফালির মতো নারীদের সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়।
শত শত নারী একই ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেক সময় তারা লবণাক্ত নদীর পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা স্বাস্থ্য সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- লবণাক্ততা
- সুপেয় পানি
- মিঠাপানির উৎস