সংসদ নির্বাচনের আগে ড্রেস রিহার্সেল

যুগান্তর মোবায়েদুর রহমান প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৭

গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। এ নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি প্যানেল ছিল বিএনপিসমর্থিত ছাত্রদলের প্যানেল এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসমর্থিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল।


সবাই জানেন, প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের চেয়ে ভোটের বিপুল ব্যবধানে ছাত্রশিবিরের প্যানেল জয়লাভ করেছে। ডাকসুর ২৮ পদের মধ্যে ভিপি, জিএস এবং এজিএসসহ ২৩ পদে নির্বাচিত হয়েছে শিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’। নবনির্বাচিত ভিপি হলেন সাদিক কায়েম, জিএস এসএম ফরহাদ এবং এজিএস মহিউদ্দিন খান। অবশিষ্ট পাঁচ পদের মধ্যে একটিতে ছাত্র ইউনিয়ন এবং চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ ২৮ কার্যনির্বাহী পদের মধ্যে বিএনপিসমর্থিত ছাত্রদলের একজনও নির্বাচিত হতে পারেননি।


ডাকসুর নির্বাচনি ফলাফল নিয়ে আমি আর বিস্তারিত বিবরণে যাচ্ছি না। কারণ আপনারা ইতোমধ্যেই সংবাদপত্রে সেগুলো পাঠ করেছেন এবং টেলিভিশনেও শুনেছেন, দেখেছেন।


একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে বলা হয়েছে, ডাকসু নির্বাচন এবার যত প্রেস কাভারেজ পেয়েছে, তত প্রেস কাভারেজ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোও পায়নি। কারণ হলো, বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রবাহে ডাকসুর অসাধারণ গুরুত্ব। ডাকসুকে বলা হয় মিনি পার্লামেন্ট। কংগ্রেস নেতা গোপাল কৃষ্ণ গোখলে বলেছেন, ‘What Bengal thinks today, India thinks tomorrow'. অনুবাদ : বাঙালি আজ যা ভাবে, ভারত ভাবে আগামীকাল। গোখলে’র কথা ঠিক হোক বা বেঠিক হোক, অন্তত ডাকসু এবং বাংলাদেশের সঙ্গে তার কথার একটি অদ্ভুত মিল রয়েছে। কেমন মিল, সেটি আমি একটু পরে আলোচনা করছি। তবে, স্বাধীন ভারতের ৭৬ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গোখলে যা বলেছেন, সেটি সঠিক হয়নি। কারণ ভারতে বিগত ৭৬ বছরে ১৫ জন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসেছেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার একাধিক মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলেন। এ ১৫ প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একজনও বাঙালি নেই। অনুরূপভাবে এ ৭৬ বছরে ভারতে ৩৪ জন সেনাপ্রধান এসেছেন। এর মধ্যে বাঙালি সেনাপ্রধান ছিলেন মাত্র একজন। তিনি হলেন জেনারেল জয়ন্ত চৌধুরী।


গোখলের কথা ঠিক হোক বা না হোক, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটি ভালোভাবেই প্রযোজ্য। ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভাষার দাবিতে শহীদ হন। সেই ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের কাছে শহীদ দিবস হিসাবে প্রতি বছর উদ্যাপিত হয়। এ শহীদ দিবসই ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের পতন সূচনা করে, যে মুসলিম লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তান কায়েম হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৭০ সালের প্রথম প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের কাছে মুসলিম লীগ দারুণভাবে ধরাশায়ী হয়। ওই যে ৫৪ সালে মুসলিম লীগ পড়ে গেল, তারপর আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি।


১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগ ছয় দফা আন্দোলন শুরু করে। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে ছয় দফার সঙ্গে আরও পাঁচ দফা যুক্ত হয়ে ১১ দফা হয়। তখন শেখ মুজিব কারাগারে। ছাত্রদের নেতৃত্বে যে অভ্যুত্থান ঘটে, সেটিই অবশেষে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভূমিধস বিজয় এনে দেয়। তার পরের কথা সবার জানা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউন এবং অতঃপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা।


স্বাধীন বাংলাদেশেও শেখ মুজিবের হিমালয়ের উচ্চতাসদৃশ জনপ্রিয়তায় ধস নামায় জাসদ ছাত্রলীগ। অবশ্য তখন শেখ মুজিব দেশে ইসলাম এবং মুসলমানের নামে রাজনীতি সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করায় জাসদের পেছনে নৈতিক এবং লজিস্টিক সাপোর্ট দেয় সংবিধানে নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম ও ইসলামী দলগুলো। এর সঙ্গে যুক্ত হয় মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ভারতবিরোধী আন্দোলন। শেখ মুজিবের আস্তিন থেকে বেরিয়ে আসা সিরাজুল আলম খান যে উদ্দেশ্যে মুজিব বিরোধিতা শুরু করেছিলেন, (সেই উদ্দেশ্য নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে) সেই বিরোধিতার চূড়ান্ত পরিণামে এক বিয়োগান্তক ঘটনার মাধ্যমে শেখ মুজিব এবং তার সরকারের পতন ঘটে।


১৯৯০ সালে মিলিটারি ডিক্টেটর জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে যে গণ-অভ্যুত্থান ঘটে, সেটিও শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রদলের আমানউল্লাহ আমান এবং খায়রুল কবির খোকন। সেই গণ-অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত পরিণতিতে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জয়লাভ করে এবং সরকার গঠন করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও