
ঢাকা উত্তর–দক্ষিণের টানাটানিতে মর্গে জমছে বেওয়ারিশ লাশ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, জুরাইন কবরস্থানে মাসে মোট বেওয়ারিশ লাশের এক-তৃতীয়াংশের দাফন হবে। আর উত্তর সিটি করপোরেশন বলছে, উত্তরের শতভাগ লাশ রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন হলেও দক্ষিণের কোনো লাশ এখানে দাফন করা যাবে না। এ টানাটানিতে হাসপাতালের মর্গগুলোতে লাশ জমে যাচ্ছে।
বেওয়ারিশ লাশ দাফনের দায়িত্বপ্রাপ্ত একমাত্র বেসরকারি সংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম দুই সিটি করপোরেশনে চিঠি চালাচালি করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় জুরাইন কবরস্থান আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ–সংলগ্ন কবরস্থানে বেওয়ারিশ লাশ দাফন করা হচ্ছে। জুরাইন কবরস্থানের আয়তন ১৭ দশমিক ৬০ একর। আর রায়েরবাজার কবরস্থানের আয়তন ৯৬ দশমিক ২৩ একর।
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের দেওয়া তথ্য এবং দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন চিঠির তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর জুরাইন কবরস্থানে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের পর এ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম গত বছরের ২৭ মার্চ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে জুরাইন কবরস্থানে লাশ দাফন না করতে পারার বিষয়ে চিঠি দেয়। ওই বছরের ২২ মে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন স্থানসংকটের কারণ দেখিয়ে বেওয়ারিশ লাশ না নিতে অনুরোধ করে। এরপর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আরেক চিঠিতে মোট বেওয়ারিশ লাশের তিন ভাগের এক ভাগ নেওয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু কবর চালার (পুনরায় কবর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা) কাজের জন্য চলতি বছরের ১৬ জুলাই পর্যন্ত লাশ দাফন হয়নি। ১৭ জুলাই থেকে এক-তৃতীয়াংশ হিসাবে দাফন শুরু হয়।
অন্যদিকে উত্তর সিটি করপোরেশন গত ১৮ আগস্ট আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে চিঠিতে স্থানসংকটের কথা উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কোনো বেওয়ারিশ লাশ রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন না করার কথা বলে। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে পাঠানো চিঠিতে এ বিষয়টি উল্লেখ করে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন শতভাগ লাশ কোন কবরস্থানে দাফন করা হবে, সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত দেওয়ার অনুরোধ করে। তবে ১৭ আগস্ট জুরাইন কবরস্থানে এক-তৃতীয়াংশ লাশ দাফন হয়ে যাওয়ায় জুরাইন কবরস্থান থেকেও আর লাশ দাফন করা হবে না বলে জানানো হয়।